চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে উড়ন্ত শুরুর পর মাত্র ১৪৩ রানেই অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ।বাংলাদেশের দেয়া ১৪৪ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং খুব একটা খারাপ হয়নি। তবে স্বাগতিক বোলাররাই বরং উপহার দিয়েছেন নিয়ন্ত্রিত বোলিং। তাতে জিম্বাবুয়ে লক্ষ্যের খুব কাছে গিয়ে থেমেছে আবারও। তাসকিন-সাকিব-মুস্তাফিজদের আঁটসাঁট বোলিংয়ের সুবাদে কল্যাণে ১৩৮ রানে শেষ হয়েছে সফরকারীদের ইনিংস। চতুর্থ ম্যাচে বাংলাদেশের জয় ৫ রানে।
সাগরিকা থেকে ফিরে ঢাকার ম্যাচে জিম্বাবুয়ের হয়ে আজ ওপেনিংয়ে নামেন তাদিওয়ানাশে মারুমানি ও ব্রায়ান বেনেট। তবে তাদের জুটিকে বেশিদূর এগোতে দেননি তাসকিন আহমেদ। ইনিংসের প্রথম ওভারেই এই জুটি ভাঙেন তিনি। তাসকিনের বলে সাকিব আল হাসানের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে শুরুতেই সাজঘরে ফিরে যান ব্রায়ান বেনেট। তার বিদায়ে শূন্য রানেই প্রথম উইকেট হারায় সফরকারীরা।
শুন্য রানেই প্রথম উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন তাদিওয়ানাশে মারুমানি ও সিকান্দার রাজা। এই জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে জিম্বাবুয়ে। তবে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই এই জুটিকে থামান তাসকিন। তাসকিনের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন জিম্বাবুয়ে দলের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। তার বিদায়ে ২৮ রানে ২ উইকেট হারায় সফরকারীরা।
সিকান্দার রাজার পথ ধরে পরের ওভারেই সাজঘরের পথ ধরেন তাদিওয়ানাশে মারুমানি। সাকিব আল হাসানের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। তার বিদায়ে ৩২ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে জিম্বাবুয়ে।
৩২ রানে ৩ উইকেট হারনোর পর জুটি গড়ে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন জোনাথন ক্যাম্পবেল ও ক্লাইভ মাদান্দে। তবে তারাও বেশিদূর এগোতে পারেননি। দলীয় ৫৭ রানে ক্লাইভ মাদান্দের বিদায়ে ২৫ রানে ভেঙে যায় এই জুটি।
ক্লাইভ মাদান্দের বিদায়ের পর রায়ান বার্লের সাথে জুটি গড়েন জোনাথন ক্যাম্পবেল। এই জুটির কল্যাণে জয়ের স্বপ্ন দেখছিল সফরকারীরা। তবে গল্পের তখনও বাকি ছিল অনেক। জিম্বাবুয়ে শিবিরে জোড়া আঘাত হেনে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেন আইপিএলে ছেড়ে দেশে ফেরা মোস্তাফিজ।
মোস্তাফিজের বলে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ২০ বলে ১৯ রান করা রায়ান বার্ল। তার বিদায়ে ভাঙে ৩৫ রানের জুটি।
রায়ার বার্লের পর লুক জঙ্গুইকে ফেরান মোস্তাফিজ। মোস্তিাফিজের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে রিশাদ হোসেনের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান ২ বলে ১ রান করা লুক জঙ্গুই। তার বিদায়ে ৯৪ বলে ৬ উইকেট হারায় সফরকারীরা।
এই দুই ব্যাটারের বিদায়ের পর সাজঘরের পথ ধরেন জোনাথন ক্যাম্পবেল। ২৭ বলে ৩১ রান করে সাকিব আল হাসানের বলে নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তিনি। এই ব্যাটারের বিদায়ে ১০৩ রানে ৭ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
১০৩ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন ফারাজ আকরাম ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। এই জুটির কল্যাণে তখনও জয়ের স্বপ্ন দেখছিল সফরকারীরা। তবে জিম্বাবুয়ের স্বপ্নকে ভঙ্গ করে এই জুটিকে থামান মোস্তাফিজ। মোস্তাফিজের বলে তানজিদ হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান ফারাজ আকরাম। তার বিদায়ে ১২৮ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে জয়ের স্বপ্ন কিছুটা ফিকে যায় জিম্বাবুয়ের।
তবে ১২৮ রানে ৮ উইকেট হারানোর জুটি গড়েন পর ব্লেসিং মুজারাবানি ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। এই জুটি দেখেশুনে খেলতে থাকেন। শেষ ওভারে জয়ের জন্য সফরকারীদের দরকার ছিল ১৪ রান। প্রথম বলেই ১ রান দেন সাকিব। আর দ্বিতীয় বলে কোনো রান দেননি তিনি। তবে তৃতীয় বলেই ছয় রান দিয়ে বসেন তিনি। যার ফলে খেলার মোড় ঘুরে যায় জয়ের জন্য সফরকারীদের দরকার তখন মাত্র ৭ রান।
চতুর্থ বলটি সাকিব ওয়াইড দেয়ার পাশাপাশি তুলে নেন মুজারাবানির উইকেট। শেষ বলে তিনি বোল্ড করেন রিচার্ড এনগারাভাকে, অলআউট হয় জিম্বাবুয়ে। এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে উড়ন্ত শুরুর পর মাত্র ১৪৩ রানেই অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ।কোনো উইকেট না হারিয়ে ১১ ওভারে রান উঠেছিল ১০০। সেখান থেকে আর ৪৩ রান করতেই সব কটি উইকেট নেই। বিষয়টি অবিশ্বাস্য হলেও এটাই সত্যি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ওপেনার তানজিদ তামিম ও সৌম্য সরকারের বিদায়ের পর এভাবেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৫৪:২৮ ৬৮ বার পঠিত