
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আতাহার এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই করতে চালক পলাশ হালদারকে হত্যা করে মরদেহ সরিষাক্ষেতে ফেলে রাখেন হত্যাকারীরা। এ ঘটনায় সদর মডেল থানা ও গোয়েন্দা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে চার আসামিকে গ্রেফতার করেছে।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় অটোরিকশা চালক পলাশ হালদার হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। মরদেহ উদ্ধারের পর ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত চার আসামিকে। ছিনতাই হওয়া অটোরিকশাটিও খণ্ডিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যার পর অটোরিকশাটি ভাঙারি ব্যবসায়ীর কাছে ৩৯ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন তারা।
তিনি আরও জানান, গত শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের নয়ানগর এলাকার একটি সরিষাক্ষেতে পলাশের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পলাশের গলায় মাফলার পেঁচানো ছিল। পলাশ হালদার সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের কালীনগরের শ্রী লাকফর হালদারের ছেলে।
পুলিশ সুপারের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, অটোরিকশাটি ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে পলাশ হালদারকে তারা হত্যা করেছেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পলাশের অটোরিকশাটি ভাড়া করেন খুনিরা। আসামিরা ভিকটিম পলাশের পূর্বপরিচিত ছিলেন। প্রথমে পলাশকে বাংলা মদ খাইয়ে মাতাল করা হয়। একপর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে সরিষা ক্ষেতের ভেতর ফেলে অটোরিকশাটি নিয়ে চলে যান তারা। এরপর সেটি পৃথক দুটি ভাঙারির দোকানে ৩৯ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন।
মো. রেজাউল করিম আরও বলেন, গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় রোববার রাতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চার আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। একজন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে চান। আজ সোমবার গ্রেফতারদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।
পলাশ হালদারকে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার আসামিরা হলেন: কিলিং মিশনে অংশ নেয়া রাজশাহীর তানোর থানার কলমা গ্রামের একরামুল হকের ছেলে মো. রকি (৩২) ও রাজশাহী নগরীর মতিহার থানার কাজলা গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে মো. জনি (২৪)। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেফতার হন ছিনতাই হওয়া অটোরিকশার ক্রেতা তানোর থানার তালন্দ বাজারের মৃত ফয়জুদ্দিন মণ্ডলের ছেলে মো. জুয়েল (৪০) ও নওগাঁর মান্দা থানার চৌবাড়ীয়া পশ্চিমপাড়ার আব্দুর রশিদের ছেলে সানোয়ার হোসেন (২৪)।
নিহত অটোরিকশা চালক পলাশের স্বজনরা জানান, গত ১২ ফেব্রুয়ারি নিজের অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন পলাশ। ওইদিন থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি তার বাবা লাকফর হালদার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর ১৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সরিষা ক্ষেতে একটি মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। সেখানে গিয়ে দেখতে পান, মরদেহটি নিখোঁজ হওয়া পলাশ হালদারের। খবর পেয়ে সদর মডেল থানার পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:২৯:২৫ ১৫ বার পঠিত