বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টিসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকা বামধারার দলগুলোর সঙ্গে ঐক্য চায় আওয়ামী লীগ। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু প্রশ্নে ‘মিনিমাম পয়েন্টে’ ‘ম্যাক্সিমাম ইউনিটি’ গড়ে তুলতে দলগুলোর প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের ৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাম রাজনৈতিক দলগুলোর দুই ধরণের ভূমিকা ছিল। তাদের একটি বড় অংশ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিলেও আরেকটি পক্ষ (চীনপন্থি) নিশ্চুপ ছিল। স্বাধীনতা পরবর্তী বেশ কয়েকটি কমিউনিস্ট মতাদর্শী রাজনৈতিক দল গড়ে উঠলেও রাজনৈতিক অঙ্গনে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।
সমাপ্রদায়িক শক্তির সঙ্গে না থাকার বিষয়ে বামদলগুলি যে অভিন্ন উচ্চারণে কথা বলছে, সেটি ভালো লাগছে উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘আজকে একটা বিষয় ভালো লাগছে, বামপন্থিরা এক সুরে কথা বলছে। সেটা হচ্ছে সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে আমরা নেই। এই উচ্চারণ অনেকেই করেছে। তাহলে এই উচ্চারণ যারা করেছেন- আসুন না, আমরা মিনিমাম পয়েন্টে ম্যাক্সিমাম ইউনিটি গড়ে ফেলি।’
কমিউনিষ্ট পার্টির নেতৃত্বাধিন আট দলীয় জোটের অনেকের সঙ্গে একসঙ্গে ছাত্র রাজনীতি করেছেন জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের আদর্শের প্রতি আমার কোনও অশ্রদ্ধা নেই। আসুন মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু এই প্রশ্নে আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই।’
‘আওয়ামী লীগও জাতীয় ঐক্য চায়’
কাদের বলেন, ‘পরিস্কার ভাবে বলতে চাই, আমরাও জাতীয় ঐক্য চাই, আমরা চাই সাম্প্রদায়িক অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে, আমরা জাতীয় ঐক্য চাই স্বাধীনতার শত্রুদের বিরুদ্ধে, আমরা জাতীয় ঐক্য চাই নষ্ট রাজনীতির বিরুদ্ধে। আমরা জাতীয় ঐক্য চাই দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, জাতীয় ঐক্য চাই মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির সঙ্গে, এদেশের জন্মের চেতনা, এই চেতনা নিয়েই আমরা জাতীয় ঐক্য চাই।’
‘মামলায় বিএনপি আমাদের জর্জরিত করেছিল’
নির্বাচনকে সামনে রেখে ছক করে নেতাকর্মীদের আটক করছে সরকার, বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইতিহাসটা দেখুন, ফেরিতে প্লেট চুরির জন্য আমাদের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল কারা? কতো মামলা নিয়ে আমরা নির্বাচনে গিয়েছিলাম। আমাদের হাজার-হাজার নেতাকর্মী বাড়ি ছাড়া তখন। সাধু সাজে কারা? কত মামলায় তারা (বিএনপি) আমাদের জর্জরিত করেছে।’
‘অন্যায়ভাবে মামলা হোক তা আমরা চাই না। এখন যে মামলা হয়েছে, পুলিশ বলছে- তারা আন্দোলনের নামে নাশকতার ছক আঁকছে। তারা (বিএনপি) ২০১৪ সালের মতো সন্ত্রাসী তৎপরতার পরিকল্পনা তৈরি করছে গোপন ভাবে।’
কাদের বলেন, ‘তথ্য তো আমাদের কাছে না, জানবে পুলিশ, জানবে গোয়েন্দারা। এ ধরণের অভিযোগে পুলিশ যদি কারও বিরুদ্ধে মামলা করে এটা কি হয়রানিমূলক মামলা হবে?’
‘নিরপরাধ হলে আদালতে যান, আদালতে গিয়ে ফয়সালা করুন, স্বাধীনতা আছে। বেগম জিয়ার ৩০ মামলার কি জামিন হয়নি।’
সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৩১:০৫ ১৮৫ বার পঠিত