অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বর্তমান সরকার তার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সমাজের সব মহল এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে খুব ভাল সাড়া পাচ্ছে। আজ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনে (পিকেএসএফ) আয়োজিত ‘পিকেএসএফ দিবস ২০২৪’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা এসব এ কথা বলেন।
এবারের পিকেএসএফ দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে অর্থায়ন’।
পিকেএসএফ’র চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পিকেএসএফের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক বদিউর রহমান এবং স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম ফজলুল কাদের।ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ প্রায় নয় বছর পিকেএসএফ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, ‘পিকেএসএফ একটি বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান। সবচেয়ে কম খরচে কর্মসূচি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন করার সক্ষমতা, অভিজ্ঞতা ও খ্যাতি রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের।’ তিনি মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরী অথরিটি’কে (এমআরএ) পিকেএসএফ’র সহযোগী সংস্থাগুলোর প্রতি আরো বন্ধুসুলভ আচরণ প্রদর্শনের অনুরোধ জানান।
পিকেএসএফ বাংলাদেশের জন্য একটি মডেল প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সততা ও স্বচ্ছতার নিরিখে পিকেএসএফ’কে অনুসরণ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বাংলাদেশ সরকারের চলমান সংস্কার প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘বর্তমান সরকার স্বল্পমেয়াদি সংস্কার কাজ করবে। আর দীর্ঘমেয়াদী সংস্কার করবে রাজনৈতিক সরকার। আমরা একটি ফুটপ্রিন্ট রেখে যাব, পরবর্তীতে যে রাজনৈতিক সরকার আসবে, তারা এ ফুট প্রিন্ট অনুসরণ করে চলমান সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাবে।’ বর্তমান সরকারের প্রতি বিশ্বের সবার সমর্থন আছে উল্লেখ করে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পিকেএসএফ’র প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক বদিউর রহমান বলেন, একটি প্রতিষ্ঠানের স্থিতিশীলতার জন্য যে শক্ত ভিত্তি প্রয়োজন, তা পিকেএসএফ’র রয়েছে। এখন সময় এসেছে বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করা।
সভাপতির বক্তব্যে পিকেএসএফ’র চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান প্রতিষ্ঠানটির সকল অংশীজন, উন্নয়ন সহযোগী, সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ, সহযোগী সংস্থা, এমআরএ এবং মাঠ পর্যায়ের সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে পিকেএসএফ’র সহযোগী সংস্থাসমূহকে আরো শক্তিশালী ও কার্যকর করে গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে পিকেএসএফ’র ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের পিকেএসএফ প্রতিষ্ঠার ইতিহাস প্রসঙ্গে বলেন, সম্পূর্ণ দেশজ ধারণার ওপর ভিত্তি করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে পিকেএসএফ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পিকেএসএফ’র কর্মকৌশল ছিল আত্ম-কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে অর্থায়ন করা। এ সংক্রান্ত কার্যক্রমকে দারিদ্র্য নিরসনে আরো কার্যকরভাবে ব্যবহারের লক্ষ্যে পিকেএসএফ ২০০৩ সাল থেকে অর্থায়নের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে।
কর্মসৃজনের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত পিকেএসএফ বর্তমানে সারাদেশে দুই শতাধিক সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে প্রায় ২ কোটি দরিদ্র্য ও সুবিধাবঞ্চিত পরিবারকে বহুমুখী আর্থিক ও অ-আর্থিক সেবা প্রদান করছে। ১৯৮৯ সালের ১৩ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে পিকেএসএফ গঠিত হয়। সে অনুযায়ী ১৩ নভেম্বরকে ‘পিকেএসএফ দিবস’ হিসেবে উদযাপন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:২৭:৫৪ ১৫ বার পঠিত