নির্বাচন ভন্ডুল করার জন্য বিএনপি-জামায়াত সারা বিশ্বে টাকা ছড়াচ্ছে এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক।
তিনি বলেছেন, এখন এক বিদেশি সাংবাদিক চিঠি লিখছেন, কারা নির্যাতিত হয়েছিলেন বা হয়েছে এসব বিষয় নিয়ে। যখন জিয়াউর রহমান ঘর থেকে ধরে ধরে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করছিল, তখন এই সাহেবরা কোথায় ছিলেন? এই সাহেবরা তো তখন তাদেরকে চিঠি লিখেন নাই। আজকে পয়সার বিনিময়ে বিদেশি সাংবাদিকেরা খালি চিঠি লিখছে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে লুটপাটকারীদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে তার নিজ নির্বাচনী এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার আকছিনা গ্রামে আয়োজিত নির্বাচনী সভায় এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আগে ছিল মিসকিনের দেশ। বাংলাদেশ আগে ছিল তলাবিহীন ঝুড়ি। আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনা সেটাকে করেছেন উন্নয়নের রোল মডেল। আজকে তিনি জনগণের জন্য সম্মান এনে দিয়েছেন। মর্যাদা এনে দিয়েছেন।আপনারা দেখেছেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা গত ১৫ বছরে তার সেবামূলক সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। উনার সরকার অনেক কিছু করেছেন। পদ্মা সেতু করেছেন, ঢাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধি। বিধবা ভাতা চালু। মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি, এই সব গুলোই করেছেন গত ১৫ বছরে।
এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্যই ২০২৪ সালে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে ভোটের প্রয়োজন।
তিনি বলেন, যখনই ভোট আসে তখন বিএনপি আর জামায়াত বলে আমরা ভোট করব না। তার কারণ হচ্ছে এই বিএনপি-জামায়াত তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন চায় না। বাংলাদেশের মানুষ সুখে থাকুক, শান্তিতে থাকুক এটা তারা চায় না।
তিনি বলেন, গত ২০০২ সালে বিএনপি’র অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ক্ষমতায় এসেই বলেন দেশের গ্যাস বিক্রি করে দেবেন। তখন বলা হলো গ্যাস বিক্রি করতে পারবেন না। তখন তিনি বললেন, মাটির তলায় সেটা থেকে লাভ কি? এটা বিক্রি করে দিলে ভালো। অথচ আজকে সেই গ্যাস দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন করছেন। বাংলাদেশকে শতভাগ বিদ্যুৎ দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। বিএনপি-জামায়াত যদি গ্যাস বিক্রি করতে পারতেন, তাহলে ওদের পকেট ভারি হতো। আর লন্ডন শহরে বাড়ি হত।
তিনি বলেন, বিগত ২০০৯ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দারিদ্রতা কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেন। তখন সাইফুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের এরকম উন্নয়ন হলে ক্ষতি হবে। কারণ বাংলাদেশ বিদেশ থেকে ভিক্ষা পাবে না। সাহায্য পাবে না। এই ছিল তাদের দৃষ্টিভঙ্গি।
মন্ত্রী বলেন, আমি আপনাদের সঙ্গে পরিষ্কার ভাষায় বলে দিতে চাই, বাংলাদেশের ভবিষৎ নিয়ে কাউকেও, কোন রাজনৈতিক দলকে, বা অন্য কেউ যদি হয় তাকে ছিনি মিনি করতে দেয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, আমি বলতে চাই যদি বাংলাদেশের ভূখণ্ডে কেউ অপরাধ করে। বাংলাদেশের আইনের তার বিচার অবশ্যই হবে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।
আনিসুল হক বলেন, এখন আমাদের দেশে আর মিসকিন নেই। আমাদের দেশে আর বিক্ষোভ নেই। জননেত্রী শেখ হাসিনা আজকে আমাদেরকে মর্যাদা দিয়েছেন। আমরা আমাদের ভবিষ্যত করবো।
তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে কোন শক্তিশালী প্রার্থী নেই। যারা আছে তাদেরকে আপনারা জানেন না, চিনেনও না। এ অবস্থা আমি কিন্তু ভোট চাইতে নাও আসতে পারতাম। তবে আমি আপনাদের সন্তান হিসেবে আপনাদের কাছে আসার জন্য এই সুযোগটাকে ব্যবহার করছি।
মন্ত্রী বলেন, আপনারা ভোট দিয়ে আপনাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন। আগামী ৭ জানুয়ারি কেন্দ্রে গিয়ে সরাসরি উপস্থিত হয়ে আমাকে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুল কায়ছার ভূঁইয়া জীবন, পৌরসভার মেয়র এমজে হাক্কানী, রুহুল আমিন ভূঁইয়া বকুল, কাজী আজহারুল ইসলাম, সাবেক পৌর মেয়র মো. এমরান উদ্দিন জুয়েল, কসবা পশ্চিম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মানিক মিয়াসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৪৩:১৬ ৯৬ বার পঠিত