তৃতীয় দিনেই ম্যাচ থেকে অনেকটা ছিটকে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। চতুর্থ দিন কামিন্দু মেন্ডিসের দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি ও দিনেশ চান্দিমালের ফিফটি তাদের এনে দিল লড়ার মতো পুঁজি। বোলাররাও পরে চেষ্টা করলেন। তবে যথেষ্ট হলো না। জো রুটের দায়িত্বশীল ফিফটিতে অনায়াসেই জিতল ইংল্যান্ড।
ম্যানচেস্টারে সিরিজের প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ড জিতেছে ৫ উইকেটে। তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেছে তারা।
তৃতীয় দিন শেষে ৪ উইকেট হাতে নিয়ে কেবল ৮২ রানে এগিয়ে ছিল শ্রীলঙ্কা। শনিবার তারা যোগ করে আরও ১২২ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩২৬ রান করে ইংল্যান্ডকে ২০৫ রানের লক্ষ্য দিতে পারে সফরকারীরা।
সাত নম্বরে নেমে আগের দিন ৫৬ রানে অপরাজিত কামিন্দু মেন্ডিস খেলেন ১৮৩ বলে ১১৩ রানের ইনিংস। যেখানে ১৫ চারের পাশে ছক্কা একটি। চার টেস্টের ক্যারিয়ারে এটি তার তৃতীয় সেঞ্চুরি, সবগুলোই সবশেষ ৬ ইনিংসের মধ্যে।
প্রায় দুই বছর পর এই সংস্করণে ফিরে গত মার্চে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিলেটে তিনি করেন জোড়া সেঞ্চুরি। চট্টগ্রামে পরের টেস্টে করেন অপরাজিত ৯২ ও ৯।
এবার ম্যানচেস্টারে প্রথম ইনিংসে অল্পতে থামলেও দ্বিতীয়টিতে খেললেন বড় ইনিংস। ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্টে সাত বা এর নিচে নেমে সেঞ্চুরি করা শ্রীলঙ্কার প্রথম ব্যাটসম্যান তিনিই। ১৯৮৪ সালে লর্ডসে দুলিপ মেন্ডিসের সাতে নেমে করা ৯৪ রান ছিল আগের সর্বোচ্চ।
আগের দিন বৃদ্ধাঙ্গুলে চোট পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে পরে আবার ব্যাটিংয়ে নামা চান্দিমালের ব্যাট থেকে আসে ৭৯ রান। মেন্ডিসের সঙ্গে তার সপ্তম উইকেট জুটি ১১৭ রানের।
তৃতীয় দিন বোলিংয়ের সময় ঊরুতে অস্বস্তি অনুভব করায় মাঠ ছাড়েন গতিময় পেসার মার্ক উড। চতুর্থ দিন আর বোলিংয়ে ফিরতে পারেননি তিনি। বাকি সিরিজেই তার খেলা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা।
উডের অনুপস্থিতির সুযোগ কাজে লাগিয়ে শ্রীলঙ্কাকে এগিয়ে নেন মেন্ডিস ও চান্দিমাল। মাঝে বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকে আধা ঘন্টা। লাঞ্চ বিরতির আগে ক্রিস ওকসকে বাউন্ডারি মেরে মেন্ডিস সেঞ্চুরিতে পা রাখেন ১৪৯ বলে।
দ্বিতীয় সেশনে গাস অ্যাটকিনসনের একই ওভারে তিনটি চার মারেন মেন্ডিস। এই পেসারের পরের ওভারে বিদায় নেন তিনি স্লিপে ক্যাচ দিয়ে। এরপর আর বেশিক্ষণ টেকেনি শ্রীলঙ্কা। সব মিলিয়ে ১৯ রানের মধ্যে শেষ ৪ উইকেট হারায় তারা।
রান তাড়ায় বেন ডাকেট ব্যর্থ হন আরও একবার। আড়াই বছর পর টেস্টে ফিরে প্রথম ইনিংসে ৩০ রানের পর এবার ৩৪ করেন ড্যান লরেন্স। বেন স্টোকসের অনুপস্থিতিতে এই সিরিজে নেতৃত্ব পাওয়া অলি পোপ এবারও বিদায় নেন ৬ রান করে।
৭০ রানে ৩ উইকেট হারানো ইংল্যান্ডকে টানেন রুট ও হ্যারি ব্রুক। প্রাবাথ জায়াসুরিয়ার দ্বিতীয় শিকার হয়ে ব্রুক ফেরেন ৩২ রানে। ১১৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে তখন ইংল্যান্ড।
তবে পঞ্চম উইকেটে রুট ও জেমি স্মিথের ৬৪ রানের জুটি জয়ের পথে এগিয়ে নেয় স্বাগতিকদের। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান স্মিথ এবার ৪৮ বলে করেন ৩৯ রান। ম্যাচের সেরাও এই তরুণ কিপার-ব্যাটসম্যান।
ওকসকে নিয়ে বাকিটা সারেন রুট। ১২৮ বলে ৬২ রানে অপরাজিত থাকেন সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ২৩৬
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩৫৮
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ৮৯.৩ ওভারে ৩২৬ (আগের দিন ২০৪/৬) (চান্দিমাল ৭৯, কামিন্দু মেন্ডিস ১১৩, জায়াসুরিয়া ৫, আসিথা ০, ভিশ্ব ০*; ওকস ২২-৬-৫৮-৩, অ্যাটকিনসন ১৭-২-৮৯-২, বাশির ২০-০-৭৭-০, উড ১০.২-১-৩৬-১, পটস ১৭.৩-৪-৪৭-৩, রুট ১.৪-০-৫-১, লরেন্স ১-০-৫-০)
ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২০৫) ৫৭.২ ওভারে ২০৫/৫ (ডাকেট ১১, লরেন্স ৩৪, পোপ ৬, রুট ৬২*, ব্রুক ৩২* স্মিথ ৩৯, ওকস ৮*; ভিশ্ব ৮-০-৪৬-০, আসিথা ১২-১-২৫-২, জায়াসুরিয়া ২৫.২-৪-৯৮-২, রাত্নায়েকে ১২-০-৩১-১)
ফল: ইংল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে ইংল্যান্ড
ম্যান অব দা ম্যাচ: জেমি স্মিথ
বাংলাদেশ সময়: ১১:৫৬:৫৩ ৫১ বার পঠিত