পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানের কোয়েটায় একটি রেলস্টেশনে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে হতাহতের সংখ্যা আরও বেড়েছে। সবশেষ তথ্য মতে, ২৬ জন নিহত ও ৬২ জন আহত হয়েছেন।
প্রতিবেদন মতে, শনিবার (৯ নভেম্বর) ভোরে বেলুচিস্তাস্তানের মাস্তুং জেলার কোয়েটা রেলস্টেশনের ভেতরে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। গত সপ্তাহে এই মাস্তুংয়ের একটি হাসপাতাল ও একটি স্কুলের কাছে বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছিল। তাতে পাঁচ শিশুসহ ৮ জন নিহত হয়।
কোয়েটার সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ অপারেশন মুহাম্মদ বালোচ বলেন, ‘পেশোয়ারগামী একটি ট্রেন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছিল, তখনই রেলওয়ে স্টেশনের ভেতরে বিস্ফোরণটি ঘটে। তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে এটিকে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ বলে মনে হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে আরও তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি।
রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবার সকাল ৯টায় জাফর এক্সপ্রেস পেশোয়ারের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা ছিল। তবে ট্রেনটি প্ল্যাটফর্মে আসার আগ মুহূর্তেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
প্রাদেশিক স্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র ওয়াসিম বেগ বলেন, বিস্ফোরণে প্রথমে ২৪ জনের মৃত্যু হয়। এরপর আরও দুইজন মারা যাওয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৬ জনে দাঁড়িয়েছে। আর আহত হয়েছেন ৬২ জন।
কোয়েটা ডিভিশন কমিশনার হামজা সাফকাত বলেন, প্রাথমিকভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তিনি জানান, বিস্ফোরণের পর স্টেশন ও ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
হামজা সাফকাত আরও বলেন, বিস্ফোরণে বেসামরিক নাগরিকদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকজন সদস্যও নিহত হয়েছে। তবে তাদের সংখ্যা কত তা স্পষ্ট জানাননি তিনি।
রয়টার্সের প্রতিবেদন মতে, বেলুচিস্তান পুলিশের আইজি মোয়াজ্জেম জাহ আনসারি বলেন, ‘টার্গেট ছিল পদাতিক স্কুলের সেনা সদস্যরা।’ ওয়াশিম বেগ ডনকে সেনা সদস্যদের মৃত্যু সম্পর্কে বিস্তারিত নিশ্চিত না করলেও তার বরাত দিয়ে এএফপি বলেছে, ‘সেনাবাহিনীর ১৪ সদস্য এবং বেসামরিক ১২ জন নিহত হয়েছেন।’
বেগ আরও বলেছেন, এছাড়া সেনাবাহিনীর ৪৬ সদস্য এবং ১৪ জন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এদিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত সশস্ত্র গোষ্ঠী বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে।
বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি প্রাণঘাতী ঘটনার তদন্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া এই প্রদেশ থেকে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করার সংকল্প আবারও ঘোষণা করেন তিনি।
ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট সৈয়দ ইউসুফ রাজা গিলানি বলেছেন, যেসব সন্ত্রাসী নিরীহ মানুষকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে, তারা মানবতার শত্রু। সন্ত্রাসবাদ সম্পূর্ণ নির্মূলের জন্য সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০:২৫:২৫ ১৭ বার পঠিত