যুক্তরাষ্ট্রের নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিজের বিশ্বস্ত ও অনুগত ম্যাট গেটজকে বেছে নিয়েছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বুধবার (১৩ নভেম্বর) নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ট্রাম্প এই ঘোষণা দেন।
৪২ বছর বয়সী ম্যাট গেটজ ফ্লোরিডার রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান ম্যাট গেটজ তার অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এর ফলে তিনি দেশের শীর্ষ প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্বপালনের পাশাপাশি মার্কিন বিচার বিভাগের প্রধান হিসাবেও দায়িত্বপালন করবেন।
বুধবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ম্যাট গেটজকে এই পদে মনোনয়নের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। এসময় আইনজীবী এবং হাউস জুডিশিয়ারি কমিটির সদস্য হিসাবে গেটজের অতীত ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।
তিনি এও ইঙ্গিত দিয়েছেন, অ্যাটর্নি জেনারেল পদে গেটজের এই মনোনয়ন তার এজেন্ডার অংশ হবে। মূলত ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগকে “অস্ত্রীকরণ” করার জন্য অভিযুক্ত করে এসেছেন।
ট্রাম্প তার বিবৃতিতে লিখেছেন, “আমাদের বিচার ব্যবস্থার পক্ষপাতমূলক অস্ত্রায়নের অবসানের চেয়ে আমেরিকায় অল্প কয়েকটি বিষয়ই বেশি গুরুত্বপূর্ণ আছে।”
তার ভাষায়, “ম্যাট অস্ত্রধারী সরকারের অবসান ঘটাবে, আমাদের সীমান্ত রক্ষা করবে, অপরাধমূলক সংগঠনগুলোকে ভেঙে দেবে এবং বিচার বিভাগের প্রতি আমেরিকানদের খারাপভাবে ছিন্নভিন্ন হওয়া বিশ্বাস ও আস্থা পুনরুদ্ধার করবে।”
এদিকে ট্রাম্পের অনুগত বলে পরিচিত ম্যাট গেটজ সোশ্যাল মিডিয়ায় তার মনোনয়নকে বেশ ভালোভাবেই উদযাপন করেছেন। “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবে কাজ করা সম্মানের” বলেও অভিহিত করেছেন তিনি।
মূলত গত ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবারও বিজয়ী হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এর মাধ্যমে দেশটির প্রায় আড়াইশো বছরের ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে এক মেয়াদের বিরতিতে দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউসে ফিরতে চলেছেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
অবশ্য নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জিতলেও ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন আগামী বছরের ২০ জানুয়ারি। তবে এর আগেই নিজের প্রশাসন সাজাবেন তিনি।
মূলত নির্বাচিত হওয়ার পর নতুন করে প্রায় চার হাজার পদে নিয়োগ দিতে হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে। সেই তালিকায় মন্ত্রিসভার সদস্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা পর্যন্ত নির্ধারণ করেন তিনি। ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ার পর একে একে তার প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে যারা থাকবেন তাদের নাম ঘোষণা করছেন।
ইতোমধ্যেই প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে ফক্স নিউজের হোস্ট পিট হেগসেথ ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটির (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) জন্য ক্রিস্টি নোয়েমের নাম জানিয়েছেন তিনি। নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে মার্কো রুবিওকে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম সিবিএস।
এছাড়া গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ হিসেবে সুসি উইলসের নাম ঘোষণা করেন ট্রাম্প। ৬৭ বছর বয়সী সুসি হবেন হোয়াইট হাউসের প্রথম নারী চিফ অব স্টাফ। তিনি ছিলেন ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার শিবিরের দুই ম্যানেজারের একজন।
আর গত মঙ্গলবার ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্ক ও সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বিবেক রামাস্বামীকে নতুন একটি দপ্তরের দায়িত্ব দিতে যাচ্ছেন তিনি। দপ্তরটির নাম হবে “ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি”।
বাংলাদেশ সময়: ১২:০৫:৩৫ ৪০ বার পঠিত