মধ্যস্থতা সমাজে শান্তি স্থাপনের জন্য একটি কার্যকরি পদ্ধতি বলে মনে করেন মেডিয়েশন বিশেষজ্ঞরা। এই পদ্ধতি মানুষের কাছে তুলে ধরতে সাংবাদিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারেন বলেও উল্লেখ করেন তারা।
শনিবার (৫ অক্টোবর) বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে মেডিয়েশন ও সাংবাদিকতা বিষয়ক এক কর্মশালায় আন্তর্জাতিক মেডিয়েশন বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটি (বিমস), বাংলাদেশ ইন্ডিয়া-মেডিয়েটর্স ফোরাম ও সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্টার্স ফোরাম (এসআরএফ) যৌথভাবে আন্তর্জাতিক এ কর্মশালার আয়োজন করে।
বক্তারা বলেন,
সমাজে সাংবাদিকদের কাজ হচ্ছে, জনসাধারণকে অবহিত করা। সাংবাদিকরা বর্তমান ঘটনা, রাজনীতি, সামাজিক সমস্যা এবং আরও অনেক কিছু সম্পর্কে জনসাধারণকে কাজ এবং তথ্য সরবরাহ করে থাকে। তারা একটি পাবলিক ফোরামে মিডিয়া আউটলেট হিসেবে কাজ করে বিভিন্ন কণ্ঠস্বর এবং মতামত প্রচার, গণতান্ত্রিক বিতর্ক প্রচার করে থাকে। আর মধ্যস্থতাকারী বা মেডিয়েটর হিসেবেও সাংবাদিকেরা কাজ করতে থাকেন। মেডিয়েশন বা মধ্যস্ততা সমাজে প্রয়োগের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের যথেষ্ট ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। তারা মেডিয়েটিরদের সঙ্গে বহুমাত্রিক কাজ করতে পারে, যা সমাজে মেডিয়েশনের সফলতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এ ছাড়া অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা দুর্নীতি রোধে সরকারের সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
বাংলাদেশ ইন্ডিয়া মেডিয়েটর ফোরামের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জর্জ ভিক্টর বলেন, মধ্যস্থতাকারী হিসেবে সাংবাদিকরা প্রায়শই বিভিন্ন সমস্যার উপর একাধিক দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেন। সাংবাদিকরা মধ্যস্থতাকারী হিসেবে সংঘর্ষের কারণ নির্ণয়, উত্তেজনা বৃদ্ধি এড়ানোতেও কাজ করতে পারেন। যেমন: আন্তর্জাতিক সংঘাতের কভারেজ (যেমন, শান্তি আলোচনা, কূটনৈতিক সংলাপ)। স্থানীয় সম্প্রদায় শ্রম ধর্মঘট বা সামাজিক আন্দোলনের মতো বিষয়েও মধ্যস্থতাকারী হিসেবে সাংবাদিকরা কাজ করতে পারেন।
ভারসাম্যপূর্ণ প্রতিবেদন দেয়ার মাধ্যমে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেন সাংবাদিকরা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিবাদমান পক্ষের মধ্যে সংলাপের জন্য জায়গা তৈরি করা ঘটনার সত্যতা যাচাই করে এবং ভুল তথ্য চিহ্নিত করে ঘটনার অনুসন্ধান করে সঠিক তথ্য জনসাধারণের মাঝে প্রচার করতে পারে।
তিনি আরও বলেন,
সাংবাদিকরা বিরোধী পক্ষের সাক্ষাৎকার নিয়ে এবং বিতর্ক করার সুযোগ দিয়ে দ্বন্দ্ব নিরসনে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করতে পারেন। মধ্যস্থতাকারী বা মেডিয়েটর হিসেবে সামাজিক মিডিয়ার মাধ্যমে সাংবাদিকরা স্থানীয় দ্বন্দ্ব এবং ঘটনার রিপোর্ট করে মেডিয়েশন বা মধ্যস্থতায় অবদান রাখতে পারেন। এতে সমাজের কল্যাণে একটি মেরুকৃত বিশ্বে সাংবাদিকতার বিকশিত ভূমিকা এবং ডিজিটাল সোশ্যাল মিডিয়ার উত্থান সাংবাদিকদের নৈতিক মানদণ্ডের মেডিয়েটর হিসেবে কাজ করার একটি বড় সুযোগ তৈরি করেছে।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্টার্স ফোরামে (এসআরএফ) সভাপতি মো. মাসউদুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিমসের চেয়ারম্যান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস এন গোস্বামী।
প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক বিচারপতি মো. দেলোয়ার হোসেন। আরও বক্তব্য রাখেন, পুলিশের অতিরিক্ত আইজি তওফিক মাহবুব চৌধুরী, মেডিয়েশন বিশেষজ্ঞ জাপানের অধ্যাপক মাসাকো, আন্তর্জাতিক মেডিয়েশন বিশেষজ্ঞ বিজয় ভারতীয়া।
প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভারতীয় সিনিয়র সাংবাদিক ডেভিড দেবদাস, নেপালের অ্যাক্রিডিটেড মেডিয়েটর সিমরান নাপিত, ভারতের অ্যাক্রিডিটেড মেডিয়েটর তনুশ্রী রায়, অধ্যাপক রমা হালদার।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এসআরএফের সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম রব্বাবী, সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম মল্লিক, যুগ্ন সম্পাদক মেহেদী হাসান ডালিম, কোষাধ্যক্ষ বাহাউদ্দিন আল ইমরান, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য মাজহারুল হক মান্না, মো. দিদারুল আলম। আন্তর্জাতিক এ কর্মশালায় সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্টার্স ফোরামের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৫৮:২৫ ৩৫ বার পঠিত