জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত সর্বসম্মতিক্রমে ২০২৪ সালের জন্য জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি), জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) এবং জাতিসংঘ প্রকল্প সেবাগুলোর কার্যালয়ের (ইউএনওপিএস) নির্বাহী বোর্ডের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাতে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে কলম্বিয়া, জার্মানি, রোমানিয়া এবং ইথিওপিয়ার রাষ্ট্রদূতরা সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন জানায়, তিনটি সংস্থার নির্বাহী বোর্ডের সভাপতি পদে রাষ্ট্রদূত মুহিতের নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে নতুন বছরে বাংলাদেশের সফল বহুপাক্ষিক কূটনীতির পাল্লায় যুক্ত হলো আরেকটি গৌরবময় অর্জন।
বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন জানায়, ২০৩০ উন্নয়ন এজেন্ডা বাস্তবায়নে এই তিনটি সংস্থার সুনির্দিষ্ট ম্যান্ডেট রয়েছে। ইউএনডিপি মূলত দারিদ্র্য বিমোচন ও টেকসই উন্নয়নে সদস্য দেশগুলোকে সহায়তা করে থাকে। ইউএনএফপিএ কাজ করে জনসংখ্যা ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ে। আর শান্তি, উন্নয়ন ও মানবিক বিষয়াবলীর প্রকল্প সংক্রান্ত চূড়ান্ত কাজগুলো সম্পাদন করে ইউএনওপিএস।
সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ সংস্থাগুলোর এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যান্ডেট বাস্তবায়নে উলেস্নখযোগ্য অবদান রাখার সুযোগ পাবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ বোর্ডের অন্যান্য সদস্য এবং এই তিনটি সংস্থার নেতৃত্বের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার সুযোগ পাবে। বিশ্বব্যাপী তাদের কার্যক্রমে কৌশলগত দিকনির্দেশনা প্রদান করতে পারবে।
স্বাগত বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মুহিত তাকে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করার জন্য নির্বাহী বোর্ডের সদস্যদেরকে অশেষ ধন্যবাদ জানান।
তিনি বিশ্বব্যাপী জনগণের ক্ষমতায়নে এবং তাদের উন্নয়নের আকাঙ্খাকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য এই সংস্থাগুলোর প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন মহামারি, চলমান মানবিক এবং জলবায়ু সংকটজনিত কারণে জাতিসংঘের উন্নয়ন এজেন্ডা বাস্তবায়ন যে সব প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে, তা উত্তরণে ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ, ইউএনওপিএসকে আরো অধিকতর সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার প্রয়োজন হবে। আর তাদের এই প্রচেষ্টায় নির্বাহী বোর্ড সকল ধরনের সহযোগিতা প্রদানে প্রস্তুত থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ বহুপাক্ষিক ফোরামে ইতোমধ্যে একটি অত্যন্ত মর্যদাপূর্ণ আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। এর ফলে জাতিসংঘ ও এর বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনসমূহের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সুদৃঢ় আস্থা ও বিশ্বাসের সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, এই নির্বাচন তারই প্রতিফলন।
তাছাড়া, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে অনন্য সাফল্য অর্জন করেছে, তার প্রতি দৃঢ় স্বীকৃতিরও স্বাক্ষর বহন করে এই নির্বাচন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে যোগদানের পর থেকে রাষ্ট্রদূত মুহিত জাতিসংঘ শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের সভাপতি, ইউএন উইমেন এর নির্বাহী বোর্ডের সভাপতি এবং ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ, ইউএনওপিএসের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৩৪:৩৮ ৭৪ বার পঠিত