অবসরকালীন সুবিধা পেতে বছরের পর বছর দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের। যদিও উচ্চ আদালতের নির্দেশ হলো, অবসর নেয়ার ৬ মাসের মধ্যে এ সুবিধা পাবেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। পরিসংখ্যান বলছে, হাজার হাজার আবেদন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ঝুলছে যুগের পর যুগ। পর্যাপ্ত বরাদ্দের অভাবের কথা শুনিয়ে দায় সারছে কর্তৃপক্ষ।
অবসর পাওয়া শিক্ষিকা নরসিংদীর কবিতা রাণী চন্দ জীবনের ২৫টি বছর পার করেছেন মানুষ গড়ার কাজে। অবসর নিয়েছেন ২০১৮ সালে। অবসর সুবিধা পেতে অর্ধ যুগেরও বেশি সময় ধরে বাধ্য হয়ে ঢাকার পলাশির বেনবেইসে যাওয়া-আসা করতে হচ্ছে তাকে।
কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেলেও অবসর সুবিধার টাকা কবে পাবেন সেই প্রশ্নের উত্তর জানেন না তিনি। অথচ নিঃসন্তান এ শিক্ষিকাকে প্রতিমাসে বেতনের ১০ ভাগ সঞ্চয় করতে হয়েছিলো নিশ্চিন্ত অবসরের আশায়।
হাবিবুর রহমান নামে আরেকজন অবসর পাওয়া শিক্ষিকের দশাও একই রকম। টাকার অভাবে গত ৮ মাস বন্ধ রয়েছে তার ক্যান্সার আক্রান্ত স্ত্রীর চিকিৎসা। তিনি বলেন, প্রায় ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এখন টাকা না থাকায় আর চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না।
কিন্তু কেনো এ ভোগান্তি? এসব অভিযোগের বিষয়ে যার জানানোর কথা সেই অবসর সুবিধা বোর্ডের সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী ৫ আগস্টের পর থেকেই লাপাত্তা; বন্ধ রয়েছে মোবাইল ফোনও।
এদিকে, বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের রুটিন দায়িত্ব পাওয়া সচিব মো. আবুল বাশার জানান, ‘এখনও ৩০ হাজারেরও বেশি আবেদন জমা; বরাদ্দের অভাবে সুরাহা করা সম্ভব হচ্ছে না।’
তিনি জানান, ‘এসব আবেদন নিষ্পত্তি করতে ২৭ কোটি টাকার মতো প্রয়োজন। আবার বছর বছর থেকে যাচ্ছে ঘাটতি। যদি বাৎসরিক একটা বাজেট থেকে বরাদ্দ দেয়া হয়, তাহলে কেবল এ সমস্যা সমাধান হবে।’
উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ৬ মাসের মধ্যে অবসরকালীন সুবিধা দেয়ার কথা থাকলেও বছরের পর বছর ঘুরেও টাকার মুখ দেখতে পান না বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীরা। জাতীয় বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা না হলে এ সংকট আরও প্রকট হবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৫৩:০৪ ৪৯ বার পঠিত