গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা পেশায় জবাবদিহিতা আনতে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর সার্কিট হাউজ রোডের তথ্য ভবন মিলনায়তনে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষকী ও বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল দিবস উপলক্ষে আয়োজিত শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী।
বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স.ম. গোলাম কিবরিয়া। এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার প্রধানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারিবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার মূল কাজ কর্তৃপক্ষকে ও সরকারকে জবাবদিহিতায় আনা। সমাজের দর্পণ হিসেবে সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি, ভালো-মন্দ সবকিছু তুলে ধরা। কিন্তু অন্যান্য পেশার মতো এ পেশার মধ্যেও আমরা অনেক ক্ষেত্রে দেখি সাংবাদিকতার নামে অপসংবাদিকতা, পেশাদারিত্বের জায়গায় অপেশাদারী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ অনেক সময় ঘটে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা সমাজের সর্বক্ষেত্রে সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনবেন, সে পেশায়ও কিছুটা জবাবদিহি থাকার প্রয়োজন আছে। তিনি বলেন, যারা পেশাদারিত্বের সাথে দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতা করে আসছেন এবং এখনও করছেন তাদের সবার পেশাদারিত্বের প্রতি একধরণের আকর্ষণ আছে। তারা চান এ পেশার মধ্যেও একটা স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং এক ধরনের শৃঙ্খলা থাকুক।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রেস কাউন্সিল আইন আরও যুগোপযোগী করা প্রয়োজন। আমাদের উদ্দেশ্য গণমাধ্যমের জায়গা ও পরিবেশ আরো স্বচ্ছ , সুন্দর এবং শক্তিশালী করা। গণমাধ্যমের স্থান যাতে কোনোভাবেই সংকুচিত না হয়, তথ্যের অবাধ প্রবাহ যাতে নিশ্চিত হয়, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা যাতে আরও উন্মুক্ত হয় সেটিই সরকারের উদ্দেশ্য। একইসাথে অপতথ্য রোধ করা এবং গণমাধ্যমের নামে অপপ্রচার জবাবদিহিতায় আনাই উদ্দেশ্য। এই জায়গায় সরকার, রাজনৈতিক দল, রাজনীতিবিদ, গণমাধ্যম বা অন্য কোন পেশার কারো মধ্যে কোন দ্বিমত নেই। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকবান্ধব এবং গণমাধ্যমবান্ধব। গত ১৫ বছরে গণমাধ্যমের বিস্তৃতি ঘটেছে এবং এ সময়ে উদারনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ছিল গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে। অথচ যারা অভিযোগ করে এ সরকার গণমাধ্যমের জায়গা সংকুচিত করেছে, তারা কখনো বলে না গণমাধ্যমের কল্যাণে কতটা সহানুভূতি নিয়ে এ সরকার কাজ করছে। এ বিষয়গুলো সামনে নিয়ে আসতে হবে এবং যারা বিভিন্ন ধরণের অপপ্রচার করছে তাদের জবাব দিতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। তবে আমাদের মৌলিক জায়গা হচ্ছে, এ দেশে গণতন্ত্র থাকতে হবে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকতে হবে। এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অংশ। পাশাপাশি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যেমন প্রয়োজন অপতথ্য রোধ করা একইসাথে প্রয়োজন।
অপতথ্য রোধ করতে গিয়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জায়গা যেন সংকুচিত না হয়ে যায় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৪৭:২৪ ১০২ বার পঠিত