নির্বাচন কমিশনকে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন পরিচালনা করতে সক্ষম করে গড়ে তুলতে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগ এবং এ নিয়োগকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে একটি যথোপযোগী আইন প্রণয়ন প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন বক্তারা।
আজ এক নীতি সংলাপে বক্তারা বলেন, বিদ্যমান, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২২’ বিশ্বাসযোগ্য ইসির নিয়োগ নিশ্চিত করে না, তাই নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন পরিচালনার জন্য ইসিকে আরও দক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য করতে বাংলাদেশের এই আইন পুনর্লিখন বা নতুনভাবে প্রণয়ন করতে হবে।
রাজধানীর একটি হোটেলে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল এই সংলাপের আয়োজন করে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-র বিশিষ্ট ফেলো অধ্যাপক ডা. রওনাক জাহানের সভাপতিত্বে ‘বাংলাদেশে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং নির্বাচন কমিশনারদের (ইসি) নিয়োগ’-শীর্ষক এ নীতি সংলাপে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ডানা এল. ওলডস স্বাগত বক্তব্য দেন।
সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের বস্ত্র ও পাট ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন। ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের প্রিন্সিপাল ডিরেক্টর ডক্টর মো. আব্দুল আলীম এ বিষয়ে নীতিগত সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনা করেন।
নির্বাচনী সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনপ্রশাসন বিভাগের প্রফেসর ড. জরিনা খান, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)-এর চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্রনেতা আরিফুল ইসলাম আদিব প্রমুখ সংলাপে অংশ নেন।
সাখাওয়াত হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন বা তত্ত্বাবধায়ক প্রশাসনের অধীনে ইসি নিয়োগ করা হলে তা হবে আরও স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের (ইসি) নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি ও সুশীল সমাজ উভয়ের নিরপেক্ষ নির্দলীয় পেশাজীবীদের নিয়ে সার্চ কমিটি গঠন করতে হবে। তারা আরো বলেন, এ ধরনের সার্চ কমিটিকে অবশ্যই স্বাধীন ও যেকোনো ধরনের প্রভাবমুক্ত হতে হবে।
তারা নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারের উদ্যোগের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশংসা করেন।
বক্তারা বিশ্বাসযোগ্য, যোগ্য, অভিজ্ঞ ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সিইসি ও অন্যান্য ইসি হিসেবে নিয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বিশ্বে এমন অনেক স্বতন্ত্র ইসিদের উদাহরণ রয়েছে যেখানে সিইসি ও ইসি হিসেবে সততা ও প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতাসম্পন্ন লোক নিয়োগ না করায় বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা বলেন, সিইসি ও অন্যান্য ইসির নিয়োগ বিশ্বাসযোগ্য ও স্বচ্ছ না হলে কমিশনাররা স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন না, ফলে নির্বাচন হয় অন্যায্য, অনির্ভরযোগ্য ও অগ্রহণযোগ্য।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৩১:২০ ৫৩ বার পঠিত