আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণা আগামী ২০ ডিসেম্বর সিলেটে হযরত শাহজালাল ও শাহ পরানের মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে শুরু হবে। মাজার জিয়ারতের পর জনসভা হবে। সেটাই হবে প্রথম নির্বাচনী জনসভা।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
মানবাধিকার সংক্রান্ত গণমাধ্যমের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ দেশে বিএনপি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘৃণ্য ও জঘন্যতম উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। তার নজির সমসাময়িক বিশ্বের কোথাও নেই। মানবাধিকার লঙ্ঘনের সব রেকর্ড তারা ভঙ্গ করেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশে প্রথম কবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছিল? দেশের স্বাধীনতার পর ১৫ আগস্টের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘন পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল এবং বাংলাদেশে এমন ঘটনা তার আগে ঘটেনি। নেত্রী বলেছিলেন, এ দেশে আমার বাবার হত্যার বিচার চেয়েও পাইনি। চট্টগ্রামের মৌলভী আবুলকে গুম করে দেশের রাজনীতিতে গুমের ধারা প্রথম চালু করেছিলেন জিয়াউর রহমান। সেই ধারা খালেদা জিয়া অব্যাহত রেখেছিলেন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্টের হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার শাসনামলে এ দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। ক্ষমতায় থাকাকালে ইসরাইল আজ গাজা করছে, তারা সে রকম কিছু ঘটনা ঘটিয়েছিল।
বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের কারণে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে সে ব্যাপারে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে আপনারা কোনো বিচার চাইবেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা গাজার সিজ ফায়ারের বিরুদ্ধে ভোট দেয় তাদের কাছে বিচার চেয়ে কী লাভ? আমাদের একাত্তরকেও তো হার মানিয়েছে। যারা গাজার বিরুদ্ধে ভোট দেয় তাদের কাছে বিচার চেয়ে কী লাভ আমাদের বলুন? আর আমাদের এখানে যা ঘটছে সেসব তথ্য তো আমরা দিয়েই থাকি। সেটা আমরা পারস্পরিক বিনিময় করি।
প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ৭ দিন বাকি। জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের আলোচনা কতদূর? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সময়তো আছে, ১৭ তারিখ পর্যন্ত সময় আছে। সময় যখন আছে অস্থির হওয়ার দরকার নেই। প্রার্থীরা তো প্রস্তুত হয়েই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। প্রত্যাহারের একটা সময় আছে না? সে সময় পর্যন্ত অ্যাডজাস্টমেন্ট, একমেন্ডেশনে যদি প্রয়োজন হয় আমরা সময় মতো করব। এনিয়ে আপনাদের দুশ্চিন্তা করার দরকার নেই।
জাতীয় পার্টির সঙ্গে গোপনে আলোচনা কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আলোচনা গোপনে হয় না, গোপনীয়তা রক্ষা করেছি। কারণ এইগুলা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। আপনি এক কথা বলবেন, আরেকজন আরেক কথা বলবে। এইজন্য একটু গোপনীয়তা রক্ষা করা।
বিএনপি আন্দোলন চালিয়ে যাবে সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত। এ বিষয়ে আপনারা কী ভাবছেন? উত্তরে তিনি বলেন, আন্দোলন চালিয়ে যাক। সরকারের আগামী মেয়াদে আসলে তখনও আবার অবরোধ হরতাল দেবে তারা। এগুলোকে আমরা এখন আর পাত্তা দিচ্ছি না।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের টানাপড়েনের কারণে প্রধানমন্ত্রীর ওপর হামলার আশঙ্কা আছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের কারো সঙ্গে কোনো কনফ্লিক্ট নেই। আমরা পরাশক্তি হতে চাই না। আমরা সুপার পাওয়ার হতে চাই না। আমরা যেভাবে আছি, আমাদের জনগণকে নিয়ে ভাল থাকতে চাই, সুখে থাকতে চাই।
ভূ-রাজনীতির কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়ছে এবং দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দলগুলোর মতবিরোধ নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ভালো কথা সবাই বলার চেষ্টা করে। বাস্তবতাটা যে বড় কঠিন। যারা ভালো কথা বলেন তারাও জানেন। আমাদের অর্থনীতি নিজেদের বিষয়। সারা বিশ্বের অর্থনীতি এখন আবর্তিত হচ্ছে ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধের ওপর। যে কারণে সারা বিশ্বের অর্থনীতি ও বাণিজ্য হুমকির মুখে পড়েছে। সেখান থেকে আমরাও মুক্তি পাইনি। আমরা সংকট সৃষ্টি করিনি অথচ আমাদেরই এই সংকটের মূল্য দিতে হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১:২৮:১৯ ৮৩ বার পঠিত #নির্বাচন ২০২৪