
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিকের (এমভিসি) সেবা পৌঁছে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এমভিসি একটি বড় অর্জন। তবে এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’
আজ বিকালে মহাখালীর প্রাণিসম্পদ গবেষণা কেন্দ্র (এলআরআই) প্রাঙ্গণে ১১৫টি উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক (এমভিসি) বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, এমভিসি গাড়ির মতো চার চাকা হলেও এটি গাড়ি নয়, এটি হচ্ছে একটি হাসপাতাল। যেখানে প্রাণী চিকিৎসার সকল কিছুই থাকছে। থাকছেন একজন সার্জনও।
এসময়ে উপদেষ্টা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্যে বলেন, এই সেবাটি প্রত্যন্ত খামারিদের কাছে পৌঁছাতে হবে। এর অন্য কোনো ব্যবহার যাতে না হয় এ দিকে নজর দিতে হবে।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, অনেক সময় দেখা যায় বড় বা বাণিজ্যিক খামারগুলোকে আমরা সেবা দেই। এক্ষেত্রে তাদের সেবার পাশাপাশি গ্রামীণ এবং প্রত্যন্ত খামারিদের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তারা যাতে এ সেবার বিষয়ে জানতে পারেন এবং তারও উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিকের সেবাটি ফ্রি ও ভালো উদ্যোগ উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, গ্রামীণ মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক হলেও আছে। এখন থেকে প্রাণীর সেবায় চালু হচ্ছে এমভিসি। তবে এটির সেবা নিশ্চিত করার জন্য ভেটেরিনারি ডাক্তারদের সচেতন এবং সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, মানুষের নিরাপদ আমিষ নিশ্চিত করতে এই ভেটেরিনারি ক্লিনিক বা ‘প্রাণীর পাশেই ডাক্তার’ এর গুরুত্ব বেশি। কোনো প্রাণী অসুস্থ হলে তার আশ পাশের অনেক প্রাণীও অসুস্থ হতে পারে। এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সব প্রাণীর সেবা নিশ্চিত করতে হবে। যাতে করে অসুস্থ প্রাণী বাজারে আসতে না পারে। হাঁস মুরগি থেকে সকল গবাদি পশু ও পাখির সেবা নিশ্চিত করতে হবে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে আরো বক্তৃতা করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নিলুফা আক্তার, মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. বয়জার রহমান, প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. জসিম উদ্দিন, শৈলকূপা সম্মিলিত খামারি পরিষদ ও কৃষক ফেডারেশনের মুখপাত্র মো. তানজীর আলম রবিন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বিভিন্ন প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও পরামর্শক, প্রাণিসম্পদ খাতের বিজ্ঞানী-গবেষক, উদ্যোক্তা এবং মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক গ্রহণকারী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও চালকরা এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে এমভিসি’র ওপর নির্মিত একটি টিভি বিজ্ঞাপন, একটি প্রামাণ্যচিত্র ও একটি সাফল্যগাঁথা প্রদর্শন করা হয়।
উল্লেখ্য, ‘প্রাণীর পাশেই ডাক্তার’ এই থীম-কে ধারণ করে প্রান্তিক খামারিদের দোরগোড়ায় আধুনিক ও জরুরি প্রাণি চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেবার লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি) হতে তৃতীয় ও শেষ ধাপে আরও ১১৫টি এমভিসি অবশিষ্ট উপজেলাতে আজ বিতরণ করা হয়। এ নিয়ে ৪৬৬টি উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে এমভিসি বিতরণ করা হলো।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:২৮:৪২ ৭ বার পঠিত