নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, প্রায় সতের বছর পর নিজ এলাকায় বক্তব্য রাখতে পারছি। আজকে এই সভা আমাদের সবাইকে মুগ্ধ করেছে। যারা আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছে, তাদের অনেক অত্যাচার নির্যাতন, জেল জুলুম ও ত্যাগ সহ্য করতে হয়েছে। দীর্ঘ ১৭ বছর স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করেছি। মুক্তিযোদ্ধার চেতনায় বাংলাদেশে গণতান্ত্রীক রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে। তারা গণতন্ত্র বন্ধ করে দেশের মানুষের উপর অত্যাচার নির্যাতন করেছে, দেশের অর্থ সম্পদ লুন্ঠন করে নিয়ে গেছে, জনগণের কথা একবারও ভাবেনি। কিন্তু আমাদের প্রায়াত নেতা বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান আমাদের মধ্যে একটি আদর্শ দিয়ে গেছেন। সেটা হলো দেশপ্রেম ও জাতির কল্যাণে কাজ করা। কিন্তু স্বৈরাচার সরকার মানুষের বিরুদ্ধে গিয়ে দেশকে ধ্বংসের পথে নিয়ে গেছিলো। ২০১৪, ১৮ ও ২৪ সালের নির্বাচনে মানুষের ভোট প্রয়োগ করার অধিকার হরণ করেছে। দিনের ভোট তারা রাতে করেছে, ভোটর বিহীন নির্বাচন করে। তারা অন্যায়-অবৈধভাবে ক্ষমতা দলল করে দেশের মানুষের উপর নির্যাতন করেছে, দেশকে লুটপাট করেছে।
সোমবার (৭ অক্টোবর) সিদ্ধিরগঞ্জে তরুণ দলের গণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আপোষহীন ভাবে কিভাবে আন্দোলন করতে হয় সেটা সে দেখিয়েছে। তাদের সুযোগ্য সন্তান ও আমাদের প্রিয় নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি চলছে, তাঁর দিক নির্দেশনায় আমরা সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। এই স্বৈরাচারী সরকার মানুষের বুকের উপর গুলি করেছেন, মানুষকে খুন করেছে, মানুষকে গুম করে অরাজকতা তৈরী করেছে, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে, অনেকের মা-বাব, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তান রেখে মানবেতর জীবন পার করতে হয়েছে। তবুও আমরা স্বৈরাচারকে ভয়পাইনি, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে অনবরত লড়াই সংগ্রাম করে এগিয়েছি। আমাদের আন্দোলনের সাথে ছাত্র জনতা এই আন্দোলনে অংশগ্রহন করেছে। সর্বোশেষ ৫ আগস্ট চূড়ান্ত বিজয়ের লগ্নে স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্টদের প্রধান হাসিনা তার বোনকে নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তাকে আমরা দেশ ছেড়ে পালাতে বলি নাই, কিন্তু সে পালিয়ে গেছে। কারণ এতো অপরাধ সে করেছিলো, তার বাহিনীকে নিয়ে এতো অন্যায় করেছে, সে বুঝতে পেরেছিলো তার বিরুদ্ধে জনগণ রুখে দাঁড়িয়েছে। সে যদি বাংলাদেশের মাটিতে থাকে তাহলে তার অস্তিত্ব থাকবে না।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ায় সারা বাংলাদেশের মানুষ মুক্তি পেছে স্বৈরাশাসনের থেকে, এই স্বাধীনতার জন্য আজকে আমরা আপনাদের সামনে এতে বক্তব্য দিতে পারছি। এখন আমরা বিজয় লাভ করেছি, আমাদের এখন গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে হবে, জনগণের ভোটাধিকার জনগনের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে, জনগণ তাদের ভোট দিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে জয়লাভ করাবে সেই সুযোগ তাকে দিতে হবে। স্বৈরাচার বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে গেছে, আওয়ামী লীগ পরিবারের লোকজন বিচার বিভাগে বসিয়েছে। কোন মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়নাই। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে হুকুম দিয়ে জেলে পাঠিয়েছে। বিরোধী দলের আমাদের অনেককে মিথ্যা মামলা দিয়ে গুম, খুন ও নির্যাতন করেছে।
গিয়াসউদ্দিন বলেন, স্বৈরাচারী শাসক মানুষের বাক স্বাধীনতা হরণ করেছিলো। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আমরা কোন কথা বলতে পারি নাই। সংবাদমাধ্যম ন্যায়ের কথা লিখতে পারে নাই, যারা লিখেছে ন্যায়ের কথা তাদের অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলবে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে এটা তার মৌলিক অধিকার। স্বৈরাচারী হাসিনার আমলে দেশের সকল ব্যাংক লুক করে অর্থ পাচার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২:১৬:৩০ ১২৩ বার পঠিত