চীনে হিউম্যান মেটাপনিউমো ভাইরাস সংক্ষেপে এইচএমপিভি আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তা উদ্বেগের কারণ হিসাবে দেখা দিয়েছে। যদিও বিশেষজ্ঞরা এইচএমপিভি’র প্রাদুর্ভাবকে করোনা ভাইরাসের শুরুর সময়কালের সাথে তুলনা করার ব্যাপারটাকে নাকচ করে দিয়েছেন। খবর এএফপি।
এইচএমপিভি সম্পর্কে আপনাকে যা জানতে হবে: এটা ফ্লু ভাইরাসের মত একটা ব্যাপার। এই ভাইরাস সাধারণত আমাদের উপরের শ্বাসনালিতে কম-বেশি সংক্রমণ ঘটায়। এটা ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ছড়ায়। তাছাড়া ময়লা-আবর্জনায় হাত দিলেও মানুষেরা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে।
এ রোগের সাধারণ লক্ষণগুলো হল: কাশি, জ্বর এবং নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া। নানা ধরনের ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা ও জ্বরের সাথে এইচএমপিভি’র অনেক মিল আছে। শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি এবং যাদের ইমিউন সিস্টেম (রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা) যথাযথভাবে কাজ করে না সেসব মানুষের মধ্যে এসবের (জ্বর, কাশি এবং নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার ব্যাপারগুলো) লক্ষণ চরমভাবে দেখা দিতে পারে।
লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ভ্যাকসিন ইমিউনোলজি বিভাগের প্রফেসর জন ট্রিগোনিং এইচএমপিভি’র জন্য জনস্বাস্থ্য বিষয়ক যে পরামর্শ দিয়েছেন তা অনেকটা জ্বরের ক্ষেত্রে দেওয়া হয়। তিনি বলেছেন, স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে অবস্থান করতে হবে এবং কাশির সময় মুখ ঢেকে রাখতে হবে। আপনার হাত ধোয়া আপনাকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারে।
আক্রান্তদের উচিৎ হবে বিশ্রাম নেওয়া, তরল খাবার খাওয়া এবং এমন কিছু না করা যাতে ভাইরাসটি অন্যদের মাঝে ছড়ায়।
জন ট্রিগোনিং আরো বলেছেন, করোনাভাইরাস ছিল অজানা। ২০১৯ সালে যখন এটার প্রাদুর্ভাব হয়। এরমানে তখন করোনাভাইরাসকে প্রতিহত করার কোনো ক্ষমতা মানুষের ছিল না। অন্যদিকে এইচএমপিভি কয়েক দশক ধরে বিস্তার লাভ করছে এবং বিশ্বব্যাপি মানুষেরা এর প্রতিকারের কিছু ব্যবস্থাও নিয়েছে।
ইম্পেরিয়াল কলেজের প্রফেসর জন আরো বলেছেন, এইচএমপিভি ভাইরাস হল শীতকালীন ভাইরাসগুলোর মিশ্রণ একটা অংশ।
বৃটেনের ইস্ট অ্যাংলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের প্রফেসর পল হান্টার বলেছেন, প্রায় সব শিশুই তাদের পাঁচ বছর বয়সের মধ্যে একবার এই এইচএমপিভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। পল আরো বলেছেন, অনেক মানুষ তাদের জীবনকালে একাধিকবার এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়।
চীন যা বলেছে, নতুন বছরের প্রাক্কালে চীনের রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে তাদের উন্নতি এবং অর্জন নিয়ে এক বড় ধরনের সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সেখানে চীনের জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিকার কেন্দ্র বলে যে তারা অজানা কারণে নিউমোনিয়া’ বিষয়ে সক্রিয়ভাবে তদারকি করছে। প্রতিরোধের প্রচলিত উপায়ের তারা উন্নতি করেছে।
তারা আরো বলে, বর্তমানে চীনে ইনফ্লয়েঞ্জা ভাইরাসের প্রবণতা ঊর্ধ্বমুখি, রাইনোভাইরাসের প্রবনতা নিম্নমুখি। যাদের বয়স শূন্য থেকে চারের মধ্যে তাদের ভিতর রেসপিরেটরি সিনসাইটাল ভাইরাসের উপস্থিতি ঊর্ধ্বমুখি। আর চৌদ্দ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে এইচএমপিভি ভাইরাসের উপস্থিতি বেশি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৪৯:১৭ ২৮ বার পঠিত