মুরগি-সবজিতে স্বস্তি, লাগামছাড়া চালের বাজার

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » মুরগি-সবজিতে স্বস্তি, লাগামছাড়া চালের বাজার
শুক্রবার, ১৬ আগস্ট ২০২৪



মুরগি-সবজিতে স্বস্তি, লাগামছাড়া চালের বাজার

সরকার পতনের পর কমেছে সবজি ও মুরগিসহ বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম। শিক্ষার্থীদের বাজার তদারকি অব্যাহত থাকায় রাজধানীসহ চট্টগ্রাম, বরিশাল ও রাজশাহীতে বিভিন্ন পণ্যের দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। তবে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও অস্থির চাল-ডালের বাজার। ঢাকাসহ দেশের পাইকারি ও খুচরা বাজারে অনেকটাই নীরবে বাড়ছে চালের দাম। খুচরায় বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) সব ধরনের চালের দাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা এবং প্রতি কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বেড়ে বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা অর্থাৎ মিল ও পাইকারি পর্যায়ে সরবরাহ তদারকি করলে জিনিসপত্রের দাম কমতে পারে।

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সরবরাহব্যবস্থা স্বাভাবিক হওয়ায় মুরগি, ডিম, মাছ ও সবজির দাম অনেকটাই কমে এলেও চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের চাল। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কেউ কেউ বলছেন, মিল মালিকদের কারসাজিতে চালের বাজারের এই অবস্থা।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, বাড্ডা ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরায় প্রতি কেজি চিকন চাল (মিনিকেট) মানভেদে ৭২ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ব্রি-২৮ ও পাইজাম চাল প্রতি কেজি ৫৮ থেকে ৬২ টাকায় এবং নাজিরশাইল চাল প্রতি কেজি কেজি ৭৫ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদর তথ্যেও চড়া দামে চাল বিক্রির বিষয়টি দেখা গেছে।

টিসিবির গতকাল বাজারদর প্রতিবেদনে দেখা যায়, সরু বা চিকন চাল মানভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৭৮ টাকা।

পাইজাম চাল কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ৫৪ থেকে ৫৮ টাকায়। গতকাল রামপুরা বাজারের একটি দোকান থেকে চাল কিনছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আলতাব হোসেন। তিনি জানান, জুলাই মাসের মাঝামাঝিতে একই দোকান থেকে ৭৪ টাকা কেজি দরে মিনিকেট চাল কিনেছিলেন তিনি। গতকাল একই চালের জন্য তাকে কেজিপ্রতি ৭৮ টাকা দিতে হয়েছে।

রাজধানীর বাড্ডা বাজারের মুদি দোকানদার মো. হানিফ বলেন, ‘গত মাসে ছাত্রদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও কারফিউয়ের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে পণ্য সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় চালের দাম বেড়ে যায়। এখনো সেই বাড়তি দামেই চাল বিক্রি করা হচ্ছে।’ চালের বাজার আপাতত কমার কোনো লক্ষণ নেই বলেও তিনি জানান।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মেসার্স মান্নান রাইস এজেন্সির আব্দুল মান্নান বলেন, ‘চালের দাম জুলাই মাসে যা বেড়েছিল সেই অবস্থায় এখনো আছে। বর্তমানে চালের দাম কমেনি।’

রাজধানীর বাবুবাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন বলেন, বাজারে চালের কোনো ঘাটতি নেই। মূলত এবার ধানের বাড়তি দামের কারণে মিলাররা চালের দাম বাড়িয়েছেন। যার প্রভাবে পাইকারি ও খুচরা বাজারে দাম বেড়েছে।

এদিকে, বাজারে বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৪০-৬০ টাকা বেশি দামে কিনছেন গ্রাহকেরা। তবে কয়েক ধরনের মাছ, ব্রয়লার ও সোনালি মুরগি এবং ফার্মের মুরগির ডিমের দাম সামান্য কমেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও টাউন হল বাজারে সরেজমিন ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জিনিসপত্রের দরদামের এসব তথ্য জানা গেছে।

গতকাল প্রতি কেজি রুই ৩২০-৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০-২৫০ টাকা ও পাঙাশ মাছ ২০০-২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আগের দুই সপ্তাহে এসব মাছে কেজিতে ৩০-৫০ টাকা বাড়তি দাম ছিল। ইলিশ মাছ ও গরুর মাংসের দামও কিছুটা কমেছে। এ ছাড়া ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের দাম ডজনে ৫ টাকা কমে ১৪৫ টাকা হয়েছে।

গতকাল বাজারভেদে প্রতি কেজি পটোল, ঢ্যাঁড়স, ঝিঙে ও চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে; আর বরবটি, বেগুন, করলা ও কাঁকরোল বিক্রি হয়েছে ৭০-৮০ টাকায়। এসব সবজির দাম সাত দিন আগে অন্তত ১০-২০ টাকা কম ছিল।

তবে আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে রসুন। দেশি রসুন কেজি ২২০ টাকায় এবং আমদানি করা রসুন কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ছোট দানার মসুর ডাল ১৪০ টাকায় এবং বড় দানার মসুর ডাল ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

সবজির আড়তদারেরা জানান, সহিংসতা ও ডাকাতির আশঙ্কায় গত সপ্তাহে সবজি পণ্যের সরবরাহ কম ছিল। এতে বিভিন্ন উৎপাদন স্থল বা পাইকারি মোকামে কম দামে সবজি বিক্রি হয়েছিল। এখন সবজির সরবরাহ ঠিক হয়েছে এবং সড়কে চাঁদাবাজিও নেই। এ কারণে বাজারে বর্তমানে ‘স্বাভাবিক দামে’ সবজি বিক্রি হচ্ছে।

তবে সাধারণ ভোক্তারা এ ধরনের কথা মানতে নারাজ। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে কথা হয় গৃহিণী আফরোজা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, আগের সরকার চলে যাওয়ার পর গত সপ্তাহে সবজির দাম অনেকটাই কম ছিল। ব্যবসায়ীরা এত সবজি লোকসানে তো বিক্রি করেননি; কিন্তু এখন আবার দাম বাড়ছে। বাজারে তদারকি থাকলে এই দাম বাড়ানো আটকানো যেত।

বাংলাদেশ সময়: ১২:২৫:৪৩   ৪২ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত
পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
রোজায় বাজার সহনশীল রাখার চেষ্টা করা হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
দেশের যুবকদের কর্মসংস্থানে কাজ করতে চায় বিশ্বব্যাংক
সীমান্তে দেড় কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ
সাফজয়ী ঋতুপর্ণা-মণিকা ও রুপনা চাকমাকে রাঙ্গামাটিতে সংবর্ধনা
রাজু ভাস্কর্যে ঢামেক শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি প্রেরণা জোগায়: আসিফ মাহমুদ
বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত লাগবে: জোনায়েদ সাকি
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ কেমন, জানালেন ফখরুল
৩ মাসে জ্বালানি খাতে ৩৭০ কোটি টাকা সাশ্রয়: জ্বালানি উপদেষ্টা

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ