
উত্তরাঞ্চলে কৃষিতে দিন দিন বাড়ছে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার। খরচ কম হওয়ার পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্ন সেচ সুবিধার কারণে উৎপাদনও বাড়ছে। এরই মধ্যে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি সোলার পার্ক। যেখানে উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। গবেষকরা বলছেন, প্রথাগত জ্বালানির উৎসগুলো ক্রমেই ব্যয়বহুল ও ছোট হয়ে আসছে ফলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর বিকল্প নেই। এজন্য যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে সরকারকে।
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার লোহানীপাড়া গ্রাম। গত ৮ বছর ধরে এখানকার কৃষকরা সেচ দিচ্ছেন সৌরবিদ্যুৎ দিয়ে। জানালেন, ডিজেল কিংবা বিদ্যুৎ চালিত সেচযন্ত্রের তুলনায় খরচ অর্ধেক। এছাড়াও লোডশেডিং এর ঝামেলা না থাকায় সেচ দেয়া যায় সময় মতো। শুধু রংপুর ও ঠাকুরগাঁওয়ে সোলার ইরিগেশন প্রজেক্ট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ৩৯ দশমিক দুই আট মেগাওয়াট।
সুবিধাভোগীরা বলছেন, সোলার ব্যবহারের ফলে পানি নিয়ে কোনো সমস্যা হয় না। যখনই প্রয়োজন হয় পাওয়া যায়। এতে খরচও তুলনামূলক কম।
বর্তমানে দেশে প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে ৩৯ দশমিক ৬২ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। বাকি বিদ্যুৎ আসে কয়লা, হেভি ফুয়েল অয়েল, ডিজেল ও ক্যাপটিভ পাওয়ার থেকে। এরমধ্যে শুধু মাত্র ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ আসে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে। তবে প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুত কমতে থাকায় নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে গুরুত্ব দেয়ার বিকল্প নেই।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে খরচ ও পরিবেশবান্ধব যন্ত্র হিসেবে আপাতত এর বিকল্প নেই। এটি নিয়ে ব্যাপক হারে গবেষণা হওয়া দরকার। গবেষণার পাশাপাশি যাতে গ্রাহকরাও এটি ব্যবহার করতে পারে, তার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে।
গবেষকরা বলছেন, প্রথাগত জ্বালানির উৎসগুলো ক্রমেই ব্যয়বহুল ও ছোট হয়ে আসছে। ফলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে হবে। এজন্য সরকারকে দীর্ঘ মেয়াদে টেকসই পরিকল্পনা নিতে হবে।
বেরোবির দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আব্দুল্লাহ আল মাহবুব বলেন, একটি সোলার প্যানেল থেকে ২০-২৫ বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। এটি ব্যবহারে খরচও ৫০-৬০ শতাংশ কম হয়।
উল্লেখ্য, তিস্তা, পঞ্চগড় ও গঙ্গাচড়া রংপুর বিভাগের এই ৩টি সোলার পার্ক থেকে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ২৩৮ মেগাওয়াট।
বাংলাদেশ সময়: ১২:০৮:৪০ ১২ বার পঠিত