নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেছেন, ‘ সবার একটা ক্ষোভ যে, আমরা যানজটমুক্ত করতে পারছি না। আপনারা যেভাবে আমাদের আশ্বস্ত করছেন, আমরা আজকে বলতে চাই, আমরা শহর যানজটমুক্ত করতে পারবো। তবে এই যানজটে অনেকগুলো ইস্যু আছে। অনেক ডিপার্টমেন্ট জড়িত আছে। আমরা কিন্তু একটা লিমিটেড জায়গা নিয়ে কাজ করি। আমাদের একটা ফরম্যাটের মধ্যে কাজ করতে হয়। আমরা চাইলেই কিছু নতুনভাবে চাপিয়ে দিতে পারি না। যেহেতু এখানে অনেকগুলো ডিপার্টমেন্ট জড়িত আছে, সুতরাং তাদের সবাইকে নিয়ে যানজট নিরসন সম্ভব।’
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যানজট নিরসনের লক্ষে সামাজিক, রাজনৈতিক ও নাগরিক সংগঠনের নেতাদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
এ সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও ছাত্র সংগঠনের নেতারা নারায়ণগঞ্জে যানজট সৃষ্টির বিভিন্ন কারণ জেলা প্রশাসকের নিকট তুলে ধরেন এবং সেসব সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ প্রস্তাব করেন।
ডিসি বলেন, ‘এমন মিটিং অনেক হয়েছে। ২০ বছর ধরে হচ্ছে কিন্তু কোনো যানজট মুক্ত হচ্ছে না। আরও ২০ বছর হলেও যানজট মুক্ত হবে না, যদি আমরা সবাই একত্রে কাজ না করি। আমি এখানে জয়েন করার পরে নারায়ণগঞ্জের যে সমস্যাগুলো শুনেছি তার মধ্যে প্রথমেই মনে হয়েছে যানজট। যানজটের সমস্যাটাকে কী করে সমাধান করবো সেটা নিয়ে প্রথম পরিকল্পনা শুরু করি।’
‘এখানে ইজিবাইক অন্যতম সমস্যা। যদি এই ইজিবাইকগুলোকে মূল পয়েন্টগুলো থেকে ঘুরিয়ে দিতে পারি এবং ইজিবাইকগুলোকে যদি রোড অনুযায়ী কালার নম্বর করে দিতে পারি তাহলে একটা ভালো ফলাফল পেতে পারি’, যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ৭ দিনের মধ্যে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ইজিবাইকগুলোতে রঙ করতে হবে। তাহলে লাইসেন্সের ইজিবাইকগুলো আলাদা করা যাবে। যদিও আপনারা (বক্তারা) বলছেন, ১৮ হাজার ইজিবাইক শহরে আর সিটি করপোরেশন বলছে, ৮ হাজার ইজিবাইকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে।’
বাসমালিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘চাষাঢ়া মোড়ে যাত্রী উঠানোর নামে প্রতিযোগিতা করে। এতে দুর্ঘটনারও শিকার হয়। যাত্রী কেন রাস্তা থেকে উঠাতে হবে? বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রী উঠাতে হবে, নাহলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে প্রশাসন। রাত দশটার পরে শহরে ট্রাক ঢুকবে।’
মীর জুমলা সড়ক ও শায়েস্তা খাঁ সড়ক দুইদিনের মধ্যে মুক্ত করতে সিটি কর্পোরেশনকে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার নির্দেশনা দেন ডিসি। একইসাথে রাস্তা ও ড্রেনের কাজ দ্রুত শেষ করার কথা বলেন তিনি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাকিব আল রাব্বির সঞ্চলনায় এই সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলমগীর হুসাইন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সচিব নূর কুতুবুল আলম, সেনাবাহিনীর পক্ষে ক্যাপ্টেন মাহফুজ, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি, মহানগর জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমেদ, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু, নাগরিক কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট এবি সিদ্দিক, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দিপু, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি মাওলানা দীন ইসলাম, মহানগর শাখার সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, গণঅধিকার পরিষদ মহানগরের সাধারণ সম্পাদক রাহুল আরেফিন, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর উদ্দিন আহম্মেদ, বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. রওশন আলী সরকার, জাতীয় নাগরিক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. শওকত আলী, সদর থানা প্রতিনিধি আহমেদুর রহমান তনু, জেলা ছাত্র ফেডারেশনর সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২২:২১:৩১ ১০ বার পঠিত