মাঘের হওয়া, ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে বিপর্যস্ত জেলাজুড়ে মানুষের জীবন। বৃষ্টির মত পড়ছে কুয়াশা। ঘন কুয়াশার পাশাপাশি হিমেল হাওয়া খেটে খাওয়া মানুষ বিপদে পড়েছে। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাহিরে বের হচ্ছেন না। গ্রামগুলোতে সাধারণ মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। অপরদিকে হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আজ সকাল ৭টায় রংপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। বেলা ১২ টা পেরিয়ে গেলেও রংপুরে সূর্যের মুখ দেখা মেলেনি।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান বাসস’কে বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে আগামীতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
জানা গেছে, উত্তরের জেলা রংপুরে মাঘ মাসের শুরু থেকে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে ঘন কুয়াশায় আর হিমেল হাওয়ার শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষ কষ্টে দিন যাপন করছে। রাস্তায় লোকজনের চলাচল একবারেই সীমিত। এমনকি ভর দুপুরেও সড়ক-মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে। নিতান্ত প্রয়োজন কিংবা জীবিকার তাগিদে ছুটে চলা মানুষেরই কেবল দেখা মিলছে পথে-ঘাটে। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে-খাওয়া মানুষজন। চরের মানুষগুলো পড়েছেন সবচেয়ে বেশি বিপাকে। হাড়কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ ৮টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনগণ নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমাজনিত রোগের আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতে চিকিৎসকরাও চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।
সদর উপজেলার মমিনপুর এলাকার দিনমজুর আমিনুর রহমান (বাংগড়) বলেন, পরিবার নিয়ে এই শীতে কষ্টে আছি। ইউনিয়ন পরিষদ গিয়েছিলাম কম্বলের জন্য। চেয়ারম্যান বলছেন কম্বল নেই।
ভ্যানচালক হাসিম মিয়া বলেন, যতই শীত আর কুয়াশা আসুক, পেটের তাগিদে আমাদেরকে ভ্যানগাড়ি নিয়ে বের হতেই হয়। ঠান্ডায় মানুষ বের হচ্ছেন না, তাই যাত্রী পাচ্ছিনা।
মিঠাপুকুর উপজেলা প্রকল্প ও বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান মনির বাসস’কে বলেন, এই শীতে উপজেলায় ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষের মধ্যে প্রায় ৩ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আবারো বিতরণের প্রস্তুতি চলছে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার আশিকুর রহমান বলেন, শীতজনিত রোগে বর্হিবিভাগে শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। চিকিৎসা প্রদান করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। পাশাপাশি শিশু ও বৃদ্ধ রোগীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৫৩:০০ ১০ বার পঠিত