মেরাজের রাতে যাদের সঙ্গে দেখা হয়েছিলো নবীজির

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারী » মেরাজের রাতে যাদের সঙ্গে দেখা হয়েছিলো নবীজির
শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৫



মেরাজের রাতে যাদের সঙ্গে দেখা হয়েছিলো নবীজির

হিজরি সনের বরকতময় ও গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস হলো রজব। হিজরি সনের সপ্তম মাস এটি। এ মাস মুসলমানদের জন্য বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ। এটি কোরআনে বর্ণিত ‘আশহুরে হুরুম তথা সম্মানিত চার মাস-এর অন্তর্ভুক্ত। আগত রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করার বিশেষ একটি সুযোগ এ মাস।

রজব মাসের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি ও তওবার সুযোগ সৃষ্টি হয়। এই মাসে মুসলমানরা আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করে এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। ইসলামি ইতিহাসে এ মাসের তাৎপর্য অনেক। কারণ, মহানবী হজরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমাসেই মক্কা থেকে বাইতুল মুকাদ্দাস,সেখান থেকে সপ্তম আকাশে ভ্রমণ করেন। ভ্রমণ পথে তিনি অনেক কিছু প্রত্যক্ষ করেন। এবং সাক্ষাৎ পান অনেকেরই।

নিম্নে তুলে ধরা হলো, মেরাজের যাত্রাপথে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কী কী প্রত্যক্ষ করেছেন ও কাদের সাক্ষাৎ পেয়েছেন।

১. আল্লাহ তায়ালার সাথে সাক্ষাৎ ও কথোপকথন। আহলুসসুন্নাহ ওয়াল জামাতের নিকট নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহকে সরাসরি দেখেছেন এবং কথা বলেছেন। কোরআনে এসেছে,

সে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা দেখেছে তোমরা কি সে বিষয়ে তার সাথে বিতর্ক করবে? নিশ্বয়ই সে তাকে(আল্লাহকে) আরেকবার দেখেছিল সিদরাতুল মুনতাহার (প্রান্তবর্তী বদরি বৃক্ষের) নিকট। (সুরা নাজম,আয়াত:১২-১৪) তবে অন্যরা বলেন, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুধু আল্লাহ তায়ালার সাথে পর্দার আড়াল থেকে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎ করেননি।

২. নবীগণের সাথে সাক্ষাৎ। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাত আকাশে ৭ জন বিশিষ্ট নবীগণের সাক্ষাৎ পান। এছাড়াও ফিরে আসার পথে বায়তুল মুকাদ্দাসে অনেক নবীর সাক্ষাৎ পান। এবং নামাজে সকলের ইমামতি করেন। (মুসলিম, হাদিস : ১৭২)

৩. জান্নাতি ও জাহান্নামিদের সাথে সাক্ষাৎ। হাদিসে আছে,

নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন প্রথম আসমানে যান-দেখেন এক ব্যক্তি, তার ডান পাশে কিছু রুহ আর বাম পাশে কিছু রুহের কাফেলা। তিনি ডানদিকে তাকালে হাসেন হাসেন আর বাম দিকে তাকালে কাঁদেন। তিনি নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সম্ভাষণ জানালেন। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন, জিবরাইল (আলাইহিসালাম), কে তিনি? জিবরাইল আলাইহিসালাম বললেন, ইনি আদম আলাইহিসসালাম । আর তাঁর দুই পাশে তাঁর সন্তানদের রুহ। ডানদিকেরগুলো জান্নাতি আর বামদিকেরগুলো জাহান্নামি। এজন্য তিনি ডানদিকে তাকিয়ে হাসেন আর বামদিকে তাকিয়ে কাঁদেন। (বুখারি, হাদিস : ৩৩৪২)

৪. মালেক নামক জাহান্নামের প্রধান রক্ষীর সাথে সাক্ষাৎ। (মুসলিম শরিফ, হাদিস :১৬৭) ৫.দাজ্জালের সাথে সাক্ষাৎ ও প্রত্যক্ষ। (মুসলিম শরিফ, হাদিস :১৬৭) ৬.এমন একদল লোকের পাশ দিয়ে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গমন করেছিলেন, যাদের নখ ছিল তামার। এই নখ দ্বারা তারা স্বীয় মুখ ও বক্ষ আচঁড়াচ্ছিল। এদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে জিবরাইল নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে জানালেন, এরা সেই লোক, যারা দুনিয়াতে একে অপরের গিবত করত। (মুসনাদে আহমদ,হাদিস: ২২৪)

৭. নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন কিছু লোককে দেখতে পেয়েছিলেন, যাদের ঠোঁট কাঁচি দিয়ে কাটা হচ্ছিল, ঠোঁট কাটা মাত্র তা পুনরায় জোড়া লেগে পূর্ব অবস্থায় ফিরে যেত। এদের সম্পর্কে প্রশ্ন করলে জিবরীল রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে উত্তর দিলেন, এরা এমন বিষয়ে বক্তৃতা দিত, যা তারা নিজেরা আমল করত না। (মুসনাদে আহমদ,হাদিস: ২২৪)

৮.শবে মেরাজে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন লোকদের দেখলেন, যাদের পেট ছিল এক একটি গৃহের মতো। পেটের ভেতরটা সাপে ভরা ছিল, যা বাহওর থেকেই দৃষ্টিগোচর হচ্ছিল। প্রশ্ন করা হলে জিবরাইল আলাইহিসসালাম জানালেন, এরা সুদখোর। (মুসনাদে আহমদ,হাদিস: ২২৪)

৯. মোতি জহরদের প্রাসাদে ঘেরা একটি নহর দেখতে পেলেন, যার পানি ছিল মেশক-এর চেয়ে বেশি সুগন্ধিময়। এটা কী- নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানতে চাইলে জিবরাইল আলাইহিসালাম বললেন, এর নাম,‘কাওসার’ যা আপনার প্রতিপালক একমাত্র আপনার জন্যই সুরক্ষিত করে রেখেছেন।

১০. নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চারটি নদীও দেখেছিলেন। এর মধ্যে দু’টি জাহেরি আর দুটি বাতেনি। বাতেনি দুটি জান্নাতে প্রবাহিত আর জাহেরি দুটি হচ্ছে, নীল ও ফুরাত।

১১. নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জান্নাতে প্রবেশ করে একপাশে একটি হালকা আওয়াজ শুনতে পেলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এটা কীসের আওয়াজ? জিবরাইল আলাইহিসালাম বললেন, মুয়াজ্জিন বেলালের কণ্ঠ। মিরাজ থেকে ফিরে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবায়ে কেরামের উদ্দেশ্যে বললেন, বেলাল সাফল্য অর্জন করেছে, আমি তার জন্য এমন সব মর্যাদা দেখেছি। (মুসনাদে আহমদ,হাদিস:২৫৭)

১২. নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বায়তুল মুকাদ্দাসে যাওয়া বা আসার পথে মক্কার কুরাইশদের বাণিজ্য কাফেলাও দেখতে পেয়েছিলেন। (মুসতাদরাকে হাকেম,হাদিস:৩২১)

বাংলাদেশ সময়: ১২:০৯:৩০   ১২ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ছবি গ্যালারী’র আরও খবর


এইচএমপিভি ভাইরাসের সংক্রমণ এবার মালয়েশিয়ায়, দ্রুত বিস্তারের শঙ্কা!
ইতিহাসের এই দিনে
আজকের রাশিফল
আল কোরআন ও আল হাদিস
সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন পদ্ধতি চালু করতে প্রয়োজনে গণভোট দিন: সেলিম উদ্দিন
যুক্তরাজ্যের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ চান বাণিজ্য উপদেষ্টা
বৃষ্টির পরই বাড়বে শীত, শৈত্যপ্রবাহের শঙ্কা
খালেদা জিয়ার বাসভবনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা
সিরিয়ার মন্ত্রীরা প্রথম সফরে কাতারে পৌঁছেছেন
অভিনেতা প্রবীর মিত্র মারা গেছেন

News 2 Narayanganj News Archive

আর্কাইভ