তিনদিনের টানা বর্ষণে বান্দরবানের লামা, নাইক্ষ্যংছড়ি ও আলীকদম উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় সুত্র জানায়, লামায় টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে পৌরসভার নয়াপাড়া, সাবেক বিলছড়ি, লাইনঝিরি। বন্যায় লামা-আলীকদম সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। রাস্তার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন জায়াগায় পাহাড় ধসের কারণে ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল।
লামা পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম বলেন, বন্যা কবলিত এলাকার লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে। বর্ষণজনিত কারণে ভূমিধসের শঙ্কায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে মাইকিং করছে জেলা প্রশাসন।
এছাড়াও টানা তিনদিনের বর্ষণে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিমকূল, ক্যাম্প পাড়া, ঘোনার পাড়া, হিন্দু পাড়া, বাজার পাড়া, ২ নম্বর ওয়ার্ডের কোনার পাড়া, মধ্যম পাড়াসহ পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি সংকট। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন সড়কে পাহাড় ধসের পাশাপাশি বড়-বড় গাছ উপড়ে পড়েছে।
বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলম কোম্পানি বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ি খালের বেইলি ব্রিজটি বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন । অপর দিকে ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু খালের পানির স্রোতে ভেসে গেছে ১০ বছরের ৫ম শ্রেণীতে পড়ুয়া ইমরান নামের এক শিশু। তার খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি। পাহাড় ধ্সে প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও শতাধিক কাঁচা বাড়ির ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. জাকারিয়া বলেন, পানিবন্দি মানুষের খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। জনসাধারণের সতর্ক করার জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে মাইকিং করা হয়েছে। পানি কমলে ব্রিজ সচল করা হবে। তাছাড়া নিখোঁজ শিশুটির উদ্ধারে তৎপরতা চলছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, লামা উপজেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮২ দশমিক ৫ মিলিমিটার এবং বান্দরবানে ১১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
বান্দরবান পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অরুপ চক্রবর্তী জানান, ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় মাতামুহুরি নদীর পানি বিপদ সীমার ৪৩ দশমিক ৬ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে সাঙ্গু নদীর পানি এখনো পর্যন্ত বিপদসীমার নিচে ৯ দশমিক ৬ সে.মি. রয়েছে বলে জানান তিনি।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, যে কোনো ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনগুলোকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
অপর দিকে বান্দরবান-থানচি সড়কের ৪৮ কিলোমিটার অংশে পাহাড় ধসে পড়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে উভয় পাশে সব ধরনের যানবাহন আটকা পড়ে। পরে সড়কের উপরে মাটি সরানোর পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে থেকে ওই অংশে আবারো সব ধরনের গাড়ি চলাচল করছে।
থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন জানান, বৃহস্পতিবার সকালে খবর পেয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৬ ইসিবির একটি দল সড়কের ওপর থেকে পাহাড়ের মাটি সরানো কাজ করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪২:২৫ ৭৫ বার পঠিত