
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশ আমাদের সবার। সুতরাং এদেশে আমরা মর্যাদা ও শান্তির সাথে নিরাপদে বসবাস করতে চাই। বিগত ১৫ বছর আমাদের ওপর বিভিন্নভাবে জুলুম-নির্যাতন গিয়েছে। এর অবসান হয়েছে ৫ আগস্ট। ওই রাতেই আমি আমার দলের সকল সহকর্মীকে আহ্বান জানিয়েছি আল্লাহর ওয়াস্তে কারও ওপর কোনো প্রতিশোধ নেবেন না। জাতিকেই একই কথা বলেছি।
তিনি বলেন, আপনাদের স্মরণ থাকার কথা। আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন- তাদের সরকারের পতন হলে কমপক্ষে ৫ লাখ লোককে হত্যা করা হবে। এ রকম হলে প্রত্যেক গ্রামে এক দুইজন লোক মারা যেত। এ রকম হয়নি। প্রতিহিংসা এবং প্রতিশোধ কখনো শান্তি বয়ে আনতে পারে না।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে মৌলভীবাজার কুলাউড়া উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে পৌরসভা হলরুমে কেন্দ্র ঘোষিত দেশব্যাপী গণসংযোগ পক্ষ পালন উপলক্ষ্যে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের আমির এসব কথা বলেন।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা রাষ্ট্রের দায়িত্বে যাই আর না যাই, আপনাদের সঙ্গে আছি, আপনাদের সঙ্গে থাকব। রাষ্ট্রের দায়িত্বে কে যাবে, কে যাবে না সেটা আল্লাহ ফায়সালা করবেন। তাদের জন্যই ফায়সালা হবে মানুষের হৃদয়ে যারা স্থান পাবে। এটা জোর করে নেওয়ার বিষয় নয়। যারা জোর করে নেয় তারা অপদস্থ এবং অপমানিত হয়। তারা যেমন রাষ্ট্রের সেবাও ভালোভাবে করতে পারে না, তেমনিভাবে তারা পদে পদে অপমানিত ও অপদস্থ হয়। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে জামায়াতের নেতাকর্মীরা সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর পাহারা দিয়েছে। আমাদের কোনো নেতাকর্মী এসব কোনো কাজে জড়িত ছিলেন না।
অমুসলিমদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আগামীতে কোনো জালেম যদি আপনাদের ওপর জুলুম করে আপনারা প্রতিবাদ করবেন, প্রতিরোধ করবেন, আমাদেরকে সাথে রাখবেন। আমরা চাই না জুলুমের শিকার হয়ে কেউ ধুঁকে ধুঁকে কষ্ট পাক। তার প্রিয় জন্মস্থান ছেড়ে অন্যত্র চলে যাক। আমি আমার জন্মস্থানে থাকব এবং সম্মানের সাথে থাকব। যারা অতীতে এই অপরাধ করেছেন তাদেরকে চিহ্নিত করে যার হক তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হোক। সে তার হক বুঝে পাক।
জামায়াতের আমির বলেন, অন্যায় অপরাধ করে থাকলে তার বিরুদ্ধে মামলা হবে, যিনি মামলা করবেন অপরাধ প্রমাণ করার দায়িত্ব তার, যদি তিনি অপরাধ প্রমাণ করতে পারেন তাহলে অপরাধীর বিরুদ্ধে দেশের সংবিধান অনুযায়ী শাস্তি হবে। আমি কে আইন হাতে তুলে নেওয়ার? আইন হাতে তুলে নিয়ে আরেকজনকে খুন করা, আঘাত করা, বাড়ি লুট করার ও বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার? রাষ্ট্র কি আমাকে এই অধিকার দিয়েছে? কাউকে দেয়নি।
কুলাউড়া উপজেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল মুন্তাজিমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি বেলাল আহমদ চৌধুরীর পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির মো. ফখরুল ইসলাম, সিলেট জেলা আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের আমির ইঞ্জিনিয়ার শাহেদ আলী ও সেক্রেটারি ইয়ামীর আলী।
এছাড়াও বক্তব্য দেন কুলাউড়া পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ডা. অরুনাব দে, সাধারণ সম্পাদক আজয় দাশ, সদস্য অশোক ধর, কুলাউড়া ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সৌম্য প্রদীপ ভট্টাচার্য্য ও পূজা উদযাপন পরিষদ কুলাউড়া পৌরসভার আহ্বায়ক বিচিত্র দে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৪১:০৫ ১৭ বার পঠিত