এখন থেকে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শাখা ক্যাম্পাস খুলতে পারবে না। যেসব প্রতিষ্ঠানের শাখা রয়েছে সেগুলোকে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হবে। ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালায় এই বিধান সংযুক্ত করা হচ্ছে। এ উদ্যোগকে শিক্ষার নামে বাণিজ্য বন্ধের পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন অভিভাবকরা। দুর্নীতির রাশ টেনে ধরতে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানে রূপ দেয়ার পাশাপাশি অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর মনিটরিংয়ের পরামর্শ বিশ্লেষকদের।
ভালো ফলাফলের জন্য নির্দিষ্ট কিছু স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে। এ অবস্থায় বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে ভর্তি করতে একাধিক শাখা খুলেছে এসব প্রতিষ্ঠান। ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ বেইলি রোডসহ আজিমপুর, ধানমন্ডি ও বসুন্ধরায় শাখা খুলেছে। যে চার শাখায় প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।
একাধিক শাখায় প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থী আছে মনিপুর উচ্চবিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের। তবে প্রতিটি শাখাই পরিচালনা করেন একই প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষ। অভিন্ন ম্যানেজিং কমিটি। ফলে হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে অনেক সময় হ য ব র ল অবস্থা সৃষ্টি হয়। ম্যানেজিং কমিটি ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদ নিয়ে নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়। পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের তদন্তে বের হয়েছে কোটি কোটি টাকার অনিয়ম।
শিক্ষার মানবৃদ্ধির পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় আর্থিক এসব কেলেঙ্কারির রাশ টেনে ধরতে একই প্রতিষ্ঠানের নামে একাধিক শাখা ক্যাম্পাস চালুর সুযোগ বন্ধ করতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠানের ইতোমধ্যে একাধিক শাখা রয়েছে, সেগুলোকেও স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপ দেয়া হবে। থাকবে আলাদা প্রতিষ্ঠান প্রধান ও ম্যানেজিং কমিটি।
ঢাকার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাধিক শাখা আছে, তাদের শাখাগুলো যে যে নামে আছে ওই নামে আলাদা আলাদা ইআইআইএন নাম্বার দিয়ে আলাদা প্রতিষ্ঠান প্রধান ও ম্যানেজিং কমিটি দিয়ে পরিচালনা করতে নীতিমালা সংযোজন করা হয়েছে।
শাখাকে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানে রূপ দেয়ার সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক বলছেন অভিভাবকরা। এর ফলে প্রধান ক্যাম্পাসের অনৈতিক প্রভাব কমবে বলে মনে করেন তারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম মনে করছেন, শাখাকে শুধু স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানে রূপ দিলেই দুর্নীতি কমবে না, এর জন্য প্রয়োজন অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর মনিটরিং।
এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতির রাশ টেনে ধরতে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া ঢেলে সাজানোসহ ম্যানেজিং কমিটির ক্ষমতার ভারসাম্য আনার পরামর্শ তার।
বাংলাদেশ সময়: ১২:১২:৪৪ ৭৪ বার পঠিত