ধর্মমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান বলেছেন, শিশুরা বঙ্গবন্ধুর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো নিজেদের জীবনে প্রতিফলন ঘটাতে পারলে প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে পারবে।
আজ সকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে জামালপুরে ইসলামপুর উপজেলা পরিষদ হলরুমে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে ধর্মমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ধর্মমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম থেকে আমরা সকলেই শিক্ষা নিতে পারি। বিশেষ করে শিশুরা বঙ্গবন্ধুকে অনুসরণ করতে পারে। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু ’৫২-র ভাষা আন্দোলন, ’৫৮-র আইয়ুব খানের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন ও ’৬২-র শিক্ষা আন্দোলনসহ পাকিস্তানি সামরিক শাসনবিরোধী সব আন্দোলন-সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বাঙালির অধিকার আদায়ের এসব আন্দোলনের কারণে বারবার কারাগারেও যেতে হয় তাঁকে। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হন তিনি। ১৯৬৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে লাহোরে বাঙালির মুক্তির সনদ ঐতিহাসিক ছয় দফা ঘোষণা করেন। পাকিস্তানের স্বৈরশাসক জেনারেল আইয়ুব খান বঙ্গবন্ধুসহ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের নামে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে কারাগারে পাঠায়।
ধর্মমন্ত্রী আরো বলেন, ৭০-র নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর ছয় দফার পক্ষে বাঙালি অকুণ্ঠ সমর্থন জানায়। পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দলের ম্যান্ডেট লাভ করে আওয়ামী লীগ। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালির এ নির্বাচনি বিজয়কে মেনে নেয়নি। এরপর বঙ্গবন্ধু স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনকে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে প্রথমে স্বাধিকার আন্দোলন এবং চূড়ান্ত পর্বে স্বাধীনতার আন্দোলনে রূপ দেন।
ধর্মমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন শিশুর মতো সরল। তাঁর হাসিও ছিলো শিশুর মতো নির্মল। তিনি শিশু-কিশোরদের বড় ভালোবাসতেন। বঙ্গবন্ধু শৈশবে ও কৈশোরে স্বাধীনতা ভোগ করেছেন, বাঁধনহারা আনন্দে দিন কাটিয়েছেন। ঠিক একইভাবে বাংলাদেশের শিশু-কিশোররা যাতে হেসেখেলে মুক্ত মনে বেড়ে ওঠার সুযোগ ও পরিবেশ পায় সে কথা ভাবতেন তিনি ।
বঙ্গবন্ধুর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসমূহ তুলে ধরে ধর্মমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক বিচক্ষণতা, প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা, অগাধ দেশপ্রেম, দৃঢ়চেতা ও নির্মোহ ব্যক্তিত্ব, অসম সাহসিকতা সবকিছু মিলিয়ে তিনি ছিলেন বিশ্ব ইতিহাসের কিংবদন্তি মহানায়ক। এরূপ একজন ব্যক্তিত্বের জন্মদিনে জাতীয় শিশু দিবস উদ্যাপন সকল শিশুর জন্যই অত্যন্ত গর্বের ও মর্যাদার।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোঃ সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. জামাল আব্দুন নাছের বাবুল, ইসলালপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার অভিজিত দাস, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোজিনা আক্তার চায়না, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এ এম আবু তাহের, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আব্দুস সালাম, সহসভাপতি জামাল আবু নাসের চৌধুরী চার্লেছ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
পরে মন্ত্রী দিবসটি উপলক্ষ্যে বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় বিজয়ী শিশুদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। এছাড়া, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ৪৬ জন দরিদ্র- অসহায় ব্যক্তির মাঝে চেক বিতরণ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২:২০:২১ ৭২ বার পঠিত