জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরে সরিষাবাড়ীতে ডোয়াইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপন সহ ২ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করেছে সীমা আক্তার নামে এক গ্রাম পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সকালে জামালপুর নারী ও শিশু দমন ট্রাইবুনালে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ধর্ষিতা সীমা আক্তার। তিনি আরও জানান, মামলার আসামীরা হলেন মাজালিয়া গ্রামের আব্দুল মান্নান এর ছেলে মোঃ কামাল হোসেন ও ডিক্রীবন্দ নাজিম উদ্দিন খাঁ’র ছেলে ডোয়াইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপন। মামলাটি আমলে নিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২ এর বিচারক শহীদুল ইসলাম সিআইডি পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদনের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ডোয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপন এর পালিত ক্যাডার কামাল হোসেন ২০২৩ সালে ২৫ অক্টোবর গ্রাম পুলিশ সীমা আক্তার এর সাথে প্রথমে আত্মীয়তার সম্পর্ক সৃষ্টি করে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তুলে। পরে তাকে কু-প্ররোচনা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তার স্বামীকে তালাক করান এবং কামালের সাথে সীমা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। পরে চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপন এর নির্দেশে কামাল ডোয়াইল ইউনিয়নের ডোয়াইল বাজার এলাকায় আয়নাল হাজীর হাফ বিল্ডিং বাসায় ভাড়া নিয়ে সীমাকে তাকে থাকতে দেন। এরপর থেকেই ওই বাসায় আসা-যাওয়া করে কামাল এবং সীমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করে।
এদিকে সীমা কামালকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে কামাল বিভিন্ন অজুহাতে পাশ কাটিয়ে যায় এবং তার আরও দুই স্ত্রী বিদ্যমান আছে বলে সীমাকে সে বিয়ে করতে পারবে না সাফ জানিয়ে দেয়। তাই সীমা নিরুপায় হয়ে ডোয়াইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপনকে অভিযোগ করেন। পরে চেয়ারম্যান স্বপন ২২ জানুয়ারি স্ত্রী ডিক্রিবন্দ মাদ্রাসায় থাকায় গ্রাম পুলিশ সীমাকে ডেকে নিয়ে সরিষাবাড়ী পৌর এলাকার শিমলা বাজার গণময়দান মাঠের শাহীন স্কুলের ৫ম তলা বিল্ডিংয়ে নিয়ে যায় এবং সীমাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। সীমা চেয়ারম্যানের অধীনে চাকরি করায় চাকরি হারানোর ভয়ে সে আর মুখ খুলেনি।
এদিকে গত ১৪ মার্চ কামাল সীমাকে বিয়ে করতে আবারো অস্বীকার করলে সীমা নিরুপায় হয়ে বিষ পানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে স্থানীয় লোকজন সীমাকে উদ্ধার করে সরিষাবাড়ী হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এদিকে সীমা কিছুটা সুস্থ হয়েই ২০০০ সনের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধিত /৩ এর ৯ (১) /৩০ ধারায় মামলা দায়ের করেন। সিআর মামলা নং - ৪২/২০২৪।
এ বিষয়ে সীমা আক্তার জানান, এ ঘটনার মূলহোতা কামাল এবং সহযোগী ইউপি চেয়ারম্যান স্বপন। তার নির্দেশনায় কামালের প্ররোচনায় আমি স্বামী সন্তান সংসার ছেড়ে চলে আসি। আর এই সুযোগে চেয়ারম্যান স্যার ও কামাল আমাকে একাধিকবার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। আমি বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কেউ আমার কোন খোঁজ নেয়নি। আজ আমার সাথে যা ঘটেছে তার আমি বিচার চাই।
এবিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপন বলেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি নৌকার পক্ষে কাজ করায় বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এসব মামলার কোন সত্যতা এবং ভিত্তি নেই বলে তিনি দাবি করেন।
এদিকে বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট ইউসুফ আলী জানান, কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত সিআইডিকে আমরা ক তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৫১:৪৮ ৮২ বার পঠিত