বাংলাদেশ টেলিযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) যৌথ অভিযানে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ১০ হাজার ৯৮৭টি অবৈধ সিম এবং ৩৭ লাখ টাকার অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে।
এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় ৮ জনকে গ্রেপ্তার এবং ৬টি মামলা হয়েছে।
সোমবার সকালে বিটিআরসি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামাদি উদ্ধারের জন্য পরিচালিত যৌথ অভিযান সম্পর্কে গণমাধ্যম কর্মীদের ওয়াকিবহাল করেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক।
তিনি বলেন, ‘অবৈধ ভিওআইপি সরঞ্জামাদি উদ্ধারের জন্য ঢাকার মোহাম্মদ পুর, আদাবর, বাড্ডা এবং উত্তরা পশ্চিম থানার আবাসিক এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপারেটরের ১০ হাজার ৯৪৭ টি সিম এবং ৩৭ লাখ টাকার ভিওআইপি সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে।’
জহুরুল হক বলেন,‘বিটিআরসি অবৈধ ভিওআইপি শনাক্ত এবং একাজে ব্যবহৃত সরঞ্জমাদি জব্দের জন্য পিন পয়েন্ট ডিটেকশন ডিভাইস ব্যবহার করেছে। অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদান সংশ্লিষ্ট খাত থেকে সরকারের ৫০ কোটিরও বেশি টাকা সাশ্রয় হয়েছে’।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান জানান, অভিযানকালে মোবাইল অপারেট টেলিটকের ৫ হাজার ৭৫টি, এয়ারটেল ও রবির ৩ হাজার ৮৯৭ টি, গ্রামীণফোনের ১ হাজার ৪১৪টি, বাংলালিংকের ৪২৬টি, পিএসটিএন অপারেটর র্যাংকসটেলে ১২০টি এবং ওয়াইম্যাক্সের অপারেটর বাংলালায়নের ১৫টি সিম জব্দ করা হয়। এছাড়াও অভিযানে ৭২টি জিএসএম গেটওয়ে ও অন্যান্য আনুসঙ্গিক মালামাল জব্দ করা হয়েছে। যার বাজারমূল্য ৩৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
বিটিআরসির নিয়ম অনুযায়ী অবৈধ ভিওআইপি কাজে ব্যবহারের জন্য মোবাইল অপারেটরের সিম পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট অপারেটরকে জরিমানা করা হয়। এই অভিযানে জব্দকৃত সিমের জন্য অপারেটরগুলোকে জরিমানা করা হবে কি না সাংবাদিকরা জানতে চাইলে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন,‘অবৈধ ভিওআইপি পরিচালনার জন্য অপারেটরগুলোর সিম পাওয়া গেলে ওই সংশ্লিষ্ট অপারেটরগুলোকে আগেও জরিমানা করেছে বিটিআরসি। এবারও করবে। আমি মনে করি তাদের সিম বাজারজাতকরণ ও সিম তদারকির কাজে সৃষ্ঠু মনিটরিং ব্যবস্থা কার্যকর নেই’।
সংবাদ সম্মেলনে, বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মুস্তাফা কামাল বলেন, বিটিআরসির চলমান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের প্রযুক্তি ব্যবহার করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তায় অবৈধ ভিওআইপি কার্যক্রমে জড়িত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত সিমবক্স এর সুর্নিদিষ্ট স্থান শনাক্তকরণে সক্ষমতা অর্জন করেছে।
তিনি জানান, জব্দকৃত এসব সিম বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের নামে কেনা। এই নিয়ে মামলা চলমান রয়েছে। মামলার প্রতিবেদনে বিস্তারিত জানা যাবে। অবৈধ ভিওআইপির মাধ্যমে প্রতিদিন আড়াই কোটি মিনিট কল করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
বিটিআরসি এই ধরনের অভিযান নিয়মিত পরিচালনা করবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিটিআরসির উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও, আইজিডব্লিউ অপারেটরস ফোরাম(আইওএফ) এবং মোবাইল ফোন কোম্পানির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:১২:৩৪ ১৯৩ বার পঠিত