২০২৩ সালে সার্বিকভাবে সর্বোচ্চ দুর্নীতি ও ঘুষের হার পাসপোর্ট, বিআরটিএ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থায়। ঘুষের পরিমাণ বেশি ছিল বিচার বিভাগ, ব্যাংকিং ও ভূমিসেবা খাতেও।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) টিআইবি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় খানা জরিপ ২০২৩ অনুসারে এসব তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।
টিআইবির এই খানা জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, ২০২৩ সালে জাতীয় পর্যায়ে প্রাক্কলিত মোট ঘুষের পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার ৯০২ কোটি টাকা, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের (সংশোধিত) ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং বাংলাদেশের জিডিপি’র শূন্য দশমিক ২২ শতাংশ। সার্বিকভাবে দুর্নীতির শিকার ৭০ দশমিক ৯ শতাংশ খানা এবং ঘুষের শিকার ৫০ দশমিক ৮ শতাংশ খানা; সর্বোচ্চ দুর্নীতি ও ঘুষের হার পাসপোর্ট, বিআরটিএ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থায়। ঘুষের পরিমাণ বেশি ছিল বিচার বিভাগ, ব্যাংকিং ও ভূমিসেবা খাতেও।
জরিপের উঠে আসে, ২০০৯ থেকে ২০২৪ (এপ্রিল) পর্যন্ত সেবাখাতে জাতীয় পর্যায়ে মোট ঘুষের ন্যূনতম প্রাক্কলিত পরিমাণ ১ লাখ ৪৬ হাজার ২৫২ কোটি টাকা।
বিচারিক সেবা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থায় দুর্নীতি ও ঘুষের উচ্চহার অব্যাহত, যা সাধারণ জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বড় বাধা। অন্যদিকে ভূমি সেবা, পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং বিআরটিএ’র মতো সেবায় উচ্চদুর্নীতি ও ঘুষ বিদ্যমান, যা মানুষের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসহ সেবা প্রাপ্তির অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যাদের দুর্নীতি রোধ করার কথা তারাই দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়েছেন। যে কারণে দুর্নীতি কমছে না। গ্রামের মানুষ সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির শিকার।
তিনি আরও বলেন, পাসপোর্ট খাত সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। ২০২৩ সালে দুর্নীতিগ্রস্ত পাঁচ সেবা খাতের মধ্যে শীর্ষে ছিল পাসপোর্ট খাত এবং উচ্চপর্যায়ের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে পুলিশ।
আক্ষেপ নিয়ে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও পাসপোর্ট অফিস দুর্নীতি রোধে অনেক কথাই বলে কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায় না। দুদক সবচেয়ে অকার্যকর ও ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। আর সরকারি অফিস বিশেষ করে পাসপোর্টে সিন্ডিকেট করে দুর্নীতি করা হয়, যেখান থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও সুবিধা পেয়ে থাকেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:০০:৪৪ ৮ বার পঠিত