ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে রাজধানীতে সকল কোরবানির পশুহাটে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এজন্য সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
আজ শুক্রবার সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ঈদ উপলক্ষে কোরবানির পশুহাটে ডিএমপির গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, এবারের ঈদে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৯টি গরুর হাট বসবে। যারমধ্যে দুটি স্থায়ী ও ১৭ টি অস্থায়ী। গরুর হাটের সকল ইজারাদারকে জানানো হয়েছে, তাদের হাটে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গরু আসবে, গরুর ট্রাকে যেন হাটের নাম, ইজারাদারের নাম ও মোবাইল ফোন নম্বর লিখে ব্যানার টানিয়ে দেয়। যাতে এক হাটের গরু অন্য হাটে নামিয়ে ফেলতে না পারে। জোরপূর্বক এক হাটের গরু অন্য হাটে নামানোর চেষ্টা করা হলে বা নিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হাটে যেন নিরাপদে পশু বেচাকেনা ও লেনদেন করতে পারে সেজন্য পোশাক পরা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও মোতায়েন থাকবে।
কমিশনার বলেন, পশুহাটে ড্রোন পেট্রোলিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সকল হাটে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। অতিরিক্ত হাসিল যেন না নেওয়া হয় সেজন্য হাসিলের হার নির্ধারণ করে ব্যানার টানিয়ে দিতে বলা হয়েছে। কেউ যেন জাল টাকার লেনদেন করতে না পারে সেজন্য জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন বসানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করা হয়েছে। লেনদেন সহজ করার জন্য প্রত্যেক হাটে নিকটস্থ ব্যাংকের শাখা খোলা থাকবে, পুলিশ নিরাপত্তা দেবে। প্রত্যেক হাটে পুলিশের একটি করে ক্যাম্প থাকবে। সকল হাটে যেন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ থাকে সে জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে অনুরোধ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘পশুহাটের নিরাপত্তা নিয়ে সংশি¬ষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আমরা একটি সমন্বয় সভা করেছি। সমন্বয় সভা থেকে প্রতি হাটে একটি করে কো-অর্ডিনেশন কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা হাটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। তারা একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করবে, যাতে কোন ধরনের কোন সমস্যা তৈরি হতে না পারে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, যে সব নদীপথে গরু আসবে সেখানে নৌ পুলিশ টহলরত থাকবে এবং স্থল পথে ডিএমপির সদস্যরা থাকবে। যাতে কেউ ট্রলারে আসা এক হাটের গরু অন্য হাটে নেওয়ার অপতৎপরতা চালাতে সক্ষম না হয়।
তিনি বলেন, রাজধানীর অস্থায়ী পশুহাটগুলোতে আগামী ১৩ জুন থেকে গরু আসা শুরু হবে। তবে কিছুহাটে গরু আসতেছে। ঈদের দিন পর্যন্ত পশুর হাট চলবে। সে দিন পর্যন্ত পুলিশ তৎপর থাকবে। কোনো ধরনের অভিযোগ আসলে পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
কমিশনার বলেন, হাট সংলগ্ন রাস্তায় কোন অবস্থাতেই যেন গরু না বসে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে ইজারাদারদের বলা হয়েছে। রাস্তায় ট্রাক থেকে পশু নামানো যাবে না। অননুমোদিতভাবে ফাঁকা জায়গায় কোন হাট বসানোর চেষ্টা করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কমিশনার বলেন, যারা অনলাইনে গরু কিনবেন তারা সচেতন থাকবেন। অনলাইনে প্রতারণা ঠেকাতে ডিএমপির সাইবার মনিটরিং টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তারা প্রতিনিয়ত সাইবার পেট্রোলিং করবে। অজ্ঞান ও মলমপার্টি প্রতিরোধেও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তাছাড়া হাটে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হবে।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন (অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত), অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান, যুগ্ম পুলিশ কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:২৬:৪৩ ৬৬ বার পঠিত