জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) এবং জাপান সরকার বাংলাদেশে রোহিঙ্গা নারী ও কিশোরীদের পাশাপাশি আশেপাশের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নের জন্য একটি যুগান্তকারী অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
আজ এখানে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চুক্তির অধীনে, জাপান রোহিঙ্গা নারী ও কিশোরী এবং আশেপাশের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার উন্নয়নে ইউএনএফপিএ’র প্রচেষ্টাকে সহায়তা করতে ৩৩ লাখ মার্কিন ডলার দেবে।
জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি এখানে জাপান দূতাবাসে অনুষ্ঠিত অংশীদারিত্বের একটি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বলেন, আমি আশা করি যে এই সহায়তা নারী ও কিশোরীদের সুরক্ষা, তাদের মর্যাদা এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে অবদান রাখবে।
জাপানের উদার সহায়তায় ইউএনএফপিএ বাংলাদেশের প্রতিনিধি মাসাকি ওয়াতাবে বলেন, তার সংস্থা নারী স্বাস্থ্যসেবা বাড়াতে এবং কক্সবাজার ও নোয়াখালী জেলার প্রধান স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সংযোগ জোরদারে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করতে সক্ষম হবে।
এই তহবিল ইউএনএফপিএ’কে ‘কক্সবাজার ও নোয়াখালী জেলার মিয়ানমার এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের জন্য অগ্রসর নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা এজেন্ডা এগিয়ে নেওয়া’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।
এটি তিনটি প্রধান উপাদান নিয়ে গঠিত, পথমটি কক্সবাজার এবং ভাসানচরের রোহিঙ্গা নারী ও কিশোরী মেয়েদের এবং সেইসঙ্গে বাংলাদেশের নোয়াখালী ও কক্সবাজার জেলার ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় জগগোষ্ঠীর সবচেয়ে প্রয়োজনীয় চাহিদাগুলো পূরণ করবে।
প্রকল্পের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য (এসআরএইচ) চাহিদা মোকাবেলা করা, টেকসই এবং শক্তিশালী স্বাস্থ্যসেবার সক্ষমতা তৈরির সময় পরিষেবাগুলোর চাহিদা তৈরি করা।
দ্বিতীয় উপাদানটি নারী ও কিশোরীদের বিরুদ্ধে লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা (জিবিভি) মোকাবেলা করে এবং নারী বান্ধব পরিবেশ (ডাব্লুএফএস) এবং নারী নেতৃত্বাধীন কমিউনিটি সেন্টার (ডাব্লুএলসিসি), পাশাপাশি নারী বিষয়ক অফিস এবং পুলিশ স্টেশনগুলোতে নারী সহায়তা ডেস্কের মাধ্যমে জীবন রক্ষাকারী সুরক্ষা পরিষেবাগুলোর প্রাপ্তি সহজতর করার দিকে মনোনিবেশ করা।
তৃতীয় উপাদানটি বিশেষভাবে বাল্যবিবাহ, কিশোরী গর্ভাধারণ এবং মানবিক সহায়তা থেকে বাদ পড়ার ঝুঁকিতে থাকা কিশোর ও যুবকদের লক্ষ্য করা।
২০১৭ সালের আগস্ট থেকে জাপান বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের প্রতি অব্যাহত সমর্থন দিচ্ছে। নতুন তহবিলের মাধ্যমে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর পাশাপাশি জাপান বাংলাদেশে এনজিওগুলোকে ২২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি সহায়তা দিচ্ছে।
রোহিঙ্গা মানবিক সংকট সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে স্থায়ী সুরক্ষা সংকটে পরিণত হয়েছে, যা বাস্তুচ্যুত মানুষ ও স্থানীয় জনগোষ্ঠী উভয়ের জীবন, নিরাপত্তা ও সুস্বাস্থ্যের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৩০:০৮ ৫৬ বার পঠিত