জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরে সরিষাবাড়ী থানার হাজতখানায় আনোয়ার হোসেন(৩৮) নামে এক আসামির মৃত্যু হয়েছে। এ সংবাদ নিশ্চিত করেছেন সরিষাবাড়ী থানার ওসি মুশফিকুর রহমান।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার(২৬ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টায় উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের চাপারকোনো বাজার হতে মারপিট সংক্রান্ত এজাহারভুক্ত আসামি আনোয়ার হোসেনকে এসআই শহিদুর রহমান গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসেন।
এরপর তাকে থানার হাজতখানায় রাখা হলে আনুমানিক রাত বারোটার দিকে সে হাজতখানার টয়লেটে যায়। পরে কিছুক্ষণ হয় সে টয়লেট থেকে বের হয় না। তখন পুলিশের সন্দেহ হলে হাজতের তালা খুলে ভিতরে গিয়ে দেখে সে টয়লেটের ভিতর পড়ে আছে। এমন সময় তার ভাতিজা বাবুল মিয়া ও পংকজ তাকে দেখতে গিয়ে থানার পুকুর পাড়ে বসা ছিলেন। পরে পুলিশ তাদের ডেকে নিয়ে একসাথে অচেতন আনোয়ার হোসেন কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এ সময় হাসপাতালের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার সীমান্ত সাহা ইসিজি করে জানান তিনি মারা গেছেন।
পরে তাকে পুনরায় থানায় আনা হয় এবং ২৭ ডিসেম্বর সকালে ময়না তদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয় বলে জানান উক্ত মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই শহিদুর রহমান।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার সীমান্ত সাহা বলেন রাত ১২ঃ৫০ মিনিটে আনোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে তার স্বজন ও থানার পুলিশ অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে তার ইসিজি করে নিশ্চিত হওয়া যায় তিনি মারা গেছেন।
এবিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার (ভারপ্রাপ্ত) ওসি মুশফিকুর রহমান বলেন, মারপিটের মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে আনোয়ারকে গ্রেফতার করে থানাহাজতে রাখা হয়। সে রাত বারোটার দিকে হাজতখানার টয়লেটে গিয়ে অচেতন হয়ে পড়ে থাকে। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেন। তার লাশ ময়নাতদন্ত করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে মৃত আনোয়ার এর বাবা দুলু কামার বলেন, তার ছেলে আনোয়ার হোসেন শশুর বাড়ী যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন। এমন সময় চাপারকোনা বাজার হতে একটি ফোন আসে। পরে সে বাজারে যায়। এর কিছুক্ষণ পর আমরা জানতে পারি তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে।
তিনি আরো জানান,দোলভিটি গ্রামের মৃত নূরুল ইসলামের ছেলে ফিরোজ মিয়ার সাথে মাটির ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গত একমাস পূর্বে মারপিট করে চাপারকোনা হাটবাড়ী গ্রামের মোঃ আবুল কালাম এর ছেলে হাবিব। আর ওই সময় আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলে ছিল এবং দুজনের বিবাদ সে ছাড়িয়ে দেয়। কিন্তু আহত ফিরোজের ভাই সোহেল রানা বাদী হয়ে বিবাদী হাবিবের সাথে আমার ছেলে’কে জড়িয়ে মিথ্যা মামলা দেয়। আর সেই মামলাতেই আমার সুস্থ স্বাভাবিক ছেলেকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়।
রাত বারোটার পর আমরা জানতে পারি, আমার ছেলে আনোয়ার মারা গেছে। একজন সুস্থ স্বাভাবিক ছেলে কিভাবে মারা গেল, এটা আমাদের বোধগম্যে আসে না। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্তের সহিত বিচার চাই।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:০৬:৫৬ ১২৪ বার পঠিত