বাংলাদেশ-ইতালি সম্পর্ক এখন সর্বোচ্চ উচ্চতায় রয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশে সফররত দেশটির পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রণালয়ের ইতালিয়ান সিটিজেন অ্যাব্রোড’র মহাপরিচালক লুইগি ভিগনালি বলেন, জঙ্গিবাদ দমনে এদেশের পাশে থাকব আমরা।
সোমবার (০১ জুলাই) দুপুরে গুলশানের হলি আর্টিজান হামলায় নিহতদের নামফলকে ইতালি রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও ভারতের রাষ্ট্রদূত। বাংলাদেশের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। পরে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
এ সময় পররাষ্ট্র সচিব মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ধর্মীয় উগ্রবাদসহ সব ধরনের জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। বিদেশি বন্ধুদের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা বদ্ধপরিকর। জঙ্গিবাদ দমনে সরকার সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।
বাংলাদেশে সফররত দেশটির পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রণালয়ের ইতালিয়ান সিটিজেন অ্যাব্রোড’র মহাপরিচালক লুইগি ভিগনালি বলেন,
জঙ্গিবাদ দমনে এদেশের পাশে থাকব আমরা। আর বাংলাদেশ-ইতালি সম্পর্ক এখন সর্বোচ্চ উচ্চতায় রয়েছে।
প্রসঙ্গত: ২০১৬ সালের ১ জুলাই (শুক্রবার)। রাত পৌনে ৯টার দিকে খবর পাওয়া যায় রাজধানীর গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের হলি আর্টিজান বেকারিতে ‘সন্ত্রাসীদের সঙ্গে’ পুলিশের গোলাগুলি হচ্ছে। নব্য জেএমবির পাঁচ জঙ্গি বেকারিতে ঢুকে প্রথমে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ১৮ জন বিদেশি নাগরিকসহ ২২ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তাদের মধ্যে নয় জন ইতালির, সাত জন জাপানের, একজন ভারতীয় এবং তিন জন বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন। তিন জন বাংলাদেশির মধ্যে একজনের দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিল। নারকীয় ওই হামলা প্রতিরোধ করতে গিয়ে প্রাণ হারান দুই পুলিশ কর্মকর্তাও।
যেমন ছিল উদ্ধার অভিযান-
রাতভর হলি আর্টিজান বেকারি সংলগ্ন এলাকা ঘিরে রাখার পর ২ জুলাই সেনা, নৌ, পুলিশ, র্যাব এবং বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ কমান্ডো দল গুলশানে অভিযানের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়। সকাল পৌনে ৮টায় কমান্ডো বাহিনী অভিযান শুরু করে। অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত দলের সদস্যরা রেস্টুরেন্টের ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। সকাল সোয়া ৮টায় বেকারি থেকে প্রথম দফায় নারী ও শিশুসহ ৬ জনকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। পাশের একটি ভবন থেকে একজন বিদেশি নাগরিক তার মোবাইল ফোনে সেটি ধারণ করেন। ৮টা ৫৫ মিনিটে ভবনের নিয়ন্ত্রণ নেয় অভিযানকারীরা। গোয়েন্দা দল ভবনের ভেতর বিস্ফোরকের জন্য তল্লাশি শুরু করে। কিছুক্ষণ পরই আলামত সংগ্রহের কাজ শুরু করে গোয়েন্দারা। ৯টা ১৫ মিনিটে অভিযান শেষ হয়। কমান্ডো অভিযানের মধ্য দিয়ে ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে প্রায় ১২ ঘণ্টার রক্তাক্ত জিম্মি সংকটের অবসান হয়। ‘থান্ডারবোল্ট’ নামে সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা যে অভিযান চালান সেখানে জঙ্গি হামলায় সরাসরি অংশ নেয়া পাঁচ তরুণের সবাই মারা পড়েন। তারা হলেন: মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ওরফে মামুন, নিবরাজ ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল। সকাল ১০টায় ৪ জন বিদেশিসহ ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধারের খবর জানানো হয়। রেস্টুরেন্টের ভেতরে অজ্ঞাত পাঁচজনের মরদেহ পাওয়ার কথা পুলিশ জানায়। ১১টা ৫০ মিনিটে অভিযানে জঙ্গিদের ছয় জন নিহত এবং একজন ধরা পড়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:০০:২৯ ৪৮ বার পঠিত