সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন পরিচয়ে গড়ে তোলেন সখ্য, এরপর হাতিয়ে নেন মোটা অংকের টাকা। নিজেকে প্রমাণ করতে পরে থাকতেন সেনাবাহিনীর পোশাক আর সঙ্গে রাখেন একজন ‘ম্যাজিস্ট্রেট’। টার্গেট করতেন বিদেশ যেতে ইচ্ছুক যুবক এবং চাকরি প্রত্যাশীদের। রাজধানীতে এমনই এক চক্রের দুই সদস্য ধরা পড়েছে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) জালে।
পরিচয় সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের ক্যাপ্টেন দিদারুল ইসলাম। সঙ্গী নারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এমন পরিচয়ে গড়ে তোলেন সুসম্পর্ক। টার্গেট বিদেশ যেতে ইচ্ছুক এবং চাকরি প্রত্যাশীরা। নিজেদের প্রমাণ করতে দেখানো হয় সেনাবাহিনীর পোশাক পরা ছবি।
এমন এক চক্রের কবলে পড়েন কিশোরগঞ্জের মো. এমাদ উদ্দিন। মেয়েকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর পদে চাকরি এবং ছেলেকে অস্ট্রেলিয়া পাঠানোর জন্য কথা বলে হাতিয়ে নেন ৪৩ লাখ টাকা।
তবে হঠাৎ একদিন চাকরিদাতাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পান তিনি। সন্দেহ হলে যাচাই করেন প্রবেশপত্র। বুঝতে পারেন পড়েছেন প্রতারকের খপ্পরে। এরপর সহয়তা নেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।
শনিবার (৩০ মার্চ) ডিবি কার্যালয়ে ব্রিফ্রিংয়ে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।
ডিএমপির ডিবি প্রধান বলেন,
চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর বাসায় সেনাবাহিনীর পোশাক পরে যান দিদারুল ইসলাম। তার সঙ্গে ছিলেন এক নারী। ভুক্তভোগীর বাসার পাশে জায়গা কেনার অজুহাতে ঘোরাফেরা করেন কিছুদিন। কিন্তু তিনি জায়গা কেনেন না। তখন তাকে প্রস্তাব দেন যে অনেক সহযোগিতা করার, কারণে তিনি ওই লোককে উপকার করতে চান। তিনি বলেন, আপনার মেয়ের তো লেখাপড়া শেষ। তাকে বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে পারব। আর আপনার ছেলেকে অস্ট্রেলিয়া পাঠিয়ে দেই। এমন প্রতারণা করে তিনি টাকা হাতিয়ে নেন।
এর আগেও এমন অনেকের কাছ থেকে এই চক্র টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলেও জানান হারুন অর রশিদ।
তিনি বলেন,
অনেক বাবা-মা সন্তানদের চাকরির জন্য অধীর আগ্রহে ঘুরছেন। গ্রেফতারকৃতরা এমন লোকদের টার্গেট করে সখ্য গড়ে তোলে প্রতারণা করে আসছিলেন। এক কনস্টেবলের কাছ থেকেই এরকম করে ১৯ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ পেয়েছি। আরও কী পরিমাণ লোকের সঙ্গে এমন প্রতারণা করেছেন, সেই বিষয়ে আমরা তদন্ত করব।
দ্রুতই গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান ডিবির এ কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:০৭:২৫ ৭১ বার পঠিত