রাজশাহী অঞ্চলে শীতের তীব্রতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অগ্নি দুর্ঘটনা। গত পনের দিনে আগুন পোহাতে গিয়ে, চুলায়, গরম খাবার ও গোসলের গরম পানি গায়ে পড়ে দগ্ধ হয়েছেন অর্ধশতাধিক। ঘটেছে মৃত্যুও। রোগীর চাপ বাড়ায় হিমশিম অবস্থা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের।
চিকিৎসকরা জানান, শীত নিবারণে আগুনের ব্যবহার ও অসাবধানতায় বাড়ছে দুর্ঘটনা।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পোড়া দেহ নিয়ে ভয়াবহ যন্ত্রণায় কাৎরাচ্ছে ৩ বছরের জয়ন্ত বিশ্বাস।
পনের দিন আগে শীতের সকালে শিশুদের সঙ্গে আগুনের উষ্ণতা নিতে চুলার পাশে গেলে অসাবধানতায় পড়ে যায় সে। পুড়ে যায় শরীরের ৫০ ভাগেরও বেশি। শুধু জয়ন্ত না নওগাঁর বৃদ্ধ শফি হোসেনও ধানের খড় জ্বালিয়ে উত্তাপ নেয়ার সময় অগ্নিদগ্ধ। পুড়েছে শরীরের বেশিরভাগ। এভাবে আগুন পোহাতে গিয়ে আরও অর্ধশতাধিক রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
শিশু জয়ন্ত ও বৃদ্ধ শফির স্বজনরা জানান, আগুন পোহাতে গিয়ে অসাবধানতায় তারা দগ্ধ হয়েছেন।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (রামেক) তথ্যে, উত্তরাঞ্চলে শীত বাড়ার পর চলতি মাসের পনের দিনে দগ্ধ হয়ে ভর্তি হয়েছেন অন্তত অর্ধশতাধিক রোগী। মারা গেছেন একজন। চারজনের অবস্থা আশংকাজনক। গেল নভেম্বর ও ডিসেম্বরে ১৫৭ জন দগ্ধ ও ৫ জন মারা গেছেন। দগ্ধদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ। পোড়ার ক্ষত নিয়ে রোগীর চাপ বাড়ায় সবাইকে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে অনেককে রাখতে হচ্ছে হাসপাতালের মেঝেতে।
চিকিৎসকরা জানান, অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটছে আগুন পোহাতে গিয়ে, গরম খাবার ও গোসলের গরম পানি গায়ে পড়ে এবং কক্ষ গরম রাখার জন্য ব্যবহৃত কয়লার পাত্রের আগুনে। তাই শীত নিবারণে আগুনের উত্তাপ নেয়া বন্ধ ও আগুনের ব্যবহারে সতর্ক হওয়ার তাগিদ দেয়া হয়েছে।
রামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের বিভাগীয় প্রধান ডা. আফরোজা নাজনীন জানান, রোগীর চাপ বেড়েছে; তাই তাদের বারান্দায় ও মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। এ ছাড়া দেখা যায় ভর্তি হওয়া কোনো কোনো রোগীর সঙ্গে ৮-১০ জন আছেন। এতেও রোগীর ইনজুরি আরও বেড়ে যায়।
গত বছরের নভেম্বর থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ভর্তি হয়েছিল আড়াইশ জন। মারা যায় ১০ জন।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৪২:২৩ ৬৫ বার পঠিত