পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্টের চূড়া জয় করেছেন বাবর আলী। সাইকেলিংয়ের পাশাপাশি এ পর্বত আরোহীর পায়ের চিহ্ন পড়েছে অসংখ্য পর্বতচূড়ায়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করা ৩৩ বছর বয়সী বাবর আলী শুরু করেছিলেন চিকিৎসা পেশা। তবে থিতু হননি। চাকরি ছেড়ে দেশ-বিদেশ ঘোরার কর্মযজ্ঞ শুরু করেন। রোববার (১৯ মে) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় তিনি এভারেস্ট জয় করেন।
কিন্তু এর আগে তিনি সারগো রি (৪ হাজার ৯৮৪ মিটার), সুরিয়া পিক (৫ হাজার ১৪৫ মি.), মাউন্ট ইয়ানাম (৬ হাজার ১১৬ মি.), মাউন্ট ফাবরাং (৬ হাজার ১৭২ মি.), মাউন্ট চাউ চাউ কাং নিলডা (৬ হাজার ৩০৩ মি.), মাউন্ট শিবা (৬ হাজার ১৪২ মি.), মাউন্ট রামজাক (৬ হাজার ৩১৮ মি.), মাউন্ট আমা দাবলাম (৬ হাজার ৮১২ মি.) ও চুলু ইস্ট (৬ হাজার ০৫৯ মি.) পর্বতের চূড়ায় উঠেছেন।
এ ছাড়া গত বছরের ১৩ এপ্রিল কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর থেকে সাইকেলযাত্রা শুরু করেছিলেন বাবর আলী। এক মাসের চেষ্টায় প্রায় চার হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী গিয়ে থেমেছিলেন তিনি। পথে যেতে যেতে ১৩টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মনোরম দৃশ্য অবলোকন করার সুযোগ হয়েছিল তার। এর আগে ২০১৯ সালে পরিবেশ রক্ষার ব্রত নিয়ে বাংলাদেশের ৬৪ জেলা হেঁটে পার করেন তিনি। এসব অভিযান নিয়ে লিখেছেন বইও।
পৃথিবীর সর্বোচ্চ শিখর মাউন্ট এভারেস্টে প্রথম অভিযান পরিচালিত হয় আজ থেকে শতাধিক বছর আগে। ১৯৫৩ সালের ২৯ মে নেপালের শেরপা তেনজিং নোরগেকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় উঠেছিলেন নিউজিল্যান্ডের পর্বতারোহী এডমন্ড হিলারি। আর ২০১০ সালের ২৩ মে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয় করেছে মুসা ইব্রাহীম। এরপর ২০১১ ও ২০১২ সালে দুবার এভারেস্ট জয় করেন এম এ মুহিত। প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে ২০১২ সালের ১৯ মে এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণ করেন নিশাত মজুমদার। একই মাসের ২৬ মে ওয়াসফিয়া নাজরীন জয় করেন এভারেস্ট। ২০১৩ সালের ২০ মে এভারেস্টচূড়া থেকে নামার সময় মারা যান বাংলাদেশি সজল খালেদ।
২০১৩ সালের পর বাংলাদেশি পর্বতারোহীদের এভারেস্ট অভিযানে নেমে আসে খরা। আজ ১১ বছরের সেই খরা কাটিয়ে এভারেস্টের চূড়ায় বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা ওড়ালেন বাবর আলী।
তবে বাবরের অভিযান এখানেই শেষ নয়! তার এবারের অভিযানের লক্ষ্য শুধু এভারেস্ট নয়, এর সঙ্গে লাগোয়া পৃথিবীর চতুর্থ শীর্ষ পর্বত লোৎসেও। আজ ক্যাম্প ৪-এ নেমে মাঝরাতে আবার শুরু করবেন দ্বিতীয় লক্ষ্যের পথে যাত্রা।
বাবরের ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সের পক্ষ থেকে প্রধান অভিযান সমন্বয়ক ফারহান জামান বলেন, ‘বাবর আলীর এ সাফল্য শুধু তার ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং এটি পুরো বাংলাদেশের জন্য এক গর্বের বিষয়। এটি আমাদের দেশের তরুণদের আরও বড় স্বপ্ন দেখার এবং সেগুলো পূরণ করার জন্য অনুপ্রাণিত করবে। এ অভিযানের পেছনে ছিল অসংখ্য মানুষের অবদান এবং স্বপ্ন। আমরা তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।’
বাংলাদেশ সময়: ১৫:২৫:০৭ ৫০ বার পঠিত