ভুটানে ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশিসহ বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের পর্যটকদের ১০০ ডলার সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ফি গুনতে হয়। সেই ফি বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য কমানোর অনুরোধ করেছে ঢাকা। বিষয়টিকে ইতিবাচক বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে ভুটান।
শনিবার বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যকার তৃতীয় পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক ফরেন অফিস কনসালটেশনে (এফওসি) ঢাকার পক্ষ থেকে থিম্পুকে এ অনুরোধ করা হয়।
ভুটানে বাংলাদেশ দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
২০২২ সালে সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ফি নামে ভুটানে আসা পর্যটকদের জন্য ২০০ ডলার ফি আরোপ করে দেশটির সরকার। তবে ২০২৩ সালে এ ফি কমিয়ে ১০০ ডলারে আনা হয়। এ ফি বাংলাদেশি পর্যটকদেরও দিতে হয়। তবে ভারতের পর্যটকদের জন্য এ ফি নেওয়া হয় মাত্র ১২০ রুপি বা ১৫ ডলারের মতো।
আজ ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে তৃতীয় এফওসি অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং ভুটান প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব পেমা চোডেন।
উভয় পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা পারস্পরিক স্বার্থের সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, বিনিয়োগ, সংযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, পর্যটন, সংস্কৃতি এবং শিক্ষাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হন তারা। ভুটানের রাজার সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের সময় গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং সমঝোতা স্মারকগুলোর দ্রুত বাস্তবায়নের উপায় নিয়েও আলোচনা করেন এবং দ্রুত ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের সিদ্ধান্ত নেন তারা। দুই পক্ষ পর্যটন বৃদ্ধি এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে।
ভুটানের পররাষ্ট্র সচিব অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষাগত ক্ষেত্রে অব্যবহৃত সম্ভাবনার ওপর জোর দেন। তিনি উল্লেখ করেন, ভুটান বাংলাদেশের সঙ্গে আরও বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা এগিয়ে নিতে চায়। দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে, উভয় দেশ সার্ক ও বিমসটেক প্রক্রিয়াকে পুনরুজ্জীবিত করতে কাজ করে যাবে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব থিম্পুতে বাংলাদেশ দূতাবাসের চ্যান্সারি ও আবাসিক নির্মাণ প্রকল্পের চলমান নির্মাণ কাজের অগ্রগতি দেখতে নির্মাণস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি এন ধুংগেলের সঙ্গেও বৈঠকে করেন। তারা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় সহযোগিতা, আঞ্চলিক সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। ভুটানকে বাংলাদেশ-ভুটান-ইন্ডিয়া-নেপাল যান চলাচল চুক্তি (বিবিআইএন এমভিএ) কাঠামোতে পুনরায় যোগদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান মাসুদ বিন মোমেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:৩৭:১১ ৬৯ বার পঠিত