যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজেকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) গভীর রাতে ফ্লোরিডায় উচ্ছ্বসিত সমর্থকদের সামনে ভাষণ দেওয়ার সময় এই ঘোষণা দেন তিনি। খবর বিবিসির।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মধ্যরাতে উচ্ছ্বসিত সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় নির্বাচনে নিজের বিজয় ঘোষণা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফ্লোরিডায় নিজের প্রচার শিবিরের সদর দপ্তরে সমর্থকদের সামনে ট্রাম্প বলেন, আমেরিকা আমাদের একটি অভূতপূর্ব এবং শক্তিশালী ম্যান্ডেট দিয়েছে।
জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, একদিন তারা (দেশের মানুষ) এই দিনের দিকে ফিরে তাকাবে এবং এই দিনটিকে ‘নিজেদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোর মধ্যে একটি দিন’ হিসেবে বিবেচনা করবে।
অবশ্য, বুথফেরত জরিপ থেকে যে চিত্র পাওয়া যাচ্ছে, তাতে নিজেকে বিজয়ী বলতেই পারেন ট্রাম্প। এখন পর্যন্ত পাওয়া আপডেট অনুযায়ী, হোয়াইট হাউসে প্রবেশের জন্য প্রয়োজনীয় ২৭০ ইলেকটোরাল ভোটের বিপরীতে ইতোমধ্যে ২৬৭ ভোট পেয়ে গেছেন সাবেক এ প্রেসিডেন্ট। হোয়াইট হাউস পুনরুদ্ধারে আর মাত্র তিন ভোট দূরে আছেন তিনি। অন্যদিকে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস এখনও আটকে আছেন ২২৪টি ভোট।
যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যে মোট ৫১৪টি ইলেকটোরাল ভোট আছে, যেখানে আর মাত্র ২৩টি ভোটের হিসাব বাকি। এখন পর্যন্ত কাগজে-কলমের হিসাবে দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর জন্যই হোয়াইট হাউজের দুয়ার খোলা মনে হলেও বাস্তবে ব্যবধান গড়ে দিচ্ছে সাত সুইং স্টেটের ৯৩টি ইলেকটোরাল ভোট, যেখানে এরই মধ্যে নর্থ ক্যারোলিনা, জর্জিয়া ও পেনসিলভানিয়ার ৫১টি ভোট দখলে নিয়েছেন ট্রাম্প।
নিউইয়র্ক টাইমসের আপডেট দেখাচ্ছে, সুইং স্টেট খ্যাত মিশিগান এবং উইসকনসিনেও ভালোভাবেই এগিয়ে আছেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট। স্টেটগুলোর সবশেষ বুথফেরত জরিপ তার জয়ের আভাসই দিচ্ছে। মোট ২৬টি ইলেকটোরাল ভোট আছে স্টেট দুটিতে। এর মধ্যে মিশিগানে ১৫ এবং উইসকনসিনে ১০টি ইলেকটোরাল ভোট আছে। অন্য দুই সুইং স্টেট অ্যারিজোনা ও নেভাদায় ভোটগ্রহণ শেষ হতে এখনও অনেকখানি সময় বাকি। যথাক্রমে ১১টি ও ৬টি ইলেকটোরাল ভোট আছে স্টেট দুটিতে।
বুথফেরত জরিপ অনুযায়ী আভাস মিলেছে, তিনশোরও বেশি ভোটে জিতে ১৩২ বছরের বিরল এক রেকর্ডে ভাগ বসাতে যাচ্ছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার আগে মার্কিন রাজনীতির ইতিহাসে হোয়াইট হাউস পুনরুদ্ধার করতে পেরেছেন একজনই; গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড। ১৮৮৪ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ১৮৮৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডেমোক্র্যাটদের পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশ নেন তিনি।
কিন্তু সেই নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী বেঞ্জামিন হ্যারিসনের কাছে হেরে যান ক্লিভল্যান্ড। পরবর্তীতে ১৮৯২ সালে আবার নির্বাচনে অংশ নেন। হ্যারিসনকে হারিয়ে আবারও হোয়াইট হাউজের ক্ষমতায় বসেন ক্লিভল্যান্ড। আমেরিকার ২২তম ও ২৪তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি।
মূলত, বাইডেনের চার বছরের শাসনামলে অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কর্মসংস্থানের সংকট সৃষ্টির পাশাপাশি অব্যাহত মূল্যস্ফীতির কারণে পড়ে গেছে জীবনযাত্রার মান। অন্যদিকে, বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য নীতি ও অভ্যন্তরীণ কিছু নীতির কারণেও সেখানকার মুসলমান নাগরিকরা আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন ডেমোক্র্যাটদের প্রতি। বাইডেন প্রশাসনের বিগত দিনের ভুলগুলোর খেসারতই কমলাকে দিতে হচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৫১:১৯ ৮ বার পঠিত