বাংলাদেশে চুরি-ডাকাতির মেগাপ্রজেক্ট খোলা হয়েছিল : ফয়জুল করীম

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » বাংলাদেশে চুরি-ডাকাতির মেগাপ্রজেক্ট খোলা হয়েছিল : ফয়জুল করীম
বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪



বাংলাদেশে চুরি-ডাকাতির মেগাপ্রজেক্ট খোলা হয়েছিল : ফয়জুল করীম

আমরা দেখেছি ৭১’র পর থেকে ২০২৪-এর ৫ আগস্ট পর্যন্ত যারা শাসক ছিল, তারা এই দেশকে দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন করেছে, তারা আবরারকে বুয়েটের মধ্যে হত্যা করেছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক শ মেয়েকে ধর্ষণ করার পরে সেঞ্চুরি পালন করেছে, সেখানে খুন এবং ধর্ষণ শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।’

বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সৌদি-বাংলা মার্কেটের সামনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সিদ্ধিরগঞ্জ শাখার উদ্যোগে আয়োজিত গণসমাবেশে এসব কথা বলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। তিনি বলেন, সদরঘাটের সামনে বিশ্বজিৎকে কুপিয়ে হত্যা করেছে, বাংলাদেশের ১৪ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে, গোটা ব্যাংকগুলিকে দেউলিয়া করে ফেলেছে, চুরি-ডাকাতির মেগাপ্রজেক্ট খোলা হয়েছিল। সেই বাংলাদেশ আর দেখতে চাই না।

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এমন এক বাংলাদেশ দেখতে চাই, যেখানে মানুষের অধিকার থাকবে। মেয়েরা ইজ্জত নিয়ে বসবাস করতে পারবে। আমাদের মেয়েরা-ছেলেরা বড় ব্যবসায়ী হবে, আমাদের বোনেরা-ভাইয়েরা বড় শিক্ষিত হবে, চাকরিজীবী হবে। গরিবেরা দারিদ্যসীমার ওপরে চলে যাবে।
বাংলাদেশে যদি ইসলামিক অর্থনীতি প্রয়োগ করা হয়, তাহলে আগামী ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে একজন গরিবও খুঁজে পাওয়া যাবে না। বর্তমান পুঁজিবাদী অর্থনীতি সব ধনীদের জন্য, গরিবদের জন্য নয়। অন্যদিকে ইসলামী অর্থনীতি সবই গরিবদের জন্য। পুঁজিবাদী অর্থনীতি ধনীদের আরো ধনী এবং গরিবদের আরো গরিব বানায়।
অন্যদিকে ইসলামী অর্থনীতি গরিবদের ধনী বানায় এবং ধনীদের ভারসাম্য রক্ষা করায়। গোটা বাংলাদেশের টাকা মাত্র ২০ থেকে ২৫টি পরিবারের কাছে জিম্মি। ১৮ কোটি মানুষের টাকা থাকবে মাত্র ২০ জনের কাছে, এটা হতে পারে না। আমরা সুষম বণ্টন চাই। আজকে বাংলাদেশ ১৮ লাখ কোটি টাকা ঋণী।
প্রত্যেক নাগরিকের মাথার ওপরে আজ দেড় লাখ টাকা ঋণ।

তিনি আরো বলেন, এ দেশে আর গুণ্ডামি-বদমাইশি চলবে না। সকলকে সতর্ক এবং ঐক্যবদ্ধ থাকবে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে যারা লুটতরাজ, চাঁদাবাজ, চোর, খুনি, দুর্নীতিবাজ, জুলুমকারী, আমরা ভোটাররা তাদের ভোট দেব না। নয়তো আমরা আর কখনো শান্তি পাব না। দলের পরিবর্তন হয়েছে, নেতার পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু নীতির পরিবর্তন হয় নাই। তাই শুধু নেতা নয়, নীতির পরিবর্তন চাই।

ফয়জুল করীম অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ করে বলেন, সেনাবাহিনীকে আপনি বিচারিক ক্ষমতা দিয়েছেন। কিন্তু সিটির মধ্যে বিচারিক ক্ষমতা দেন নাই কেন? আমি অনুরোধ করব, বাংলাদেশের অন্য জেলাগুলোর মতো ঢাকা সিটির মধ্যেও সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া দরকার। নয়তো গুণ্ডা-বদমায়েশদের দমন করা যাবে না। শক্ত হাতে দেশকে পরিচালনা করুন, কোনো অবস্থাতেই দুর্বলতা যেন না পায়। আপনি দুর্বল হলে গোটা বাংলাদেশ দুর্বল হয়ে যাবে। যেসব জায়গা সংস্কারের জন্য আপনি প্রতিনিধি নিয়োগ করেছেন, প্রত্যেকটি সংস্কারে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের প্রতিনিধি আলেমদের রাখতে হবে। আর নয়তো বাংলাদেশ আবারও ভুল করব।’

তিনি আরো বলেন, ‘এই দেশ চারবার স্বাধীন হয়েছে। ব্রিটিশের বিরুদ্ধে অন্দোলন করে স্বাধীন করেছিলাম, ভারতের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে পাকিস্তান নামে ভূখণ্ড পেয়েছিলাম। এরপর পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে বাংলাদেশ নামে একটি দেশ পেয়েছিলাম। আর ২০২৪-এর ৫ আগস্ট আমরা স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট, খুনি শেখ হাসিনার থেকে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম বৈষম্য দূর করার জন্য। বারবার বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করি, কিন্তু বৈষম্য দূর হচ্ছে না। যে জুলম, নির্যাতন, হত্যা মামলা, মিথ্যা মামলা, ধর্ষণ থেকে বাঁচার জন্য আন্দোলন করেছিলাম, আবার ৫ আগস্টের পরে দেখেছি সেই একই দখলদারি, চাঁদাবাজি, মিথ্যা মামলা। এর জন্য দেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করে নাই। আমরা আন্দোলন করেছি মুক্তির জন্য। গরিবদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। যেখানে অধিকার থাকবে জেলে, শ্রমিক, মজলুম, তাঁতি, কৃষক, কামার, মেথর, চামারদের। যেখানে থাকবে মুসলমান, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধদের অধিকার। সবার অধিকার যেখানে প্রতিষ্ঠিত হবে, তেমন একটি বাংলাদেশের জন্যই আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। কিন্তু আজও শ্রমিকরা তাদের অধিকারের জন্য আন্দোলন করে। তাহলে বিগত আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এমন এক বাংলাদেশ চাই, যেখানে মিসকিনদের, এতিমদের, বিধবাদের জিম্মা গ্রহণ করবে সরকার। যারা গরিব, তাদের খাদ্যের ব্যবস্থা সরকার করবে। যারা কর্মহীন, তাদের চলার টাকা সরকার জোগাবে। যারা অন্ধ, তাদের সরকার দেখাশোনা করবে। যারা বোবা, সরকার তাদের পরিচালনা করবে। যারা বিকলাঙ্গ, সরকার তাদের দ্বারে দ্বারে খাদ্য পৌঁছে দেবে। এমন একটা দেশ চাই। এমন সরকার আমরা দেখতে চাই। যেখানে থাকবে না চাঁদা, যেখানে থাকবেনা গরিব, যেখানে থাকবে না বৈষম্য, যেখানে ব্যবসায়ীরা বিনা চাঁদায় ব্যবসা করবে, ড্রাইভাররা পুলিশের ঘুষ ব্যতীত রাস্তায় গাড়ি চালাবে, যেখানে হাজারও মানুষ বুক উঁচু করে হাঁটবে, তাদের ওপর আক্রমণ-জুলুম করা হবে না। যেখানে ডাকাত, চোর, দুর্নীতিবাজ, টাকা পাচারকারী, ঘুষখোর, খুনি, ধর্ষক থাকবে না। যেখানে আমাদের ছোট বাচ্চারা মাদকে আসক্ত হবে না, গাজার কোনো প্রচলন থাকবে না, থাকবে না ফেনসিডিল, থাকবে না ইয়াবা। আমাদের প্রত্যেকটা সন্তান মানবতার শিক্ষায় শিক্ষিত, ভদ্র, আদর্শবান ও চরিত্রবান হবে। যাদের মাধ্যমে গোটা পৃথিবীতে আমরা নেতৃত্ব দেব, বুক উঁচু করে দাঁড়াব। কিন্তু সেই বাংলাদেশ আমরা দেখতে পারি নাই।’

ওই গণসমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির শরিয়াহ উপদেষ্টা মুফতি ওমর ফারুক সন্দ্বীপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মুফতি মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:০৮:৫৩   ৬২ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


অংশীজনদের নিয়ে আগামী বছর জাতিসংঘের কনফারেন্স
রাজধানীতে তিন দিনব্যাপি মুদ্রা প্রদর্শনী শুরু
এক যুগ পর সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া
সরকারি স্কুলগুলোতে এখনো অনেক সমস্যা রয়েছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা
বাংলাদেশকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন সার দিচ্ছে রাশিয়া
১৩৬৬ কোটি টাকায় সিঙ্গাপুর থেকে দুই কার্গো এলএনজি কিনবে সরকার
পণ্য সরবরাহে কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে দেয়া হবেনা: বাণিজ্য উপদেষ্টা
জনগন যাতে সকল ক্ষমতার মালিক হতে পারেন তেমন দেশ গড়তে চাই:প্রধান উপদেষ্টা
ভুটানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিএনপির ঘণ্টব্যাপী বৈঠকে সার্ক কার্যকরে আলোচনা
গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ফের ভেটো যুক্তরাষ্ট্রের

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ