দ্বাদশ সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন সমাপ্ত

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » দ্বাদশ সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন সমাপ্ত
বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪



দ্বাদশ সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন সমাপ্ত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন শেষ হয়েছে। অধিবেশন সমাপ্তি সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ঘোষণা পাঠ করার মাধ্যমে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী আজ চলতি অধিবেশন সমাপ্তির ঘোষণা দেন।
এর আগে সংসদে ১৯৭২ সালের ৩০ এপ্রিল মহান মে দিবস উপলক্ষ্যে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেয়া ভাষণের অডিও শুনানো হয়। ১৭ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডের এই ভাষণটি বাংলাদেশ বেতার থেকে সংগ্রহ করা হয়।
গত ২ মে থেকে শুরু হওয়া এবারের অধিবেশনে মোট কার্যদিবস ছিল ৬টি। এ অধিবেশনে ১ টি বিল পাস হয়। ৬টি বিল উত্থাপন করা হয়েছে। আইন প্রণয়ন সম্পর্কিত কাজ সম্পাদনের পাশাপাশি কার্যপ্রণালী-বিধির ৭১ বিধিতে ২৪২টি নোটিশ পাওয়া যায়। নোটিশগুলো থেকে ৬ টি নোটিশ গৃহীত হয়েছে এবং গৃহীত নোটিশের মধ্যে ৪ টি নোটিশ সংসদের বৈঠকে আলোচিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উত্তর দানের জন্য সর্বমোট ৩৮টি প্রশ্ন পাওয়া যায়, এরমধ্যে তিনি ১৫টি প্রশ্নের উত্তর দেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের উত্তরদানের জন্য প্রাপ্ত মোট ৯০২টি প্রশ্নের মধ্যে মন্ত্রীরা ৩৬৪টি প্রশ্নের জবাব দেন।
অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে স্পিকার বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রই একটি দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়- উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রায় সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। আশা করি, ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হবে। তিনি বলেন, সংসদ কার্যকর থাকলেই গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা সুসংহত হয়। সংসদকে কার্যকর করার ক্ষেত্রে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলের ভূমিকাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। সংসদে গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে তারা সরকারকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। নতুন প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ,সুখী,সুন্দর ও উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ উপহার দেওয়া আমাদের পবিত্র কর্তব্য। আশাকরি এ লক্ষ্যে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও উন্নয়নের মত মৌলিক প্রশ্নে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে আমরা স্বীয় অবস্থান থেকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবো।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে এবং সাহসী পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ অব্যাহত উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় সামিল হয়েছে। মেট্রোরেল,এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, পদ্মাসেতু,বঙ্গবন্ধু টানেল, পারমানবিক চুল¬ীসহ সারাদেশে অসংখ্য ব্রিজ-কালভার্ট নির্মিত হয়েছে, যা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আমূল পাল্টে দিয়েছে। আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, বিদুৎ উৎপাদন বেড়েছে, মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এসেছে। দারিদ্র্য দূরীকরণ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন,মাতৃমৃত্যু-শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস,নারীর ক্ষমতায়ন,শিক্ষার হার বৃদ্ধিসহ নানা আর্থ-সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ আজ দক্ষিণ এশিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছে। একটি কল্যাণকামী, উন্নত-সমৃদ্ধ, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে রূপকল্প ২০৪১ এবং ডেল্টা প¬্যান-২১০০ বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। একাত্তরে স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা একটি স্বতন্ত্র দেশ পেয়েছি, আর তাঁরই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গড়ে তুলতে চলেছি স্মার্ট বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, নারীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নসহ নারীকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ পর্যায়ে যুক্ত করে উন্নয়ন কার্যক্রম অগ্রসর হচ্ছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিত না হলে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব নয়। সে কারণে তৃণমূল পর্যায়ে সুষম উন্নয়ন বাস্তবায়ন ও ডিজিটাল ডিভাইড দূর করে তথ্য প্রযুক্তিগত স্মার্ট সমাজ ও অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। এ পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ করবে-অর্জিত হবে জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি।
বক্তৃতার শুরুতে তিনি বিনম্র চিত্তে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এবং ১৫ আগস্ট শাহাদত বরণকারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব, ১০ বছরের শিশু রাসেলসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের। স্মরণ করেন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ এবং সম্ভ্রম হারানো ২ লাখ মা-বোনকে, যাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা। একই সাথে স্মরণ করেন জাতীয় চার নেতাসহ ’৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জীবন উৎসর্গকারী বীরযোদ্ধাসহ সকল শহীদকে।
সংসদ অধিবেশন পরিচালনায় সহযোগিতা প্রদানের জন্য স্পিকার সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রীকে যিনি সার্বক্ষণিক আমাকে সংসদ পরিচালনায় সহযোগিতা প্রদান করেছেন। তিনি সংসদ উপনেতা, মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ, চীফ হুইপ ও হুইপবৃন্দ এবং সকল সংসদ সদস্যদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বিরোধী দলীয় নেতার প্রতিও সংসদ কার্যক্রমে সহযোগিতার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি ডেপুটি স্পিকার ও সভাপতিমন্ডলীর সদস্যদের তাদের সহযোগিতা ও পরামর্শের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারী, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। এ ছাড়া পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, গণপূর্ত, বিদ্যুৎ ও টেলিফোন বিভাগসহ সংশি¬ষ্ট সকল সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিদের ধন্যবাদ জানান। জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, বাংলাদেশ বেতার, সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা ও বেসরকারী টিভি চ্যানেলসহ দেশের সকল গণমাধ্যমের সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতি স্পিকার আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
শিরীন শারমিন চৌধুরী দেশ ও জাতির অব্যাহত সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে সকলের প্রতি সশ্রদ্ধ অভিবাদন ও আন্তরিক শুভকামনা জানিয়ে অধিবেশনের সমাপ্তি সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ পাঠ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২২:৩৫:৩৭   ৭০ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


বিদেশিদের জন্য অনলাইন বিশেষ পাস চালু করছে মালয়েশিয়া
আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে মিয়ানমারে স্থিতিশীলতা জরুরি
বুমরা-সিরাজে বিধ্বস্ত অস্ট্রেলিয়া, বড় জয় ভারতের
একনেকে ৫৯১৫ কোটি টাকার ৫ প্রকল্প অনুমোদন
৩ কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র যাত্রাবাড়ী
রিকশাচালকদের বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বললেন ডিএমপি কমিশনার
সংশোধিত ট্রাইব্যুনালে পুলিশ-র‍্যাবেরও বিচার করা যাবে
হিজবুল্লাহর ৩ শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কাঁপল ইসরায়েল, আহত ১১
আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার যারা
ইতিহাসের এই দিনে

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ