ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেছেন, আন্তর্জাতিক মানের মোবাইল গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। মোবাইল অপারেটরসমূহ গ্রাহকদের প্রতিশ্রুত সেবা প্রদান, গ্রাহক পর্যায়ে সুলভ মূল্যে ইন্টারনেট প্রদান এবং অপারেটর যেসকল সুবিধাগুলো পাচ্ছে সেগুলোর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং মোবাইল অপারেটরসমূহের সম্মিলিত উদ্যোগে দেশে মোবাইল সেবাকে গ্রোবাল স্ট্যান্ডার্ডে উপনীত করতে সম্ভাব্য সব কিছু করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী আজ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে মোবাইল অপারেটরদের গ্রাহক সেবার মান সংক্রান্ত আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
করোনাকালে মোবাইল অপারেটরসমূহে ভূমিকার প্রশংসা করে পলক বলেন, মোবাইল ফোন এখন জীবনের একটা অংশ হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের গ্রাহকেরা অনেক ক্ষেত্রেই তাদের সেবা নিয়ে সন্তুষ্ট নন। ‘কলড্রপ একটা নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের মোবাইল গ্রাহকেরা এ বিষয় নিয়ে অসন্তুষ্ট। বিটিআরসির পরীক্ষাগুলোর রিপোর্ট অনুসারে কোয়ালিটি অব সার্ভিস খুব একটা সন্তোষজনক নয়।’
মন্ত্রী বলেন, আমরা একটা স্মার্ট টেলিকম ইকোসিস্টেম বাংলাদেশকে উপহার দিতে চাই। আগামী ছয় মাসের মধ্যে কলড্রপ নিয়ে অপারেটরগুলো থেকে যে তথ্য দিক না কেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না গ্রাহকদের কাছ থেকে একটা উল্লেখযোগ্য চিত্র না পাব বা রিঅ্যাকশন না পাব, ততক্ষণ পর্যন্ত শুধুমাত্র কাগজে-কলমে বা ডিজিটাল উপস্থাপনায় আমি ব্যক্তিগতভাবে সন্তুষ্ট হব না। যেভাবেই হোক আমরা গ্লোবাল বেঞ্চমার্কে উন্নীত হতে চাই। কারণ এটা আমাদের দেশের ব্র্যান্ডিংয়ের একটা বড় প্রভাব ফেলে।
জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেন, কলড্রপের জন্য গ্রাহকের যে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা সেটা সরকার আরো কঠোরভাবে প্রয়োগ করবে। মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরগুলো প্রতিশ্রুত সেবা না দিলে তাদের গ্রাহককে আর্থিকভাবে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তিনি বলেন, মনিটরিং এবং অডিট নিয়মিত করা হবে।
পলক বলেন, ইন্টারনেটের গতি কেন কম হচ্ছে, গ্রাহকের প্রতিক্রিয়া কী সেগুলো আমলে নিয়ে ড্রাইভ দেব। আমরা কারিগরি পরিদর্শন দল গঠন করেছি, তারা সেগুলো টেস্ট করছে। এক্ষেত্রে অপারটেরদের সহায়তাও দেয়া হবে। তিনি বলেন, আমরা অপারেটরদের হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে সাঁতার শেখাব না, আমরা সাঁতার শিখিয়ে সক্ষমতা দিয়ে দেব যাতে নদীটা পার হওয়া যায়।
পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল সেবা নিয়ে পলক বলেন, ফাইভজি রোল আউটেরও একটা নির্দিষ্ট টার্গেট বিটিআরসি এবং চারটি মোবাইল অপারেটরকে দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এয়ারপোর্ট, সি পোর্ট এবং কিছু বিজনেস ডিস্ট্রিক্টস, কিছু গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক-শিল্পাঞ্চলে ফাইভজি রোল আউট করা। তারপর গ্রাজুয়েলি রোল আউট করা।
তিনি বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল অক্টোবরে উদ্বোধন হতে পারে। অক্টোবরকে টার্গেট করে চারটি মোবাইল অপারেটরকে একটা চ্যালেঞ্জ দিতে চাই, যেন অক্টোবরের ৩০ তারিখের মধ্যে ফাইভজি ওখানে নিশ্চিত করা যায়। পাশাপাশি গুলশান, বনানী, মতিঝিল, আগারগাঁও এলাকায় ফাইভজি এনাবল স্মার্টফোন ব্যবহার করা হয় বেশি। আমাদের সেখানেও মনোযোগ দিতে হবে।
চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনায় কীভাবে ফাইভজি ও আইওটি কীভাবে ব্যবহার করতে পারি সে বিষয়েও কাজ করছি। আমরা আশা করি সেখানেও দ্রুত ফাইভজি ব্যবহার করতে পারব।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অ্যামটব সভাপতি ও গ্রামীণ ফোন সিইও ইয়াসির আজমানসহ মোবাইল ফোন অপারেটরসমূহের শীর্ষ কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৫০:০৬ ৭০ বার পঠিত