নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, ওসমান পরিবারে দুই সন্তান তারা কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল না। তারা ছিল দখলবাজি, চাঁদাবাজিতে। বিভিন্ন কারখানায় প্রভাব, ডিশ ব্যবসা ও ইন্টারনেট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণই ছিল তাদের প্রধান কাজ। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তাদের ব্যানার টানানো হতো। যে ব্যানারে তাদের ছবি এমনভাবে দেওয়া হতো যে মানুষ দেখলেই তাদের ভয় পেতো। এভাবে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে তারা বিদেশে পাচার করেছে। দুবাইতে তারা হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। এই গডফাদার শামীম ওসমানের সঙ্গে অনেক কাউন্সিলর বিদেশে টাকা পাচার করেছে। এই অর্থপাচারকারীদের ছাড়া যাবে না।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১ টায় সিদ্ধিরগঞ্জের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের হাজী ইব্রাহিম শপিং কমপ্লেক্স এলাকায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে তিনি এসব কথা বলেন।
গিয়াস উদ্দিন বলেন, এই স্বৈরাচারী সরকারের এক সন্ত্রাসী গডফাদার ছিল শামীম ওসমান । সে খেলা হবে, খেলা হবে বলে অনেক হুংকার দিয়েছিল। আজ সে পলাতক। বোরকা পড়ে পালিয়েছে। ওয়ান ইলেভেনের সময় আমরা যখন আইনের কাছে আত্মসমার্পন করেছিলাম, তখন সে অপরাধী বলে বোরখা পড়ে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যায়। পরে দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর দেশে ফিরে সে পুনরায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। তার দল ভালো করেই জানতো বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্ত্রাসী সে (শামীম ওসমান)। তাই তাকে দলের কোনো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নেতা বানায় নাই। সে দলের সিদ্ধান্তের বাহিরে গিয়ে জনসভা করতো। গার্মেন্ট বন্ধ করে, স্কুল-কলেজ বন্ধ করে, কলকারখানা বন্ধ করে, ভাড়া করে জোরপূর্বক সবাইকে তার জনসভায় নেওয়া হতো। তার দলের অনেক নেতাকর্মী আমাদের বলেছে, তার বক্তব্যে আমরা লজ্জিত হই। তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে কোনো প্রতিবাদ করতে পারি নাই।
শামীম ওসমানকে ইঙ্গিত করে তিনি আরও বলেন, সে ২০০১ সালে বোরখা পড়ে পালিয়ে গিয়েছিল। কারণ সে জানে সে অপরাধ করেছে। সে আইনের কাছে গেলে সে শাস্তি পাবে। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারতো না। কারণ সে অনেক মানুষকে হত্যা, গুম করেছে। নারায়ণগঞ্জে ত্বকি হত্যাসহ অনেকগুলো হত্যা হয়েছে। আজও পর্যন্ত এর বিচার হয় নাই।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করুন। নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচার করুন। আমরা আইন হাত তুলে নিতে চাই না। নারায়ণগঞ্জের মানুষ নির্যাতিতদের বিচার চায়। আমরা এই সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই।
তিনি আরও বলেন, অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত কয়েকজন চেয়ারম্যান, মেয়র, মেম্বার ভোল পাল্টিয়ে আমাদের এই বিজয়কে কাজে লাগিয়ে বিজয়োৎসব করেছেন। আমাদের দলের কেউ যদি তাদের পরোক্ষভাবে সমর্থন দেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শামীম ওসমানের যেসব দোসররা আমাদের নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছেন তারা এখন আমাদের নেতাকর্মীদের ডাকে। আমাদের দলের কোন নেতাকর্মী যদি যায় তাহলে তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।তাদের আর প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৫৪:৪৮ ৭২ বার পঠিত