বেশ কিছুদিন ধরেই দেশিয় এয়ারলাইন্স ব্যবসায় এক অস্থিরতা বিরাজ করছে। কোন প্রকার নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সীর নামে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অনেক কমমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে বিমানের টিকিট। কিন্তু কিভাবে সম্ভব ? অনুসন্ধানে দেখা যায়, গ্রাহককে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহক সংখ্যা বেড়ে গেলে মোটা অংকের টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায় এসব তথাকথিত প্রতিষ্ঠান। হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেলেও সঠিক নীতিমালা না থাকায় এদের শাস্তির বিষয়টিও হাস্যকর। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যায়, বিদেশে টাকা পাচারের হাতিয়ার হিসেবে এখন ব্যবহার করা হচ্ছে ওটিএ প্ল্যাটফর্মকে।
এমনি প্রেক্ষাপটে দেশের ট্রাভেল ব্যবসায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এগিয়ে আসে এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্ট অব বাংলাদেশ-আটাব। রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশের কাছে তুলে ধরে অনিয়মের বাস্তবচিত্র। এরই প্রেক্ষাপটে টনক নড়ে বিমানের। সকল পিএসএকে (পেসেঞ্জার সার্ভিস এজেন্ট) বিমানের পক্ষ থেকে সম্প্রতি দেয়া হয় সতর্ক বার্তা। সেখানে বিমান কর্তৃপক্ষ জানায়, পিএসএ বেস ফেয়ারে ৭% পিএসএ কমিশন পায় । কিন্তু কিছু এজেন্ট তাদের নিজস্ব ওয়েব পোর্টাল এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে ১৫-২০% ডিসকাউন্ট দিয়ে বিমানের টিকিট বিক্রির প্রচারণা চালাচ্ছে, যা বাজারে অসম প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করছে। শুধু তাই নয় এসকল ট্রাভেল এজেন্সী বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কমমূল্যে টিকিট বিক্রির ফাঁদ বিমানের সুনাম ও সদিচ্ছাকে বাধাগ্রস্ত করে।
সতর্ক বার্তায় বিমান আরও জানায়, কিছু অনলাইন ট্রাভেল এজেন্ট (OTA) টিকিট ইস্যু করার পর গ্রাহকদের সাথে নানা ধরনের প্রতারণা করছে। যা সরাসরি বিমানের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে। বিমান জানায়, কোন পিএসএ যদি বাজার অস্থির করার পাঁয়তারা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ বিষয়ে এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্ট অব বাংলাদেশ-আটাবের মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ জানান, ট্রাভেল ও টিকেটিং ব্যবসায় সুস্থ প্রতিযোগিতা ফিরিয়ে আনতে আটাব বদ্ধপরিকর। দেখা যায় বিমান একটি টিকিট বিক্রির বিপরীতে এজেন্টকে সর্বোচ্চ ৭% কমিশন দেয়। অথচ ঐ টিকিট কেউ কেউ ১৫ থেকে ২০ ভাগ কমিশনে বা ডিসকাউন্টে বিক্রি করছে। যখন কেউ লস দিয়ে ব্যবসা করতে আসে তখন বুঝার বাকি থাকে না তাদের উদ্দেশ্য অসৎ।
আটাবের প্রেসিডেন্ট আবদুস সালাম আরেফ বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে আমরা অবশ্যই চাই প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবসা। তবে টিকিট ক্রেতা যাতে কোনপ্রকার প্রতারণার স্বীকার না হয় সেদিকে আমাদের সোচ্চার থাকতে হবে। আমরা চাই ওটিএ’র একটি সঠিক ও যুগোপযোগী নীতিমালা।
এদিকে এই ধরনের অনিয়ম রুখতে প্রতিযোগিতা কমিশনের একটি বিশেষদল খুব শীঘ্রই মাঠে নামছে বলে একাধিক সূত্র জানায়।
বাংলাদেশ সময়: ০:৫৬:৫২ ৯৪ বার পঠিত