দলীয় সরকারের অধীনেও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব বলে মনে করে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। নির্দলীয় সরকারের দাবিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দাবির মধ্যেই এমন অবস্থানের কথা জানাল সংস্থাটি।
সোমবার ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে সুশাসন ও শুদ্ধাচার বিষয়ক একটি প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহার পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
টিআইবি প্রধান বলেন, ‘রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডার যারা আছেন তারা যদি সহায়ক ভূমিকা পালন করেন, তাহলে দলীয় সরকারের অধীনেও সুষ্ঠু নির্বাচনর সম্ভব।’
তবে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ক্ষেত্রে আস্থাহীনতার সংকট রয়েছে বলে মনে করেন ইফতেখারুজ্জামান। বলেন, ‘ক্ষমতায় থাকাকালীন নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। নির্বাচনে হেরে গেলে ফলাফল মেনে না নেয়ার প্রবণতা রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে।’
‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ক্ষমতাকে একছত্রভাবে কেন্দ্রীয়করণের প্রবণতা বিদ্যমান। ফলে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি আস্থা হ্রাস পেয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনে একটি নির্বাচনে আস্থাহীনতার সংকট রয়েছে।’
প্রতিবেদনে জানানো হয়, রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে ইশতেহার প্রকাশে যতটা আগ্রহী থাকে, নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর ইশতেহার বাস্ততবায়নে ততটা আগ্রহী থাকে না। তাই সরকার গঠনকারী প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে পূর্ববর্তী নির্বাচনে দেয়া অঙ্গীকার কতটুকু পূরণ করছে সে সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে।
সংসদে আত্মপরিচয়ের সংকটাপন্ন বিরোধী দলীয় সংস্কৃতি দেখা যায় বলে প্রতিবেদনে উঠে আসে। এসময় আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে অর্ন্তভুক্তির জন্য টিআইবি ৬টি ক্যাটাগরিতে ৩০টির বেশি সুপারিশ করে।
সুপারিশগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, সংসদে সরকারি দলের একচ্ছত্র ভূমিকা নিরুৎসাহিত্ করতে দলীয় প্রধান, সরকার প্রধান ও সংসদ নেতা একই ব্যক্তি না হওয়া।
বিরোধী দলকে সংসদীয় কার্যক্রমে আরও বেশি সুযোগ দেওয়া, ডেপুটি স্পিকার বিরোধী দল থেকে নিয়োগ দেওয়া, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ প্রয়োজনীয় সংশোধনের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ সৃষ্টি।
দুদকের স্বাধীনতা এবং কার্যকারিতা খর্ব করে এমন কোনো আইন সংস্কার না করতেও সুপারিশ করেছে টিআইবি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:২৪:৫৭ ২০১ বার পঠিত