রমজানের আগে দেশের বাজারে দাম স্থিতিশীল রাখতে চিনি আমদানির ওপর আরোপ করা নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) অর্ধেক করার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন। এ ছাড়া চিনি চোরাচালান বন্ধে সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শও দিয়েছে সংস্থাটি।
রোববার (৬ অক্টোবর) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছে ট্যারিফ কমিশন।
চিঠিতে বলা হয়, রমজানের বাকি আছে প্রায় চার মাস। সাধারণত রোজায় চিনির চাহিদা বাড়ে। তাই সামগ্রিক সরবরাহ ব্যবস্থা স্থিতিশীল রাখতে চিনি পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এখনই চিনি আমদানির জন্য ঋণপত্র বা এলসি খুলতে হবে। এ ছাড়া গত এক মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত চিনির দাম ৩৯৪ ডলার থেকে বেড়ে ৪৭৬ ডলারে পৌঁছেছে। তাই স্থানীয় বাজারে দাম ও সরবরাহ স্থিতিশীল রাখতে চিনি আমদানিতে বিদ্যমান শুল্ক কাঠামো যৌক্তিক করা দরকার।
বর্তমানে প্রতি টন পরিশোধিত ও অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে শুল্ককর রয়েছে মোট ৫২ শতাংশ। যার মধ্যে ভ্যাট ১৫ শতাংশ, এইআইটি ২ শতাংশ, আরডি ৩০ শতাংশ এবং এটি ৫ শতাংশ। এ ছাড়া অপরিশোধিত প্রতি টনে কাস্টমস ডিউটি রয়েছে ৩ হাজার টাকা, আর পরিশোধিত চিনিতে রয়েছে ৬ হাজার টাকা।
এ পরিস্থিতিতে অপরিশোধিত ও পরিশোধিত দুই ধরনের চিনি আমদানিতে বিদ্যমান ৩০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা প্রয়োজন বলে মনে করে ট্যারিফ কমিশন। পাশাপাশি চিনি চোরাচালান বন্ধে সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়াতে হবে।
চোরাচালান কমাতে নিতে হবে পদক্ষেপ
গত ৫ অর্থবছরের তুলনায় সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে অপরিশোধিত চিনি আমদানির পরিমাণ কমেছে প্রায় ৪ লাখ ৫৭ হাজার টন বলে জানিয়েছে ট্যারিফ কমিশন। একই সঙ্গে পরিশোধিত চিনির আমদানি কমেছে ১৩ হাজার টন। অথচ ওই সময়ে বাজারে চিনির সরবরাহে ঘাটতি দেখা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, চোরাচালানের মাধ্যমে দেশে চিনি আমদানি করে স্থানীয় বাজারে সরবরাহ করা হয়েছে।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চিনির কেজি পাওয়া যায় ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। অন্যদিকে, উচ্চ শুল্ক হার থাকায় দেশে এই চিনি বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায়। দুই দেশের মধ্যে দামে এই বিস্তর ব্যবধান থাকায় চোরাচালান বাড়ছে। সম্প্রতি সীমান্তবর্তী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে চিনি আটকের তথ্যও রয়েছে। বৈধ আমদানি হলে চোরাচালান কমবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৪১:০১ ৫৬ বার পঠিত