কনর গালাহারের জোড়া গোলে প্রিমিয়ার লিগে সোমবার ক্রিস্টাল প্যালেসকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়েছে চেলসি। এই জয়ে আগামী মৌসুমে ইউরোপীয়ান ফুটবলে ফিরে আসার আত্মবিশ্বাস টিকিয়ে রেখেছে ব্লুজরা।
ইনজুরিতে আক্রান্ত ঈগলসরা প্রিমিয়ার লিগে টিকে থাকার লড়াইয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল সেলহার্স্ট পার্কে জেফারসন লারমার দুরপাল্লার গোলে প্রথমার্ধে এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ ১৯ ম্যাচে মাত্র তিনটিতে জয়ী প্যালেস শেষ পর্যন্ত এই লিড ধরে রাখতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গালাহার সমতা ফেরানোর পর ইনজুরি টাইমের দুই মিনিটের মধ্যে আরো দুই গোল দিয়েছে চেলসি। এর মধ্যে গালাহারের দ্বিতীয় গোল রয়েছে। স্টপেজ টাইমে বাকি গোলটি করেছেন এনজো ফার্নান্দেজ। এই জয়ে চেলসি টেবিলের ১০ম স্থানে উঠে এসেছে। সপ্তম স্থানের থেকে তারা দুই পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে।
অন্যদিকে এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত পরাজয় বরণ করা প্যালেস রেলিগেশন জোন থেকে মাত্র পাঁচ পয়েন্ট উপরে ওঠে টেবিলের ১৫তম স্থানে রয়েছে।
চাপে থাকা প্যালেস বস রয় হজসন বলেছেন, ‘এটা সত্যিই দারুন হতাশার। ফুটবল গোলের খেলা। কিন্ত দুর্ভাগ্যবশত: আমাদের ভুলের কারনে চেলসি গোলগুলো দিয়েছে।’
স্বাগতিক প্যালেসের তিন মূল খেলোয়াড় এবেরেচি এজে, মাইকেল ওলিসে ও মার্ক গুয়েহি ইনজুরির কারনে দলের বাইরে রয়েছেন। ম্যাচ শুরুর আগে হজসন ও ক্লাবের বোর্ড সদস্যরা বিক্ষুব্ধ সমর্থকদের তোপের মুখে পড়েছিলেন। ট্রান্সফার পলিসি ও ক্লাব সংষ্কৃতির দূর্বলতাকে সামনে এনে এসময় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে প্যালেস সমর্থকরা।
কিন্তু আরো একবার চেলসির এ্যাওয়ে ম্যাচে বাজে পারফরমেন্সের কারনে প্রথম ৪৫ মিনিট আধিপত্য দেখিয়েছে প্যালেস। চেলসি বস মরিসিরও পোচেত্তিনো বলেছেন, ‘আমাদের শুরুটা মোটেই ভাল হয়নি। তেমন কোন গভীরতা আমরা দেখাতে পারিনি। প্রথম ৪৫ মিনিট সত্যিই অনেক কঠিন ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা দাপটের সাথেই শুরু করি। স্কোরলাইন ১-১ হবার পর আমরা নিজেদের আরো এগিয়ে নিয়ে যাবার পথ খুঁজে পাই।’
গত সপ্তাহে এ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে এফএ কাপে ৩-১ গোলে জয়ের পর পোচেত্তিনো বলেছিলেন সম্ভবত এটাই মৌসুমের সেরা পারফরমেন্স।
৩০ মিনিটে চেলসি বলের পজিশন হারালে পিছিয়ে পড়তে বাধ্য হয়। নোনি মাদুয়েকে ডি বক্সের ভিতর সহজ পজিশন হারালে লারমা কোনাকুনি শটে চেলসি গোলরক্ষক ডোয়ে পেট্রোভিচকে পরাস্ত করেন। চেলসিকে টার্গেটে প্রথম শট নিতে প্রথমার্ধের স্টপেজ টাইম পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। কিন্ত সেই শট থেকে গালাহার দলকে এগিয়ে দিতে পারেননি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মালো গুস্তোর ক্রস থেকে গালাহার চেলসিকে সমতায় ফেরান। ২০২১/২২ সালে ধারে প্যালেসে খেলতে গিয়ে নিজেকে প্রমান করেছিলেন গালাহার। ৬১ মিনিটে থিয়াগো সিলভা উরুর ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে মাঠ ছাড়লে দু:শ্চিন্তায় পড়ে ব্লুজরা। এ মাসের শেষে লিভারপুলের বিপক্ষে লিগ কাপের ফাইনালে সিলভার খেলা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিল। কিন্তু শনিবার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটির মুখোমুখি হবার আগে এই তিন পয়েন্ট চেলসি নি:সন্দেহে আত্মবিশ্বাস দিবে।
কাল ম্যাচের বেশীরভাগ সময়ই চেলসির ইংলিশ মিডফিল্ডার কোল পালমারকে নিষ্ক্রিয় করে রেখেছিল প্যালেস। কিন্তু তারপরও স্টপেজ টাইমে দুটি গোলের যোগানদাতাই ছিলেন তিনি। স্টপেজ টাইমের প্রথম মিনিটে সিটির সাবেক এই প্লেমেকার ডি বক্সের ভিতর বল বাড়িয়ে দিলে গালাহার নিজের দ্বিতীয় গোল পূরণ করেণ। গত দুই ম্যাচে এটি তার তৃতীয় গোল, যা আগে কোন মৌসুমে কখনই হয়নি। এরপর চতুর্থ মিনিটে আরো একটি কাউন্টার এ্যাটাক থেকে পালমারের এ্যাসিস্টে ফার্নান্দেজ দলের জয় নিশ্চিত করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:৪৫:১৩ ৭৫ বার পঠিত