মানসম্মত উপায়ে কৃষিজ পণ্য রফতানি বাড়াতে জোর দিয়েছে সরকার। রাজধানীর সেন্ট্রাল প্যাকেজিং হাউসেই গড়ে তোলা হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব। আমদানি-রফতানি করা যেকোন পণ্য এতে পরীক্ষা সম্ভব হবে। অ্যাক্রিডিটেশন স্বীকৃতিযোগ্য এ ল্যাবের মাধ্যমে কৃষিজ পণ্য রফতানিতে নতুন মাত্রা যোগ হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরাও।
এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের অনেক দেশেই রফতানি হয়ে থাকে বাংলাদেশের রকমারি সবজি ও মৌসুমি ফল। তবে আন্তর্জাতিক মানের পরীক্ষাগার না থাকায় প্রায়ই রফতানি করা পণ্যের মান নিয়ে অভিযোগ শুনতে হয় আমদানিকারক দেশ থেকে। এতে গচ্ছাও যায় অনেক রফতানি করা পণ্য। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন উদ্যোক্তা।
এমন প্রেক্ষাপটে ২০১৪ সালে রাজধানীর শ্যামপুরে নির্মাণ করা কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউসে স্থাপিত উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ ল্যাবরেটরিকে রূপান্তর করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাবরেটরিতে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের আওতায় এ ল্যাবরেটরিতে নতুন করে সংযোজিত হচ্ছে বিভিন্নভাবে পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্য ১০টি অত্যাধুনিক ল্যাব। এটি আমদানি ও রফতানি করা কৃষিজ পণ্যে থাকা যে কোন ধরনের ছত্রাক ও কীটপতঙ্গ শনাক্ত করবে। এতে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করে রফতানির পাল্লায় গতি আসবে বলে মনে করছে কৃষি বিভাগ।
ইউপিকিউএলপি প্রকল্পের পরিচালক ড. শামীম আহমেদ বলেন, পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্য ১০টি অত্যাধুনিক ল্যাব রয়েছে। সব ধরনের কৃষিপণ্যের পরীক্ষা এসব ল্যাবে করা সম্ভব।
এরই মধ্যে এ ল্যাবরেটরি পরিদর্শন করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের হয়ে আসা নেদারল্যান্ডস প্রতিনিধিরা। ল্যাবে স্থাপিত অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সব মেশিনারি ও উপকরণ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা।
নেদারল্যান্ডস ফুড অ্যান্ড গুডস এজেন্সির ডেলিগেট বার্ট রিকেন বলেন,
কৃষিপণ্যের যে কোনো রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখবে এ ল্যাব। যা ভবিষ্যতে রফতানির পূর্বশর্ত পালনেও কাজ করবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ল্যাবরেটরিটি কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম আইএসও সনদ অর্জন ও অ্যাক্রিডিটেশন স্বীকৃতির মাধ্যমে নতুন বাজার সৃষ্টিতে সহায়ক হবে; পাশাপাশি পণ্যের মূল্য বেশি পাবে কৃষক।
অ্যাক্রিডিটেড ল্যাবরেটরি বিশেষজ্ঞ ড. মুফতিখার আহমেদ বলেন, এ ল্যাব থেকে অ্যাক্রিডিটেশনের মাধ্যমে সার্টিফিকেশন দেয়া পণ্য যে কোনো প্রাইম মার্কেটে যাওয়ার সুযোগ বাড়বে।
উল্লেখ্য, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে কৃষিপণ্য রফতানি করা হয় ২ হাজার ৫১১ মেট্রিক টন। তিন বছরের ব্যবধানে ২০২২ সালে রফতানি দাঁড়ায় ৫ হাজার ১১২ মেট্রিক টনে। ল্যাবরেটরিটি চালু হলে প্রায় ৩০ শতাংশ রফতানি বাড়বে বলে প্রত্যাশা কৃষি বিভাগের।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৪৪:৪০ ১২৮ বার পঠিত