
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মানুষ হিসেবে ও দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের অধিকার সমান। এখানে কোনো মানুষের অধিকার আলাদা হতে পারে না। কিভাবে অধিকার আদায় করতে হয় তা এ প্রজন্ম আমাদের শিখিয়েছে।
আজ রাজধানীর মিরপুরে শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহারে বিঝু, বৈসু, সাংগ্রাই, চাংক্রান, বিষু মেলা-২০২৫ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, এ মেলায় পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিগোষ্ঠীরা দেখিয়েছে কীভাবে সংস্কৃতি ধরে রাখতে হয়। কিন্তু আমরা একদিকে সংস্কৃতির কথা বলছি অন্যদিকে বার্গার, স্যান্ডুইচ ছাড়া খাচ্ছি না এর ফলে আমরা নিজেদের খাদ্য ব্যবস্হা নষ্ট করে ফেলেছি। আপনারা নিজেদের খাদ্য রক্ষা করে চলছেন, এতগুণ, প্রতিভা, ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও জাতি হিসেবে আপনারা কেন পিছিয়ে থাকবেন। তবে পিছিয়ে থাকার জন্য বৈষম্যভিত্তিক সমাজ, রাষ্ট্র ও চিন্তাভাবনাই দায়ী ছিল।
উপদেষ্টা বলেন, বাঙালি জাতীয়তাবাদ করে আমরা নিজেদের মুখ্য করেছি অন্যদের প্রতি অবহেলা- অবিচার করা হয়েছে। সবাই এ দেশের মানুষ, সমান অধিকার নিয়ে সবাই বেঁচে থাকতে চায়। এখানে কোনো প্রকার বৈষম্য হতে পারে না। তিনি আরো বলেন, পাহাড়ে জুম নিয়ন্ত্রণ বোর্ড করা হয়েছে, আমরা মনে করি জুম নিয়ন্ত্রণ নয় বরং জুম উন্নয়ন বোর্ড কিভাবে করা যায় তা নিয়ে কাজ করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, আমি শুধু একটা জিনিসে বিশ্বাস করি তা হলো পার্বত্য চট্টগ্রামে লাইভলিহুড ডেভেলপমেন্ট। আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে লাইভলিহুড কনসেপ্ট বাস্তবায়নে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা প্রয়োজন। রাঙ্গামাটি কাপ্তাই হ্রদ থেকে বছরে ২ হাজার ১০০ কোটি টাকা আয় হয়।
অর্থনৈতিকভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামকে ডাইনামিক করার কথা উল্লেখ করে সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, এ আয়ের সিংহভাগ সরকারের রাজস্বে যোগ হয় না। আমি চাই কাপ্তাই থেকে সরকারের রাজস্ব বাড়ুক। সরকার যাতে বেশি রাজস্ব পায় তার ব্যবস্থা করা দরকার। আমরা সেই আয় থেকে ডেভেলপমেন্টের জন্য খরচ করতে চাই।
ঢাকা বিঝু, বৈসু, সাংগ্রাই, চাংক্রান, বিষু মেলা উদযাপন কমিটি-২০২৫ এর আহ্বায়ক শুভাশীষ চাকমার সভাপতিত্বে আরো বক্তৃতা করেন সিএইচটি ওয়েলফেয়ার সোসাইটির আহ্বায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) তুষার কান্তি চাকমা, গণপূর্ত অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কুবলেশ্বর ত্রিপুরা, সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট রুপাইয়া তঞ্চঙ্গ্যা প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বাংলা চৈত্র মাসের শেষ দুই দিন এবং বৈশাখের প্রথম দিন পাহাড়ে শুরু হয় বর্ষবিদায় ও বরণের বর্ণিল আয়োজন। একেক জাতিগোষ্ঠী একেক নামে এ উৎসবকে অভিহিত করে। এবার উৎসব শুরু হবে ১২ থেকে ১৪ এপ্রিল। এ উৎসব উপলক্ষ্যেই রাজধানীতে মেলার এ আয়োজন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:০৭:৩৬ ৩১ বার পঠিত