সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেছেন, অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তিরা সমাজের অবিছেদ্য অংশ। তাদের জীবন মান উন্নয়নে সরকার কাজ করছে।
আজ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ১৭তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: খায়রুল আলম সেখের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিরি সভাপতি আ. ফ. ম. রুহুল হক এমপি।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য “সচেতনতা, স্বীকৃতি, মূল্যায়ন: শুধু বেঁচে থাকা থেকে সমৃদ্ধির পথে যাত্রা।”
দীপু মনি আরো বলেন, অটিজম বিষয়ক সচেতনতা সমাজের প্রতিটি ব্যক্তির মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। অটিজম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন ব্যক্তিরাও যে দেশের অন্যান্য নাগরিকের মত সমান অধিকার ও সম্মান পায় সে দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে হবে। তাদের যথাযথ পরিচর্যা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে তাদেরকে সমাজে টিকে থাকার মত সক্ষম করতে হবে।
মন্ত্রী অটিজম বিষয়ে সচেতনতা তৈরি ও প্রাথমিক জ্ঞান বিষয়ে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার প্রসঙ্গে বলেন, আমরা তথ্যের অবাধ প্রবাহের যুগে বাস করছি। দেশ এখন শতভাগ ডিজিটাল। প্রচলিত গণমাধ্যমের বাইরেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও আমরা তৎক্ষণাৎ দেশ বিদেশের খবরাখবরসহ অনেক কিছু সম্পর্কে জানতে পারি। ইন্টারনেটের ওপেন সোর্সের মাধ্যমে আমরা অটিজমসহ স্নায়ুবিক অন্যান্য ডিজঅর্ডার সম্পর্কে জেনে সচেতন হতে পারি। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, অটিজম বিষয়ক গবেষক, চিকিৎসকের বাইরেও ব্যক্তিগত বা সামাজিক উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে পারি। একটি শিশুর বিকাশের প্রথম দিকেই যদি বাবা মা বা তার অভিভাবক বুঝতে পারে তার শিশুটির স্নায়ুবিক প্রতিবন্ধিতা রয়েছে তাহলে তার চিকিৎসা, পরিচর্যা, জীবন ধারণ ও বেড়ে উঠা অনেক সহজ হবে। অটিজম বা স্নায়ুবিক প্রতিবন্ধিতা নিয়ে সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন কুসংস্কার থেকেও তারা রেহাই পাবে।
মন্ত্রী এনডিডি ও অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তির কল্যাণে সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি সম্পর্কে আলোকপাত করতে গিয়ে বলেন, তাদের চিকিৎসায় এনডিডি ট্রাস্ট হতে বিশেষ অনুদান প্রদান করা হচ্ছে, এনডিডি শিশু ও ব্যক্তির মাতা-পিতা ও কেয়ার গিভারদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে, অটিজম সনাক্তকরণ ও মাত্রা নিরূপণের জন্য ’স্মার্ট অটিজম বার্তা’ ও ‘বলতে চাই’ নামক এ্যাপস তৈরি করা হয়েছে। এনডিডি ব্যক্তিদের সণাক্তকরণে আধুনিক স্ক্রিণিং টুলস প্রণয়ণের কাজ চলমান রয়েছে। এনডিডি বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু ও ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে ‘বঙ্গবন্ধু সুরক্ষা বীমা’ চালু করা হয়েছে, এনডিডি এর সাথে সংশ্লিষ্ট স্কুল/প্রতিষ্ঠানসমূহ ডিজিটাল পদ্ধতিতে মনিটরিং এবং সেবা প্রদান করা হচ্ছে, এনডিডি ব্যক্তিদের জন্য জব ফেয়ার এর আয়োজন করে কর্মে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ও স্থানীয় পর্যায়ে এনডিডি গুডউইল এ্যাম্বেসেডর নিয়োগ করা হচ্ছে।
সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে অটিজম নিয়ে কাজ করলে এ বিষয়ে সচেতনতার পাশাপাশি তাদের জীবন আরও সহজ হবে বলে মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এর আগে মন্ত্রী অটিজম বিষয়ে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পাঁচ ক্যাটাগরিতে পুরস্কারের জন্য মনোনীত ১৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেন ও নীল বাতি প্রজ্জ্বলন করেন। অনুষ্ঠানের শেষে অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তি ও শিশুদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪৯:৪৫ ৬৯ বার পঠিত