মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে। এই লড়াইয়ে অংশ নেন রোহিঙ্গারাও। আরকার আর্মি সঙ্গে পেরে না উঠে বিজিপি যেমন পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে, ঠিক তেমনি পালিয়ে আসছেন অস্ত্রধারী রোহিঙ্গারাও। যাদের মধ্যে অবৈধ অস্ত্রধারী ২৩ জনকে ধরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করেছেন স্থানীয়রা। তবে তারা কী কারণে? কোন প্রক্রিয়ায়? এবং কেন মিয়ানমার যাচ্ছেন এবং অস্ত্র নিয়ে ফিরছেন জানতে তদন্ত চলছে পুলিশের।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আটক ২৩ জনের মধ্যে ১৭ জন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা আর বাকি ৬ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়নি। অস্ত্রধারীদের কাছ থেকে ১২টি অস্ত্র, ১৩টি ম্যাগাজিন এবং ৯০০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় ২২ জনকে ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
তবে তারা কী কারণে এবং কোন প্রক্রিয়ায় তারা মিয়ানমার গেল এবং অস্ত্র নিয়ে এলো রিমান্ডে এসব প্রশ্নের উত্তর বের করার চেষ্টা করা হবে। এরপর বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম।
এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কক্সবাজারের উখিয়ার রহমতের বিল সীমান্তে গত ৬ ফেব্রুয়ারি ওপাড়ে তুমুল লড়াইয়ের মধ্যে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সদস্যরা। একই সঙ্গে কৃষি জমি দিয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে অস্ত্রধারী অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা। পরে স্থানীয়রা তাদের অস্ত্রসহ ধরে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেন।
উখিয়ার ধামনখালীর বাসিন্দা মুবিন উদ্দিন বলেন, আমি নিজ বসতি থেকে সীমান্তের তুমুল লড়াই দেখেছি। এরপর অবস্থান পালিয়ে আসা অবৈধ অস্ত্রধারীদের স্থানীয়দের সহযোগিতায় ধরেছিলাম। সে দেশের তুমুল লড়াইয়ের মধ্যে তারা এখানে পালিয়ে আসেন। সীমান্তের অনেক বাসিন্দা দেখেছেন সেদিনের ঘটনা। অস্ত্রধারীকে ধরতে গিয়ে আহতও হয়েছেন অনেকে।
শত শত অস্ত্রধারী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঢুকে পড়েছে। তাই অস্ত্রগুলো উদ্ধার করে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, যারা গুলি করেছে, ককটেল ছুড়েছে, স্থানীয় জনগণ তাদের ধরেছে।
উখিয়া-৮ এপিবিএনের সহ-অধিনায়ক খন্দকার ফজলে রাব্বী বলেন, কাঁটাতারের বেড়া কেটে রোহিঙ্গারা ক্যাম্প ছেড়ে বের হচ্ছে, যা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। তবে নতুন করে ক্যাম্পে কেউ প্রবেশ করেননি।
তিনি বলেন, এ অবস্থা নিয়ন্ত্রণে মজবুত কাঁটাতারের বেড়া করা যায়, এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পরে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৪৬:২৬ ৬৪ বার পঠিত